Wednesday, June 23, 2021

৬০. বিয়ে নিয়ে ভয়!​ সংসারের দায়-দায়িত্ব পালনে অপারগতা এবং স্বামীর অসন্তুষ্টি কুড়ানোর ভয়ে বিয়ে থেকে বিরত থাকা কি ইসলাম সমর্থন করে? Marriage education series

 May be an image of ‎text that says '‎"হে আমাদের পালনকর্তা, যদি আমরা ভুলে যাওয়ার কারণে কিংবা অনিচ্ছাবশত: অন্যায় করে ফেলি তবে আমাদেরকে অপরাধী করো না I" (সূরা বাকারা: ২৮৬) ربنا لاتواحِدنا أوأخطانا نسينا إن Fb page: Guidance2TheRightPa‎'‎

 
বিয়ে নিয়ে ভয়!​
সংসারের দায়-দায়িত্ব পালনে অপারগতা এবং স্বামীর অসন্তুষ্টি কুড়ানোর ভয়ে বিয়ে থেকে বিরত থাকা কি ইসলাম সমর্থন করে?
▬▬▬◆◯◆▬▬▬
প্রশ্ন: কোন নারী যদি এরূপ ভয় করে যে, সে হয়ত স্বামীর আনুগত্য করতে পারবে না এবং স্বামী-সংসারের দায়িত্ব পালনে অপারগ হয়ে যাবে- যার কারণে স্বামীর অসন্তুষ্টির মাঝে থাকবে। এমতাবস্থায় সে যদি বিয়ে না করার সিদ্ধান্ত নেয় তবে সেটা কি জায়েজ হবে?
উত্তর:
 
মনে রাখতে হবে, ইসলামের দৃষ্টিতে প্রত্যেক প্রাপ্ত বয়স্ক ও সামর্থ্যবান যুবক-যুবতীর বিয়ে করার গুরুত্ব অপরিসীম। কেননা বিয়ের অন্যতম উদ্দেশ্য হল, হালাল পন্থায় জৈবিক চাহিদা পূরণের মাধ্যমে পবিত্র জীবন গঠন করা এবং সন্তান-সন্ততি জন্ম দেয়ার মাধ্যমে আল্লাহর জমিন আবাদ রাখা। 
 
তা ছাড়া হাদিসে বিয়েকে দ্বীনের অর্ধেক বলা হয়েছে। আল্লাহর নবী মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম যুবকদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন যে, তারা যেন বিয়ের উপযুক্ত ও সামর্থ্যবান হলে বিয়ে করে নেয়। তিনি বলেন,
 
يَا مَعْشَرَ الشَّبَابِ، مَنِ اسْتَطَاعَ مِنْكُمُ الْبَاءَةَ فَلْيَتَزَوَّجْ، فَإِنَّهُ أَغَضُّ لِلْبَصَرِ، وَأَحْصَنُ لِلْفَرْجِ، وَمَنْ لَمْ يَسْتَطِعْ فَعَلَيْهِ بِالصَّوْمِ؛ فَإِنَّهُ لَهُ وِجَاءٌ. مُتَّفَقٌ عَلَيْهِ
 
“হে যুব সম্প্রদায়, তোমাদের মধ্যে যার সামর্থ্য আছে, সে যেন বিয়ে করে নেয়। কেননা বিয়ে চোখকে নিচু রাখতে এবং লজ্জা স্থানকে সংযত করতে সব চেয়ে বেশি সহায়ক। আর যার সামর্থ্য নেই, সে যেন সওম (রোজা) পালন করে। কেননা তা প্রবৃত্তিকে দমন করে।” [বুখারী ১৯০৫, ৫০৬৫ ও মুসলিম ১৪০০]
 
তাই দ্বীনের পূর্ণাঙ্গতা, চারিত্রিক পবিত্রতা এবং মানব জাতির বংশ পরম্পরার ধারাবাহিকতার বজায় রাখার মাধ্যমে পৃথিবী আবাদ করার স্বার্থে বিয়ের উপযুক্ত হলে অনতি বিলম্বে বিয়ে করা কর্তব্য। শরিয়ত সম্মত ওজর ব্যতিরেকে...এটা ওটা ওজুহাত দেখিয়ে বিয়ে থেকে বিরত থাকা মোটেও সঙ্গত নয়।
 
আর এ কথা বলার অপেক্ষ রাখে না যে, “হয়ত স্বামীর আনুগত্য করতে পারব না...সংসারের দায়িত্ব পালন করতে পারব না...স্বামীর অসন্তুষ্টির মাঝে থাকব...” এগুলো শরিয়ত সম্মত ও গ্রহণযোগ্য ওজর নয় বরং এ সব হল, শয়তানের পক্ষ থেকে প্ররোচনা, অনর্থক ভয় ও হীনমন্যতা। এ সব কথা মনে জাগ্রত হলে, আউযুবিল্লাহি মিনাশ শয়তানির রাজীম পাঠ করতে হবে। 
 
আল্লাহ তাআলা বলেন,
 
إِمَّا يَنزَغَنَّكَ مِنَ الشَّيْطَانِ نَزْغٌ فَاسْتَعِذْ بِاللَّـهِ ۚ
 
“আর যদি শয়তানের প্ররোচনা তোমাকে প্ররোচিত করে, তাহলে'আল্লাহর নিকট আশ্রয় প্রার্থনা করো।” (সূরা আ’রাফ: ২০০) 
 
অর্থাৎ আউযুবিল্লাহি মিনাশ শায়ত্বনির রাজীম (বিতাড়িত শয়তান থেকে আল্লাহর নিকট আশ্রয় প্রার্থনা করছি) পাঠ করো।
 
সুতরাং কোন নারী যদি শারীরিক ও মানসিকভাবে সুস্থ থাকে (বিয়ের উপযুক্ত হয়) তাহলে তার উচিৎ, এ সব দ্বিধা, সংশয় ও শয়তানী কুমন্ত্রণাকে পাত্তা না দিয়ে নিজের ইজ্জত-সম্ভ্রম রক্ষা, মনের পবিত্রতা, গুনাহ থেকে বাঁচা, সন্তান জন্মদানের মাধ্যমে আল্লাহর পৃথিবীকে আবাদ এবং সর্বোপরি আল্লাহর বিধান ও রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর সুন্নাহকে বাস্তবায়ন করার স্বার্থে আল্লাহর উপর ভরসা করে এবং তার নিকট সাহায্য প্রার্থনা করে বিয়ে করা। 
 
আর অবিবাহিত থাকার ফলে অবৈধ যৌনাচার, গোপন বদ অভ্যাস ও বিভিন্ন পাপাচারে লিপ্ত হওয়ার আশঙ্কা থাকলে বিয়ে করা ফরজ; অন্যথায় গুনাহগার হতে হবে। তবে শারীরিক অক্ষমতা বা মানসিকভাবে অসুস্থ তথা পাগল কিংবা মস্তিষ্ক বিকৃত হলে ভিন্ন কথা।
 
পরিশেষে বলব, শয়তানের কুমন্ত্রণা থেকে বাঁচার জন্য আল্লাহর নিকট আশ্রয় প্রার্থনা করুন এবং দ্বিধা, সংশয় ও হীনমন্যতাকে প্রশ্রয় না দিয়ে আল্লাহর বিধান বাস্তবায়নের স্বার্থে বিয়ের জন্য মানসিকভাবে প্রস্তুত হোন ও মনকে শক্ত করুন। সেই সাথে আল্লাহর নিকট সাহায্য প্রার্থনা করুন যে, তিনি যেন আপনার দাম্পত্য জীবনকে জান্নাত লাভের মাধ্যমে পরিণত করেন এবং এ ক্ষেত্রে সব ধরণের বিশৃঙ্খলা ও অপ্রত্যাশিত পরিস্থিতি থেকে হেফাজত করেন। যে ব্যক্তি আল্লাহর নিকট সাহায্য চায় তাকে তিনি সাহায্য করেন। নিশ্চয় তিনি সর্বোত্তম সাহায্যকারী।
 
আল্লাহ তাওফিক দান করুন।
 
আরও পড়ুন:
◆ ইসলামে বিয়ের গুরুত্ব ও বিধান
 
◆ অভিমানে বিয়ে থেকে বিরত থাকা
 
◆ বন্ধ্যা ব্যক্তির জন্য কি বিয়ে করা জায়েজ? খাসি হওয়ার বিধান কি?
 
▬▬▬◆◯◆▬▬▬
উত্তর প্রদানে:
আব্দুল্লাহিল হাদী বিন আব্দুল জলীল
(লিসান্স, মদীনা ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়, সৌদি আরব)
দাঈ, জুবাইল দাওয়াহ এন্ড গাইডেন্স সেন্টার, সৌদি আরব
 
 
 
ইসলামে বিয়ের গুরুত্ব ও বিধান
▬▬▬▬🧡🌀🧡▬▬▬▬
প্রশ্ন: যদি কোনো ছেলে বা মে‌য়ে জীবনেও বি‌য়ে না ক‌রে তাহলে সে কি জাহান্নামে যাবে অথবা সে কি গুনাহগার হবে?
উত্তর:
বিয়ে ইসলামের অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম নিজে একাধিক বিয়ে করেছেন এবং তার উম্মতকে বিয়ের প্রতি উৎসাহিত করেছেন। এই উম্মতের শ্রেষ্ঠ সন্তান সাহাবায়ে কেরাম বিবাহ করে ঘর-সংসার করেছেন। বিয়ের মাধ্যমে বৈধ সান্তান দ্বারা বংশ বিস্তার হয় এবং এই পৃথিবী আবাদ হয়। এর মাধ্যমে সমাজ থেকে অনেক অন্যায়-অপকর্ম বিদূরিত হয়। গড়ে উঠে একটি সুস্থ সমাজ ব্যবস্থা। এর মাধ্যমে বৈধ পন্থায় মাুনষ নিজেদের প্রবৃত্তির চাহিদা পূরণ করে। এতে মানুষের হৃদয়পটে ঈমান ও তাকওয়া অর্জনের পাশাপাশি আল্লাহর ইচ্ছায় ভালবাসা, দয়া ও পারস্পারিক সৌহার্দপূর্ণ সুস্থ ও সুন্দর জীবন লাভে ধন্য হয় মানব সমাজ।
তাই এই চমৎকার বিধানটির ব্যাপারে কোনরূপ অবহেলা প্রদর্শন করা কাম্য নয়।
রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর যুগে ইবাদতের ব্যাঘাত সৃষ্টির ওজুহাতে এক ব্যক্তি জীবনে কখনো বিয়ে করবে না বলে ওয়াদা করলে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তাকে সাবধান করেন। দেখুন নিম্নোক্ত হাদীসটি:
عنْ عِبَادَةِ النَّبِيِّ صَلّى اللهُ عَلَيْهِ وسَلَّم ، فَلَمَّا أُخبِروا كأَنَّهُمْ تَقَالَّوْها وقالُوا : أَين نَحْنُ مِنْ النَّبِيِّ صَلّى اللهُ عَلَيْهِ وسَلَّم قَدْ غُفِر لَهُ ما تَقَدَّم مِنْ ذَنْبِهِ وما تَأَخَّرَ . قالَ أَحَدُهُمْ : أَمَّا أَنَا فأُصلِّي الليل أَبداً ، وقال الآخَرُ : وَأَنا أَصُومُ الدَّهْرَ أبداً ولا أُفْطِرُ ، وقالَ الآخرُ : وأَنا اعْتَزِلُ النِّساءَ فلا أَتَزوَّجُ أَبداً، فَجاءَ رسول اللَّه صَلّى اللهُ عَلَيْهِ وسَلَّم إلَيْهمْ فقال : ্র أَنْتُمُ الَّذِينَ قُلْتُمْ كذا وكذَا ؟، أَما واللَّهِ إِنِّي لأَخْشَاكُمْ للَّهِ وَأَتْقَاكُم له لكِني أَصُومُ وَأُفْطِرُ ، وَأُصلِّي وَأَرْقُد، وَأَتَزَوّجُ النِّسَاءَ، فمنْ رغِب عن سُنَّتِي فَلَيسَ مِنِّى: متفقٌ عليه.
আনাস রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, তিনজন লোক নবী কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর স্ত্রীদের ঘরে আসল। তারা নবী কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর ইবাদত-বন্দেগী সম্পর্কে জানতে চাইল। যখন তাদেরকে এ সম্পর্কে জানানো হল, তখন তারা যেন এটাকে অপ্রতুল মনে করল। আর বলল, নবী কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কোথায় আর আমরা কোথায়? তাঁর আগের পরের সব গুনাহ ক্ষমা করে দেয়া হয়েছে।
- তাদের একজন বলল, আমি সম্পূর্ণ রাত নামাজ পড়তে থাকব।
- আরেকজন বলল, আমি সারা জীবন রোযা রাখব। কখনো রোযা ছাড়ব না।
- আরেকজন বলল, আমি মেয়েদের থেকে নিজেকে দূরে সরিয়ে রাখব, কখনো বিয়ে করব না।
ইতোমধ্যে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাদের কাছে আসলেন। আর বললেন, তোমরা তো এ রকম সে রকম কথা বলেছ? আল্লাহর কসম! তোমাদের চেয়ে আমি আল্লাহকে বেশী ভয় করি। তাঁর সম্পর্কে বেশী তাকওয়া অবলম্বন করি। কিন্তু আমি রোযা রাখি আবার রোযা ছেড়ে দেই। আমি নামায পড়ি আবার নিদ্রা যাই। আবার মহিলাদেরকে আমি বিয়েও করি।
সুতরাং যে ব্যক্তি আমার আদর্শ (সুন্নাত) থেকে মুখ ফিরিয়ে নিবে সে আমার দলভুক্ত নয়।” (বুখারী ও মুসলিম)
বিয়ে করার বিধান:
ব্যক্তির অবস্থার আলোক বিয়ে করার বিধান ভিন্ন ভিন্ন হয়। এ ক্ষেত্রে নারী-পুরুষ উভয়ের জন্য একই কথা।
▪ কেউ যদি ব্যভিচারে লিপ্ত হওয়ার আশঙ্কা করে তাহলে তা জন্যে বিয়ে করা ফরয। না করলে গুনাহগার হবে।
▪ এ অবস্থায় কেউ অর্থনৈতিক দিক থেকে সমর্থ না হয় তাহলে সে রোযা পালন করবে। কেননা, রোযা প্রবৃত্তিকে দমন করতে সহয়তা করে। তবে সামর্থ হলে অনতি বিলম্বে বিয়ে করবে। কিন্তু তথাকথিত অর্থনৈতিক দুর্বলতার অজুহাতে বিয়ে বিলম্ব করা অগ্রহনযোগ্য।
▪ কেউ যদি শারীরিক দিক থেকে বিয়ে করতে সমর্থ থাকে কিন্তু বিয়ে না করলেও যৌন সংক্রান্ত বিভিন্ন পাপাচার ও ব্যভিচারে লিপ্ত হবার আশঙ্কা না করে তাহলে তার জন্য বিয়ে করা মুস্তাহাব।
▪ কেউ যদি জৈবিক চাহিদা পূরণে অক্ষম হয় তাহলে তার জন্য বিবাহ করা বৈধ নয়। কেনানা, এতে করে অন্যের অধিকার নষ্ট করা হয়।
▪ কিন্তু যদি কেউ সার্বিক দিক থেকে সমর্থ হওয়া সত্ত্বেও রসূল সা. এর সুন্নাতের প্রতি অনীহা ও অবহেলার কারণে বিয়ে পরিত্যাগ করে, তাহলে সে রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) - এর তরীকা থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে গুনাগার হবে।
▪ আর কোন নারী বা পুরুষ যদি ইচ্ছা থাকার পরও বহুচেষ্টা সত্বেও কোন কারণে বিয়ে করতে ব্যার্থ হয় বা বিশেষ কোন ওজরের কারণে বিবাহ করতে না পারে তাহলে ইনশাআল্লাহ এতে সে গুনাহ থেকে বেঁচে যাবে। কেননা, বিয়ের ক্ষেত্রে তার পক্ষ থেকে চেষ্টার ত্রুটি ছিল না।
তবে ইসলামের বিধান এবং রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর গুরুত্বপূর্ণ সুন্নত পালনের উদ্দেশ্যে বিয়ের চেষ্টা অব্যহত রাখা কতর্ব্য। আল্লাহ তাওফিক দান করুন। আমীন।
আল্লাহু আলাম।
▬▬▬▬🧡🌀🧡▬▬▬▬
উত্তর প্রদানে: আব্দুল্লাহিল হাদী বিন আব্দুল জলীল
(লিসান্স, মদীনা ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়)
দাঈ, জুবাইল দাওয়াহ এন্ড গাইডেন্স সেন্টার, সউদী আরব।
 
 
অভিমানে বিয়ে থেকে বিরত থাকা
▬▬▬▬◆◈◆ ▬▬▬▬
প্রশ্ন: জনৈক ব্যক্তি কোনো এক মেয়ের সাথে প্রেম করতো। কিন্তু কোনো কারণে তার সাথে বিয়ে না হওয়ায় সে দু:খ-অভিমানে জীবনে আর বিয়ে করে নি। এ ব্যাপার ইসলামের কী বলে?
উত্তর:
বিয়ের সামর্থ্য এবং চাহিদা থাকার পরও কেউ যদি কেবল রাগ বা অভিমান বশত: বিয়ে না করে সে গুনাহগার হবে। কারণ তখন ভিন্নপন্থায় জৈবিক চাহিদা পূরণের দিকে ধাবিত হওয়ার এবং বিভিন্ন ধরণের পাপকর্মে লিপ্ত হওয়ার পর্যাপ্ত সম্ভাবনা রয়েছে।
অবৈধ প্রেম-প্রীতি করার পর তার প্রত্যাশিত মেয়ে/ছেলেকে বিয়ে করতে না পেরে রাগ-অভিমানে সারা জীবন বিয়ে থেকে বিরত থাকার পাপ দ্বিগুণ। একটি হল, অবৈধ প্রেমের পাপ। অন্যটি বিয়ের মত এত গুরুত্বপূর্ণ ইসলামের বিধানকে উপেক্ষা করার পাপ।
দুআ করি, মহান আল্লাহ যেন উক্ত ব্যক্তিকে সুবুদ্ধি দান করেন। আমীন।
এখন তার কর্তব্য হল, অতীত জীবনের পাপাচারের জন্য অনতিবিলম্বে তওবা করা। অত:পর অন্য কোনো মেয়েকে বিয়ে করে নতুনভাবে জীবন-সংসার শুরু করে। এটাই তার উপর আবশ্যক-যদি সে বিয়েতে সামর্থ্য বান হয়ে থাকে।
আল্লাহ তাওফিক দানকারী।
▬▬▬▬◆◈◆ ▬▬▬▬
উত্তর প্রদান:
আব্দুল্লাহিল হাদী বিন আব্দুল জলীল মাদানি
দাঈ, জুবাইল দাওয়াহ সেন্টার, সৌদি আরব
 
 
 
প্রশ্ন: বন্ধ্যা ব্যক্তির জন্য কি বিয়ে করা জায়েজ?
খাসি হওয়ার বিধান কি?
▬▬▬▬◢◯◣▬▬▬▬
উত্তর:
কেউ যদি নিজের সম্পর্কে জানতে পারে যে সে বন্ধ্যা, তারপরেও সে বিয়ে করতে পারবে। তবে শর্ত হল, যদি সে স্ত্রীর ভরণপোষণ এবং জৈবিক চাহিদা পূরণে সামর্থ্যবান হয়। অন্যথায় বিয়ে করা বৈধ নয়। কেননা রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন:
يَا مَعْشَرَ الشَّبَابِ، مَنِ اسْتَطَاعَ مِنْكُمُ الْبَاءَةَ فَلْيَتَزَوَّجْ، فَإِنَّهُ أَغَضُّ لِلْبَصَرِ، وَأَحْصَنُ لِلْفَرْجِ، وَمَنْ لَمْ يَسْتَطِعْ فَعَلَيْهِ بِالصَّوْمِ؛ فَإِنَّهُ لَهُ وِجَاءٌ. مُتَّفَقٌ عَلَيْهِ.
“হে যুব সম্প্রদায়, তোমাদের মধ্যে যার সামর্থ্য আছে, সে যেন বিয়ে করে নেয়। কেননা বিয়ে চোখকে নিচু রাখতে এবং লজ্জা স্থানকে সংযত করতে সব চেয়ে বেশি সহায়ক। আর যার সামর্থ্য নেই, সে যেন সওম (রোজা) পালন করে। কেননা তা প্রবৃত্তিকে দমন করে।” [বুখারী ১৯০৫, ৫০৬৫ ও মুসলিম ১৪০০]
বন্ধ্যত্ব দূর করার জন্য যথাসাধ্য অভিজ্ঞ ডাক্তারের নিকট চিকিৎসা করার পাশাপাশি আল্লাহর নিকট দুয়া ও কান্নাকাটি করতে হবে। আল্লাহর রহমত থেকে হতাশ হওয়া যাবে না। কারণ জীবনের একটা সুদীর্ঘ সময় অতিবাহিত হওয়ার পরও মহান আল্লাহ মানুষকে সন্তান দান করেছেন-এর বহু নজির আছে।
মহান আল্লাহ সম্মানিত রসূল ইবরাহীম আলাইস সালাম কে বহু বছর বন্ধ্যত্ব কাটানোর পর বৃদ্ধ বয়সে তাঁর স্ত্রীর সারা আ. এর গর্ভে ইসহাক আ. কে দান করেছিলেন।
মনে রাখতে হবে, আল্লাহ তাআলা যাকে ইচ্ছে সন্তান দান করেন আর যাকে ইচ্ছা বন্ধ্যা করেন। এটা সম্পূর্ণ আল্লাহর এখতিয়ার ভুক্ত বিষয়। আল্লাহ তা'আলা বলেন:
لِّلَّـهِ مُلْكُ السَّمَاوَاتِ وَالْأَرْضِ ۚ يَخْلُقُ مَا يَشَاءُ ۚ يَهَبُ لِمَن يَشَاءُ إِنَاثًا وَيَهَبُ لِمَن يَشَاءُ الذُّكُورَ أَوْ يُزَوِّجُهُمْ ذُكْرَانًا وَإِنَاثًا ۖ وَيَجْعَلُ مَن يَشَاءُ عَقِيمًا ۚ إِنَّهُ عَلِيمٌ قَدِيرٌ
“নভোমণ্ডল ও ভূমণ্ডলের রাজত্ব আল্লাহ তা’আলারই। তিনি যা ইচ্ছা, সৃষ্টি করেন। যাকে ইচ্ছা কন্যা-সন্তান এবং যাকে ইচ্ছা পুত্র সন্তান দান করেন। অথবা তাদেরকে দান করেন পুত্র ও কন্যা উভয়ই এবং যাকে ইচ্ছা বন্ধ্যা করে দেন। নিশ্চয় তিনি সর্বজ্ঞ, ক্ষমতাশীল।” (সূরা শূরা: ৪৯ ও ৫০)
সুতরাং বিয়ের পর আল্লাহর রহমত থেকে হতাশ না হয়ে যথাসম্ভব চিকিৎসা গ্রহণের পাশাপাশি আল্লাহর নিকট দুআ করতে হবে। দয়াময় আল্লাহ ইচ্ছা করলে অবশ্যই সন্তান দানের মাধ্যমে তাদের প্রত্যাশা পূরণ করবেন। নিশ্চয় আল্লাহ পরম প্রজ্ঞাবান ক্ষমতাশীল।
প্রশ্ন: খাসি হওয়া কি জায়েজ?
উত্তর:
প্রথমে আমরা জানব, খাসি করা বলতে কী বুঝায়?
সহজ কথায়, পুরুষের অণ্ডকোষে অস্ত্রোপচার করে অথবা মেডিসিন বা কেমিক্যাল প্রয়োগের মাধ্যমে তার যৌন ক্ষমতা সম্পূর্ণরূপে বিলুপ্ত করাকে খাসি করা বলা হয়।
পূর্ব যুগে বিভিন্ন দেশে ধর্ষণ এবং বিভিন্ন অপরাধের শাস্তি হিসেবে সাজাপ্রাপ্ত ব্যক্তির অথবা দাস যেন তার মহিলা মনিবের প্রতি যৌন বাসনা অনুভব করতে না পারে সে উদ্দেশ্যে বা আরও বিভিন্ন উদ্দেশ্যে তাদের যৌন ক্ষমতা সম্পূর্ণভাবে নিষ্ক্রিয় করে দেওয়া হতো।
আবার কিছু মানুষ হয়তো বিশেষ কারণে যেন নারীর প্রতি আকর্ষণ অনুভব না করে সে উদ্দেশ্যে স্বেচ্ছায় এমনটি করত।
ইসলামের দৃষ্টিতে এটি নিষিদ্ধ কাজ।
খাসি হওয়া জায়েজ নয়। কেননা এ মর্মে হাদিসে নিষেধাজ্ঞা এসেছে। যেমন:
حديث عَبْدِ اللهِ بْنِ مَسْعُودٍ رضي الله عنه، قَالَ: كُنَّا نَغْزُو مَعَ النَّبِيِّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ، وَلَيْسَ مَعَنَا نِسَاءٌ، فَقُلْنَا: أَلاَ نَخْتَصِي فَنَهَانَا عَنْ ذَلِكَ،
আব্দুল্লাহ ইবনে মাসউদ রা. বলেন, আমরা নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর সাথে যুদ্ধে বের হতাম। তখন আমাদের সাথে স্ত্রীগণ থাকত না। বিধায় আমরা একবার তাঁকে জিজ্ঞাসা করলাম: আমরা কি খাসি হয়ে যাব না?
তখন তিনি আমাদেরকে এ থেকে নিষেধ করেছেন। (বুখারী পর্ব ৬৫/৫ হা/৬১৫, মুসলিম পর্ব ১৬/২, হাঃ ১৪০৪)
আল্লাহু আলাম
▬▬▬▬◢◯◣▬▬▬▬
উত্তর প্রদানে:
আব্দুল্লাহিল হাদী বিন আব্দুল জলীল
fb id: AbdullaahilHadi
Daee at jubail dawah & guidance center. KSA
 
 
 
 
 
 
 
 
 
 
 
 
 
 
 
 
 
 
 
 
 
 
 
 
 
 
 
 
 
 
 
 
 
 
 
 
 
 
 
 
 
 
 
 
 
 
 
 
 
 
 
 
 
 
এক মেয়েকে বিয়ে করার পর একটি বাচ্চাও ভূমিষ্ঠ হয়েছে। তারপর জানা গেছে সে তার দুধবোন! এ ক্ষেত্রে ইসলামের বিধান কি?
▬▬▬▬◢◯◣▬▬▬▬
প্রশ্ন: আমার পরিচিত এক ভাইয়ের দাম্পত্য জীবন আজ আট বছর প্রায়। তার স্ত্রী সম্পর্কে আপন খালাতো বোন। তাদের তিন বছরের একটি কন্যা সন্তানও রয়েছে। কিন্তু বর্তমান সময়ে জানা গেছে যে, বিশেষ প্রয়োজনে বা নিরুপায় হয়ে আমার সেই ভাইয়ের মা’ র দুগ্ধ পান করেছিলো তার উক্ত খালাতো বোন বর্তমানে যে তার স্ত্রী। তাদের বিয়ের সময় অভিভাবকদের অজ্ঞতা হোক বা ধর্মীয় জ্ঞানের অভাবের কারণেই হোক বিষয়টি তখন দৃষ্টিগোচর হয় নি। কিন্তু বর্তমানে বিষয়টি জানাজানি হয়েছে। ইসলাম এক্ষেত্রে কী বলে? পুনরায় উল্লেখ করা যাচ্ছে যে, তাদের তিন বছরের একটি কন্যা সন্তান রয়েছে।
তাই এক্ষেত্রে ইসলামের শরিয়ত অনুযায়ী সঠিক করণীয় বলে দিলে বিশেষভাবে কৃতজ্ঞ থাকবো।
উত্তর:
ইসলামের দৃষ্টিতে দুধ ভাই-বোনের মাঝে বিবাহ বন্ধন চিরকালের জন্য হারাম। কেননা আল্লাহ তাআলা যে সকল মহিলার সাথে বিবাহ বন্ধন হারাম করেছেন সেগুলোর মধ্য একজন হল, দুধবোন। যেমন: আল্লাহ বলেন,
وَأُمَّهَاتُكُمُ اللَّاتِي أَرْضَعْنَكُمْ وَأَخَوَاتُكُم مِّنَ الرَّضَاعَةِ
"(তোমাদের জন্য হারাম করা হয়েছে) তোমাদের সে মা’ দেরকে যারা তোমাদেরকে দুধ পান করিয়েছে (দুধ মাগণ) এবং তোমাদের দুধ বোনদেরকে।" (সূরা নিসা: ২৩)
এ ব্যাপারে একাধিক সহিহ হাদিসও বিদ্যমান রয়েছে।
সুতরাং যদি কোন পুরুষ এবং নারী নির্দিষ্ট কতিপয় শর্ত সাপেক্ষে একই মায়ের ‘দুধ পান’ করেছে বলে সাব্যস্ত হয় তাহলে তাদের মাঝে বিবাহ বন্ধন চিরকালের জন্য হারাম।
সম্মানিত ফকিহগণ উল্লেখ করেছেন যে, রাযআত বা দুগ্ধ পান এর কারণে বিবাহ হারাম হওয়ার বিষয়টি সাব্যস্ত হওয়ার জন্য কতিপয় শর্ত রয়েছে। সেগুলো হল:
● ক. দু বছর বয়সের মধ্যে শিশুর দুধ পান করা।
● খ. কমপক্ষে পাঁচ বার তৃপ্তি সহকারে দুধ পান করা।
● গ. পাঁচ বার দুধ পান করার বিষয়টি নিশ্চিত হওয়া।
● ঘ. দুধ শিশুর পাকস্থলী পর্যন্ত পৌঁছা।
● ঙ. এবং এ বিষয়ে কমপক্ষে একজন বিশ্বস্ত মহিলা সাক্ষ্য প্রদান করা। (এ বিষয়ে বিস্তারিত আলাদা একটি পোস্ট দেয়া হবে ইনশাআল্লাহ)
.
যদি উপরোক্ত শর্তাবলী অনুযায়ী কোন শিশু কোন মহিলার দুধ পান করেছে বলে সাব্যস্ত হয় তাহলে তাদের মাঝে রাযআত বা দুধ পান জনিত কারণে মাহরামিয়াত সাব্যস্ত হবে। অর্থাৎ উক্ত শিশুর সাথে ওই মহিলা ও তার স্বামীর সাথে সম্পর্ক হবে হুবহু নিজের জন্মদাতা পিতামাতার অনুরূপ এবং তাদের সন্তানাদির সাথে সম্পর্ক হবে হুবহু জন্মসূত্রের ভাই-বোনের অনুরূপ। অর্থাৎ তাদের মাঝে পর্দা করা আবশ্যক নয় এবং তাদের মাঝে চিরতরে বিবাহ বন্ধন হারাম। (এতে সম্পদের উত্তরাধিকার সাব্যস্ত হবে না।)
কিন্তু যদি কোনো পুরুষ ও নারীর মাঝে বিয়ে সংঘটিত হওয়ার পরে জানা যায় যে, তারা শিশুকালে একই মায়ের দুধ পান করেছিলো (এবং তা যথাযথ শর্তাবলীর আলোকে সুসাব্যস্ত হয়) তাহলে সাথে সাথে তাদের বিয়ে বাতিল বলে গণ্য হবে এবং তাদেরকে তৎক্ষণাৎ পৃথক হতে হয়ে যেতে হবে।
নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর যুগেও এমন একটি ঘটনা ঘটেছিলো। পরে বিষয়টি জানাজানি হলে, তিনি তাদেরকে আলাদা করে দেন। এ মর্মে হাদিস হল:
عَنْ عُقْبَةَ بْنِ الْحَارِثِ، أَنَّهُ تَزَوَّجَ ابْنَةً لأَبِي إِهَابِ بْنِ عَزِيزٍ، فَأَتَتْهُ امْرَأَةٌ فَقَالَتْ قَدْ أَرْضَعْتُ عُقْبَةَ وَالَّتِي تَزَوَّجَ‏.‏ فَقَالَ لَهَا عُقْبَةُ مَا أَعْلَمُ أَنَّكِ أَرْضَعْتِنِي وَلاَ أَخْبَرْتِنِي‏.‏ فَأَرْسَلَ إِلَى آلِ أَبِي إِهَابٍ يَسْأَلُهُمْ فَقَالُوا مَا عَلِمْنَا أَرْضَعَتْ صَاحِبَتَنَا‏.‏ فَرَكِبَ إِلَى النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم بِالْمَدِينَةِ فَسَأَلَهُ، فَقَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم ‏ "‏ كَيْفَ وَقَدْ قِيلَ ‏"‏‏.‏ فَفَارَقَهَا، وَنَكَحَتْ زَوْجًا غَيْرَهُ‏.‏
উকবা ইবনে হারিস রা. থেকে বর্ণিত, তিনি আবু ইহাব ইবনে আজিজের কন্যাকে বিবাহ করলেন। পরে এক মহিলা এসে বলল, আমি তো উকবাহ এবং যাকে সে বিয়ে করেছে দু জনকেই দুধ পান করিয়েছি। উকবাহ রা. তাকে বললেন, এটা তো আমার জানা নেই যে, আপনি আমাকে দুধ পান করিয়েছেন আর আপনিও এ বিষয়ে আমাকে অবহিত করেন নি।
অতঃপর আবু ইহাব পরিবারের নিকট লোক পাঠিয়ে তিনি তাদের নিকট জানতে চাইলেন। তারা বলল, সে আমাদের মেয়েকে দুধ পান করিয়েছে বলে তো আমাদের জানা নেই। তখন তিনি মদিনার উদ্দেশে সওয়ার হলেন এবং নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম কে এ সম্পর্কে জিজ্ঞেস করলেন। আল্লাহর রসূল সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম বললেন: “যখন এরূপ বলা হয়েছে তখন এ (বিবাহ) কিভাবে সম্ভব?”
অত:পর উকবাহ রা. তাকে ত্যাগ করলেন। আর সে অন্য জনকে বিয়ে করল।
(সহিহ বুখারি, অধ্যায়: সাক্ষ্যদান, অনুচ্ছেদ: ৫২/৪. অধ্যায়: এক বা একাধিক ব্যক্তি কোন বিষয়ে সাক্ষ্য প্রদান করলে আর অন্যরা এ বিষয়ে অজ্ঞতা প্রকাশ করলে সাক্ষ্য দাতার কথা অনুযায়ী ফায়সালা হবে।)
অজ্ঞতা বশত: এমন বিয়ে হওয়ার পর যদি তাদের সন্তান হয় তাহলে তা পিতার সন্তান হিসেবে গণ্য হবে এবং সন্তান হিসেবে বাবার মৃত্যুর পর সে উত্তরাধিকারী সম্পদ ভাগ পাবে। কারণ এখানে বিবাহটি ছিল শুবহা তথা সংশয়পূর্ণ। (যা অজ্ঞতাবশত সংঘটিত হয়েছিল)
এ কথাই বলেছেন ইমাম ইবনে তাইমিয়া রাহ.। তিনি বলেন:
فإن المسلمين متفقون على أن كل نكاح اعتقد أنه نكاح سائغ إذا وطئ فيه فإنه يلحقه فيه ولده ويتوارثان باتفاق المسلمين، وإن كان ذلك النكاح باطلاً في نفس الأمر باتفاق المسلمين. انتهى
আর যেহেতু বিষয়টি তাঁদের অজানা বশত: হয়েছিল সেহেতু ইনশাআল্লাহ তারা গুনাহগার হবে না। আল্লাহ তাআলা বলেন:
رَبَّنَا لَا تُؤَاخِذْنَا إِنْ نَسِينَا أَوْ أَخْطَأْنَا
"হে আমাদের পালনকর্তা, যদি আমরা ভুলে যাওয়ার কারণে কিংবা অনিচ্ছাবশত: অন্যায় করে ফেলি তবে আমাদেরকে অপরাধী করো না।" (সূরা বাকারা: ২৮৬)
আল্লাহু আলাম।
▬▬▬▬◢◯◣▬▬▬▬
উত্তর প্রদানে:
আব্দুল্লাহিল হাদী বিন আব্দুল জলীল
fb id: AbdullaahilHadi
Daee at jubail dawah & guidance center. KSA

 

৬০. প্রশ্ন: স্বামী যদি পাগল হয়ে যায় তাহলে স্ত্রী কি তালাক দিয়ে অন্যত্র বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হতে পারবে? না কি তালাক ছাড়াই তা বৈধ হবে? Marriage education series

 No photo description available.

প্রশ্ন: স্বামী যদি পাগল হয়ে যায় তাহলে স্ত্রী কি তালাক দিয়ে অন্যত্র বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হতে পারবে? না কি তালাক ছাড়াই তা বৈধ হবে?
▬▬▬▬▬✪✪✪▬▬▬▬▬
উত্তর:
স্বামী যদি বদ্ধ পাগল হয়ে যায় আর সহসা সুস্থ হওয়ার সম্ভাবনা না থাকে এমতাবস্থায় স্ত্রী ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার আশঙ্কা করলে তার জন্য বিবাহ বিচ্ছেদ করা জায়েয। এ ক্ষেত্রে কোর্টের মাধ্যমে বিচ্ছেদের ব্যবস্থা করতে হবে। তারপর অন্যত্র বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হতে পারবে। বিবাহ বিচ্ছেদ ব্যতিরেকে তা বৈধ হবে না।
এ বিষয়ে কোন কোন আলেম বলেন, স্ত্রীকে এ জন্য নূন্যতম ১ বছর অপেক্ষা করতে হবে। এ সময়ের মধ্যে যদি সুস্থ হয়ে যায় তাহলে বিবাহ বিচ্ছেদ বৈধ হবে না। তবে এ সময় নির্ধারণের ব্যাপারে কোন দলীল আছে কি না তা আমার জানা নাই।
মোটকথা, যদি আল্লাহর ফয়সালা অনুযায়ী স্বামী পাগল বা মস্তিষ্ক বিকৃত হয়ে যায় তাহলে প্রথমত: স্ত্রীর উচিৎ ধৈর্যের সাথে তার চিকিৎসার ব্যবস্থা করা এবং সিদ্ধান্ত গ্রহণের ক্ষেত্রে তাড়াহুড়ো না করা। এরপর যদি সুস্থ হওয়ার কোন সম্ভাবনা না দেখা যায় এবং সে নিজে ও তার সন্তান-সন্ততি ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার আশঙ্কা করে তাহলে তখন কোর্ট এর মাধ্যমে আইনগত ভাবে বিবাহ বিচ্ছেদ করবে।
আল্লাহ তাআলা আমাদেরকে দুরারোগ্য ব্যাধি থেকেে হেফাজত করুন। আমীন।
🖊🖊🖊🖊
উত্তর প্রদানে:
আব্দুল্লাহিল হাদী বিন আব্দুল জলীল মাদানি
জুবাইল দাওয়াহ সেন্টার, সৌদি আরব