Wednesday, March 20, 2024

বাচ্চা পালন

যে কথা গুলো কখনই আপনার শিশুকে বলবেন না।

১। “তুমি পচা” --শিশুরা অবুঝ। তারা স্বর্গের সন্তান। তারা নিষ্পাপ। কিন্তু তাই বলে তাদের আত্মসম্মানবোধের কোন কমতি নেই। তারা ভুল করবে এটাই স্বাভাবিক। তার জন্যে তিরস্কারও করা যেতে পারে, তবে তা মোটেও নেতিবাচক ভঙ্গিতে নয়। “তুমি খারাপ”, এই সাধারণ কথাটাও তার মধ্যে হীনম্মন্যতা সৃষ্টি করতে পারে। নেগেটিভ কথা বলতে হবে পজেটিভ ভঙ্গিতে। যেমন, “তুমি তো অনেক ভালো। ভালো বাবুরা কি অমন আচরণ করে? এতে অন্যেরা কষ্ট পায় না?”। এতে তার প্রশংসা করে উৎসাহও দেয়া হলো, এবং অন্যকে কষ্ট দেয়া ঠিক নয়, এই বোধও তার মাঝে জাগ্রত হলো। 
২। ‘না’ --সবসময় না শুনতে শুনতে তারা আপনার প্রতি শ্রদ্ধা এবং বিশ্বাস হারাতে পারে। একদম চাছাছোলা না এর বদলে তাকে বিকল্প কিছু ব্যবহারের সুযোগ দিতে পারেন। যেমন, “এ্যাই, চিৎকার করবা না” এর দলে বলতে পারেন, “একটু আস্তে কথা বলতে পারো না সোনা!” অথবা “বাসার মধ্যে খেলবে না” এর বদলে বলুন, “বাইরে গিয়ে খেলো লক্ষ্ণী বাবা”। 
৩। “চুপ কর, আর একটি কথাও নয়” -এই কথাটি আপনার এবং তার মধ্যিকার সেতুটা গুড়িয়ে দেয়। তাকে বলতে দিন, যুক্তি উপস্থাপনের সুযোগ দিন, হোক না খানিক তর্ক! তার ভুলটা ধরিয়ে দিন। তার কথাও মন দিয়ে শুনুন। এই আচরণ তার মধ্যে একটা বোধ সৃষ্টি করবে, “আমার কথারও গুরুত্ব আছে”। সেই সাথে আপনার প্রতি সম্মানও বৃদ্ধি পাবে। জোর করে চাপিয়ে দেয়া যে কোন কিছুই শিশুর জন্যে ক্ষতিকর। 
 ৪। “তুমি কেন ওর মত হতে পারো না?”
-এটা খুব কমন এবং মারাত্মক ক্ষতিকর একটা বাক্য। এতে যার সাথে তুলনা করে বলা হচ্ছে, তার প্রতি সে ঈর্ষান্বিত হবে এবং সম্পর্কের মান নেমে যাবে। নিজেকে সে ব্যর্থ মনে করবে। তার আত্মবিশ্বাস কমে যাবে। 
৫। “যাও তো এখান থেকে!” --আপনার শিশুর কাছে আপনিই সব। সে আপনার কাছ থেকে ভালোবাসা চায়, মনোযোগ চায়। তাকে চলে যেতে বলা, অথবা তার কাছ থেকে চলে যেতে চাওয়া, এসব তার কোমল মনে গভীর প্রভাব ফেলে। 
৬। “কেউ তোমার মত বাচ্চা চায় না”-- সমস্যাগ্রস্ত শিশুরা কিন্তু আমাদের আচরণেরই বাইপ্রোডাক্ট। তারা যদি ভালো আচরণ শিখতে না পারে, তবে তার দায় আমাদেরই। কারণ আমাদের দেখেই তারা শেখে। আমাদের কারণেই তারা পৃথিবীতে এসেছে এবং জীবন যাপন করছে। তাই কোনভাবেই তাদের কে এমন কথা বলা উচিত নয়। 
৭। “তুমি এটা পারবে না” --অনেক সময় তারা সাধ্যের অতীত কিছু করতে চায়। সেক্ষেত্রে সরাসরি না বলে ব্যাপারটা অন্যভাবে সমাধা করতে পারেন। ধরুন, সে একটি ভারী চেয়ার তুলতে চাইলো। তাকে এভাবে বলুন, “দেখো পারো কি না”, অথবা “তুমি ব্যথা পাবে সোনা, আমি করে দিই”। সবচেয়ে ভালো হয় যদি বলেন, “ চলো দুজনে মিলে করি”। এতে করে চেয়ারও তোলা যাবে, সাথে সে দলগতভাবে কাজ করার শিক্ষাও পাবে। 
৮। “ছেলেরা/মেয়েরা এটা করে না” --শিশুরা তো শিশুই। তাদের মধ্যে লিঙ্গবিভেদ করা ঠিক না। সে তার মত করে চলুক। বাধা দিলে সে বরং জীবনের নব নব রূপ দেখা থেকে বঞ্চিত হবে। তারা হোক আরো কৌতুহলী, জিজ্ঞাসু এবং দক্ষ। 
৯। “দাঁড়াও, তোমার বাবা/মা আসুক!” --এটা বহুলচর্চিত একটি ভুল। এতে শিশুরা উদ্বিগ্ন এবং শঙ্কিত হয়ে পড়ে, বিশেষ করে বারবার যদি এমন বলা হয়। যদি সে বারবার কোন একটা ভুল করতেই থাকে তাহলে আপনার অর্ধাঙ্গী/অর্ধাঙ্গীনিকে জানান ব্যাপারটা এবং আলোচনা করুন। অথবা বাচ্চাকে জিজ্ঞেস করুন, “তোমার বাবা/মা’কে তুমি বলবে নাকি আমি তাকে ব্যাপারটা বুঝিয়ে বলবো?” । এভাবে আপনার শিশুকে তার ভুলের দায়ভার নিতে শেখান। 
১০। “এটা করো না, তুমি বড় হয়ে গেছ” --শৈশব তো একবার গেলে আর ফিরে আসবে না। তাই তাকে উপভোগ করার স্বাধীনতা দিন। সময় হলে বয়সের ভার সে নিজেই উপলব্ধি করবে। তার ওপর বয়স চাপিয়ে দেয়ার দরকার নেই। চাইলে আপনিও তার সাথে খেলায় মেতে উঠুন। আপনার শিশুকে আনন্দে রাখার দায়িত্ব তো আপনারই, তাই না?

বউ স ইজ

#৪৫৩৪

স্ত্রীকে ঈদের শপিং করে দেয়া স্বামীর জন্য বাধ্যতামূলক নয়। বাস্তবে, কোন শপিং করে দেয়াই বাধ্যতামূলক নয়।

স্ত্রীকে ঈদে তেমন কিছু দিতে না পারার জন্য যদি মনের ভেতর কোন অপরাধবোধ থেকে থাকে, ঝেড়ে ফেলুন। এসব কোন ব্যাপার না। বরঞ্চ তার বান্ধবীদের কয়েকজনকে ঈদ গিফট পাঠান, দেখবেন বান্ধবীদের সাথে ধীরে ধীরে তার সম্পর্ক খারাপের দিকে তো যাবে, বান্ধবীদের স্বামীদের কেউ কেউ আপনার ব্যাপারে তাদের সন্দেহ করতে শুরু করবে। সেই সাথে বান্ধবীদের মধ্যেও ধীরে ধীরে একটা অনৈক্য সৃষ্টি হবে। এক জটিল পরিস্থিতি তৈরি হবে, যেখানে আপনি পুরা ব্যাপারটায় একমাত্র কিছুই না বোঝা নেহায়েত ভদ্রলোক সেজে বসে থাকবেন। সব প্যাচ বুঝবেন কিন্তু ভান করবেন কিছুই বোঝেন না। 

ঈদে ইয়ার দোস্তদের নিয়ে সময় কাটানোর পরিকল্পনা করুন। স্ত্রীকে বোঝান, আপনি তাকে প্রচুর মি টাইম দিতে চান। যে বান্ধবীকে স্ত্রী বেশি সন্দেহ করে তাদের বাসায় পারিবারিক দাওয়াত নেয়ার চেষ্টা করুন। দেখবেন কি গ্যাঞ্জামটাই না লাগে।

প্রচুর গ্যাঞ্জাম লাগায়ে নিজে বাসায় বসে ইউটিউবে ডাইনোসর কিভাবে ধ্বংস হল তা নিয়ে ভিডিও দেখতে থাকুন। কোনভাবেই টিভির রিমোট হাতছাড়া করবেন না। এই ধরনের পরিস্থিতিতে রাগ কন্ট্রোল না করতে পেরে বউ আপনার মাথা ফাটিয়ে দিতে চেষ্টা করতে পারে।

এধরনের পরিস্থিতিতে বউকে পাগল আখ্যা দিয়ে তার বাপের বাড়িতে চলে যান, সেখান থেকে অন্যত্র পরে শিফট করা যাবে।

এত কিছু কেন করবেন??

শপিং না করে দেয়ার জন্য করবেন।

ঐ টাকা দিয়ে কি করবেন তা পরের কথা। ইন্টেনশনালি একটা মানুষকে অশান্তি দিতে পারার আনন্দ কিন্তু কম না। আগে সেটা উপভোগ করেন।

সজল ভাই