Monday, May 6, 2013

** অমীমাংসিত কাহিনী ** [Ghost Stories-36]


** অমীমাংসিত কাহিনী **


মাঝ রাতে দরজায় কড়া নারার শব্দে ঘুম ভেঙ্গে গেলো। আমি বিরক্ত ভাব নিয়ে দরজা খুললাম। দরজা খুলেই বিস্মিত কণ্ঠে বললাম- আরে তুই? এতো রাতে?
আকাশ একগাল হেসে বললো- দোস্ত অনেকদিন তোকে দেখি না। তোকে দেখতে ইচ্ছে হলো তাই চলে আসলাম।... আজ রাতটা তোর সাথেই কাটাবো।
আকাশ আমার ছোট কালের বন্ধু। আমরা একই সাথে বড়হয়েছি। আমার বাসা থেকে ওর বাসা প্রায় দু-কিলোমিটার দূরে। অনেকদিন তার সাথে বিভিন্ন ব্যস্ততার জন্য দেখা করতে পারি নাই।প্রায় এক মাস হতে যাচ্ছে। আমার সাথে শুধু মাত্র দেখা করবার জন্য এতো রাতে সে চলে আসবে বাসায় তা ভাবতেই পারছি না। এই না হলে বন্ধুত্ব।
তুই কি বাহিরেই দাড়িয়ে থাকবি? ভিতরে আস? গল্পকরি দুই বন্ধু মিলে সারারাত।
নারে দোস্ত ঘরে বসবো না। চল বাহির থেকে ঘুরে আসি।
আমি অবাক হয়ে বললাম- সে কিরে! এতো রাতে কোথায় যাবি? আর তুই এতো সাহসী হলী কবে থেকে? কিছুদিন আগেও না সন্ধ্যার পর তুই ভূতের ভয়ে বাসার বাহির হতি না?
এখন কি আর সেই দিন আছে! চল বাহিরে চল। আকাশ একগাল হেসে উত্তর দিলো।
আকাশে কি সুন্দর চাঁদ উঠেছে তাই নারে আকাশ?
হু
আচ্ছা তোর হয়েছি কি বলতো? আসবার পর থেকেই এতোচুপচাপ কেন?
আকাশ মৃদু হেসে বললো- না এমনিতেই। এখন থেকে ভাবছি একাই থাকবো। সন্ধ্যার সময় ডিসিশন নিয়েছিলাম। সারারাত ছিলামও একা। কিন্তু এখন খুব বেশি ভয় করছিলো তাই তোকে ডেকে নিয়ে আসলাম।
আমি আবারো অবাক হয়ে বললাম- একা ছিলি, ভয় করছিলো এগুলোর মানে কি? তুই সারারাত কোথায় ছিলি?
বাড়ির বাহিরে।
কেন? বাসা থেকে কি তোকে বের করে দিয়েছে?
নারে বাহির করে নাই। আর বাহির করবে কেন? আমি নিজেই বের হয়ে এসেছি।
কেন?
আকাশ আমার হাত ধরে বললো- দোস্ত আমার বাসায় একটু যাবি? আম্মু আমার জন্য খুব কাঁদছে। আম্মুকে একটু বলে দিয়ে আসবি আমি ভালো আছি। খুব ভালো আছি। আমার জন্য যেন কান্নাকাটি না করে।
আমি অবাক হয়ে বললাম- আমিতো তোর কথাবার্তা কিছুই বুঝতেছি না। কি সব বলছিস? বাসা থেকে কেন বের হয়ে এসেছিস। কি হয়েছে? চল তোকে বাসায়দিয়ে আসি?
নারে দোস্ত আজকে আর বাসায় যাবো না। পরে আরেকদিন বাসায় যাবো। তুই একটু যাবি দোস্ত। আম্মু খুব কান্নাকাটি করছে। বলেই আকাশ আমাকেজরিয়ে ধরে কাদা শুরু করলো।
এখন রাত সারে তিনটা। আমি আকাশের বাসার সামনে দাড়িয়ে আছি। আকাশকে কিছুতেই আনা যায় নি। ওকে বলেছিলাম তুই গিয়ে আমার রুমে বস আমি খালাম্মাকে বলে দিয়ে আসছি তুই আমার কাছে আছিস এবং ভালো আছিস। সে তাও করে নাই। রাস্তায়ই দারিয়ে আছে। আমি খালাম্মার সাথে কথা বলে বাহির হবার পর নাকি আমার সাথে আমার বাসায় যাবে। কি ঘটেছে কিছুই বুঝছি না। আকাশের কান্নার জন্য বাধ্য হয়েই এতো রাতে আকাশের বাসায় আমার আসতে হয়েছে।
আমি নিথর পাথর হয়ে দাড়িয়ে আছি। খালাম্মা আমাকে জরিয়ে ধরে অজর ধারায় কাঁদছেন। আমি খালাম্মাকে কি ভাবে শান্তনা দেব বুঝতে পারছিনা। আমার কাছে সবকিছু এলোমেলো মনে হচ্ছে। পুরো বাড়ি জুরেই কান্নার শব্দ ভেসে বেড়াচ্ছে। বাড়িতে অনেক মানুষ। পুলিস এসে আকাশের লাশ নিয়ে যাচ্ছে। আজ সন্ধ্যায় আকাশ তার রুমে গলায় ফাঁস আটকিয়ে আত্মহত্যা করেছে।
আমার আস্তে আস্তে বোধশক্তি লোপ পাচ্ছে। এ আমি কি শুনছি। আমি তাহলে এতক্ষণ কার সাথে ছিলাম? আকাশই তো তার বাসায় আমাকে আসতে বললো। আকাশের লাশটি পুলিশের গাড়িতে তোলা হচ্ছে। শেষ বারের মতো আকাশকে দেখলাম আমি। আমার সমস্ত পৃথিবী দুলো উঠলো। মনে হচ্ছে সবকিছু দুলছে। চোখ এর সামনে থেকে সবাই আস্তে আস্তে দূরে সরে যাচ্ছে। আমি আসতে আসতে অন্ধকার একটা জগতে হারিয়ে যাচ্ছি। দূরে কে যেন কান্না করছে। তার মাঝে কে যেন বলছে- আম্মুকে বলিস, আমি ভালো আছি।

** কাহিনীটি শেয়ার করেছেন-- পলাশ মাহমুদ **


:: কর্ণফুলি'র রহস্য :: [Ghost Stories-35]


:: কর্ণফুলি'র রহস্য ::


এই ঘটনাটি আমি আমার খালাতো বোনোর কাছ থেকে শুনেছি, কর্ণফুলিতে সন্ধ্যার আগে নদীর পাড়ে এসে গোসল করা নিষেধ। এই কথা যারা মানেনি তাদেরকেই নদী টেনে নিয়ে গেছে।






এবার বিস্তারিত আমার খালাতো বোনের শিক্ষক ওকে যখন বলে ঘটনাটি ঠিক এরকম, "আমি তখন ম্যাট্রিক দেবো, বাবা শিকলবাহা তাপবিদ্যুৎ এর প্রকৌশলী, নদীর পাড়ে আমাদের বিশাল কোয়ার্টার। আমাদের সার্বক্ষণিক একজন বুয়া থাকতো যিনি তাঁর ছেলে সবুজসহ আ...মাদের ঘরে থাকতেন। একদিন বিকালে সবুজ তার সহপাঠি ও সহপাঠি'র ছোটভাই সহ নদীতে নামে। আধাঘন্টা যাবৎ পানিতে দাপাদাপি করার পর হঠাৎ সবুজ টের পায় তাকে কিসে যেন পানিতে টানছে। সবুজের সহপাঠি শত চেষ্টা করেও সবুজকে ধরে রাখতে পারলো। নিজের ছোটভাইকে পাড়ে পাঠিয়ে দিয়ে এবার ছেলেটি সবুজকে খুঁজতে পানিতে ডুব দেয়, সেও ফেরে না। অনেক কান্নাকাটির রোল পড়ে যায় আমাদের ঘরে। দুদিন পর আমাদের এলাকার মসজিদের ইমাম স্বপ্নে দেখেন আগামী দুপুর ১২টায় ছেলে দুটির লাশ পানির উপর উঠবে। পরদিন জানাজানি হওয়ার সাথে সাথে ১২টার আগেই প্রচুর মানুষ জড়ো হয়ে যায়। এবং সত্যি সত্যি লাশ ভেসে ওঠে সবুজের, কিন্তু লাশ ভেসে ওঠার নিয়মটা ছিলো অদ্ভূত। লাশটা ভূশ করে প্রায় ১০ফুট উঁচুতে ভেসে প্রায় ৩,৪সেকেন্ড স্থায়ী ছিলো আকাশে এবং মানুষজনের মাঝে 'হো' করে একটা গুঞ্জন হয়। আজো জানা যায় নি এ জায়গার রহস্য কি...

by: Ragib Nizam Jisan

[Ghost Stories-34]


তখন আমরা ময়মনসিংহের ত্রিশালে থাকি। আমি তখন খুব ছোট। যেইদিনের ঘটনা সেদিন আমার আম্মু রান্না ঘরে মাছ ভাঁজছিলেন। এমন সময় খাকি প্যান্ট আর গেঞ্জি পড়া এক যুবক আসলো আমাদের কোয়ার্টারের বারান্দায়।
 আব্বু বাসায় ছিলেন। তিনি ভাবল...েন হয়তো সাহায্য চাওয়ার জন্য এসেছে, কারন যুবকটি কোনো কথা বলছিল না। তখন আব্বু একটি ২ টাকার নোট বের করে ছেলেটিকে দিতে চাইলেন। কিন্তু সে তা নিলো না। তখন আব্বু আম্মুকে উদ্দেশ্য করে বললেন, ছেলেটা তো টাকা নিচ্ছে না। তখন আম্মু বললেন ৫ টাকা দেয়ার জন্য। তখন আব্বু ৫টাকা বের করে বারান্দায় এলেন ছেলেটিকে দেয়ার জন্য। আম্মুও বেরিয়ে এলেন এই অদ্ভুত যুবকটিকে দেখার জন্য। কিন্তু এবারো সেই যুবক টাকা গ্রহন করলো না। বরং ইশারায় আব্বুকে বললেন টাকাটা তিনি যেনো আম্মুর হাতে দেন। আব্বু আম্মুর হাতে টাকাটা দিলেন। ছেলেটি এবার ইশারায় আম্মুকে বললেন তার টাকা ধরা হাতটি মুঠো করার জন্য। এই পর্যন্ত ছেলেটি একটি কথাও বলেনি। আম্মু কৌতূহল বশত হাতটি মুঠো করলেন। এবার সে দুই হাত মুঠো করে একটার পিছনে আরেকটি ঘসে দিল এবং আম্মুকে তাই করতে বলল। আম্মু মন্ত্রমুগ্ধের মত তাই করলেন। এবার ছেলেটি আম্মুকে ইশারা করলো যাতেআম্মু নিজের হাতের গন্ধ শুঁকেন। আম্মু হাত নাকের কাছে নিয়ে খুব আশ্চর্য হয়ে গেলেন। উনার হাত দিয়ে আগর বাতির গন্ধ বের হচ্ছিল। কিন্তু তিনি একটু আগে যখন রান্না ঘর থেকে বেরহন তখনো তার হাতে হলুদের গন্ধ ছিল। গন্ধ শোঁকার সাথে সাথে লোকটি চলে গেলো। আম্মু তাকে দাঁড়াতে বললেন। কিন্তু সে দাঁড়ালো না। আম্মু তড়িঘড়ি করে গেটের বাইরে গেলেন কিন্তু আসে পাশে কোথাও সেই লোকটিকে দেখতে পেলেন না। আমাদের কোয়ার্টারের সামনে বিশাল খোলা মাঠ ছিল। তাই কেউ যদি খুব দ্রুত হেঁটেও চলে যায় তবুও তাকে দেখা যাবে সে যত দূরেই থাকুক। এমন সময় এক রিকশাওয়ালা আম্মুর সামনে এসে থামল এবং তাকে ঐ লোকটির কথা জিজ্ঞেস করলো। আম্মু রিকশাওয়ালাকে পাল্টা প্রশ্ন করলেন যে সে ঐ লোকটিকে চেনে কিনা। রিকশাওয়ালা জানালো যে লোকটি তার রিকশাতে করেই এসেছিলো। টাকা চাইতে, কিছু ময়লা কাগজ একত্রে করে ফুঁ দিয়ে আগুন ধরিয়ে দিয়েছিল।এরপর তাকে দাঁড়াতে বলে এইদিকে আসে। রিকশাওয়ালা তাই টাকার জন্য লোকটিকে খুঁজে বেড়াচ্ছে।






কে এই অদ্ভুত যুবকটি? আপনাদের কাছে কি এর কোনো উত্তর আছে? আমার কাছে লোকটি আজো এক রহস্য। আর আপনাদের কাছে?

ঘটনাটি আমাদের কাছে পাঠিয়েছেন আমাদের পেজ এর ফ্যান Mahfuz Murshed|

বিঃ দ্রঃ এই ঘটনাটি আমাদের পেজের ফ্যান Mahfuz Murshed এর জীবনে ঘটে যাওয়া একটি ঘটনা। এই ঘটনার সত্যতা বিচার এর কাজ আমাদের নয় তাই ঘটনার সত্যতা নিয়ে প্রশ্ন না তোলাই সমীচিন হবে।

[Ghost Stories-33]


এই জায়গাটি উরুগুয়ের পিটার মাউন্টেন নামক এক পাহাড়ের নিচের একটি সুড়ঙ্গ । এখানে প্রতি পূর্ণিমা রাতে নীল পোশাকের একটি মেয়েকে দেখা যায় । প্রতি পূর্ণিমা রাতে ! কখনো মিস হয় না । মানুষ বলে অনেককাল আগে এই পাহাড়ের নিচে বাস করতো থমসন ফ্যামিলি । সেই ফ্যামিলির মেয়ে টিনাকে কে বা কারা একবার অপহরণ করে নিয়ে যায় । হয়তো মেয়েটিকে নিয়ে গিয়ে মেরে ফেলে তারা । কারণ মেয়েটিকে এরপরে আর কোথাও খুঁজে পাওয়া যায় নি । সেটা প্রায় ২০০ বছর আগের ঘটনা । টিনার তখন বয়স ছিলো ১৯ বছর । মানুষের মুখে প্রচলিত যে টিনার অতৃপ্ত আত্মা এখনো ঘুরে বেড়ায় পাহাড়ের টানেলে । খুঁজে ফেরে পরিচিতদের । অনেকেই নাকি মাঝে মাঝে গভীর রাতে চিৎকার করে কান্নার আওয়াজ শুনতে পান । ভয়ে কেউ রাতের বেলা ঐ পথ মাড়ান না ইদানীং ।


:: কুকুর রুপী জ্বীন :: [Ghost Stories-32]


:: কুকুর রুপী জ্বীন ::



আমার এ ঘটনাটি আমার চাচাত বোন এর কাছ থেকে শুনেছি ।
আপুর মামাত বোনকে তাবিজ করা হয়েছিল । আপুকে(যাকে তাবিজ করা হয়েছিল) অনেক কবিরাজ দেখিয়েছিলেন কিন্তু অনাকে কোনো কবিরাজ ভাল করতে পারল না । তো ঘটনাটি হল আমার চাচাত বোন মামার বাড়ি গেলে মামা আপুকে তাদের বাড়ি থাকতে বলেন । পরদিন যাকে তাবিজ করা হয়েছিল থাকে নিয়ে শাহপরান এর মাজারে যাবেন এবং সিন্...নি দেবেন মানত করেছিলেন তো সিন্নি ঘরে তৈরি করে রেখেছিলেন । ঐ দিন রাতে রান্না ঘরে সিন্নি রাখা ছিল । ঐ রাতে সিন্নি নষ্ট করার জন্য তাবিজের জ্বীন ঘরে এসেছিল রাত ১২ টা/১ টার দিকে । ঘরের দরজা জানালা সব কিছু বন্ধ ছিল । ঘরে ঢোকার পর মামি ঘরে নড়া-চড়া করার শব্দ শুনতে পেলেন মামি মনে করলেন ঘরে চোর ঢুকেছে মনে হয় । মামি মামাকে ডাকলেন মামা উঠলেন এবং বাতি জ্বলানোর জন্য যেই সুইচ দিতে যাবেন মামা দেখতে পেলেন অনার সামনে ঘরে মাটি থেকে চালা পর্যন্ত বিশাল একটি দেহ, মামা বুঝতে পারলেন এটি জ্বীন তাই মামা জ্বীনটির চোখে চোখ রাখলেন এমনকি চোখের পলক পর্যন্ত ফেলেনি । জ্বীনটির চোখে চোখ রেখে মামা সাহস করে তাড়াতাড়ি সুইচ দিলেন, সুইচটি ২ হাত দূরে ছিল মামার কাছ থেকে এবং জ্বীন থেকে ১/১.৫ হাত দূরে ছিল। মামা বুঝতে পারলেন আর দেরি করলে লাইটের সুইচ দেতে দেবে না জ্বীনটি। তাই মামা সাহস করে যেই সুইচ দিলেন সাথে সাথে জ্বীনটি লাল চকচকে একটি কুকুর হয়ে গেল । এবং বাহির হওয়ার জন্য ঘরের ভিতর দৌড়াতে থাকে । মামা কুকুরটিকে মেরে ফেলতে চাইলেন কিন্তু মামি বাধাঁ দিলেন পরবর্তিতে ক্ষতি করতে পারে এই ভেবে । মামি মামা কে দরজা খুলে দিতে বলেন। মামা দরজা খুলার পর কুকুরটা এক দৌড় দেয় দরজার দিকে, তখন মামা দেখতে পেলেন দরজার কাছে যেতেই কুকুরটি নাই (উদাউ/গায়েব) হয়ে গেল !

পরদিন সকালে মামা খুজতে লাগলেন জ্বীনটি কোন দিক থেকে ডুকেছে । মামা খুজে পেলেন জ্বীনটি ডুকেছিল bathroom/টয়লেটের চালার ফাঁকা অংশ দিয়ে । তাদের বাথরুম সব সময় সেঁতসেঁতে থাকে, তো জ্বীন বাথরুম দিয়ে ডুকেছে। এটা জ্বীনের পায়ের ছাপ দেখে বুঝা গিয়েছিল । মামা মেপে দেখলেন সাধারন মানুষের তুলনায় ঐ জ্বীনের পা দ্বিগুন বড় ছিল । ঐ দিন কাউ কে কিছু বললেন নি ।

তারা পরে সিলেটের উদ্দেশ্যে রওনা দেন, মাজারে সিন্নি দিয়ে পরে তারা সিলেটে ফুলতলি সাহেবের বড় ছেলের কাছে গেলেন উনি রোগীকে দেখলেন এবং দেখে আসতে বলেন । মামা আপুকে বাড়িতে নিয়ে এলেন । আসার পর ঐ দিন রাতেই আপু (যাকে তাবিজ করা হয়েছিল) স্বপ্নে দেখলেন তাবিজ কোন কোন জায়গায় আছে ।

পরে এক এক করে প্রায় ৮ টি থেকে ১০ টি তাবিজ তুলা হয় বিভিন্ন জায়গা থেকে। বিশেষ করে আপু যে যে জায়গা বেশি ব্যবহার করতেন সে সব জায়গায় তাবিজ গারা (রাখা) হয়েছিল । পরে তিনি আস্তে আস্তে ভাল হতে থাকেন । এখন আপুটি পুরোপুরি ভাল আছেন ।

জ্বীনটি কেন সিন্নি নষ্ট করতে এসেছিল তা আমাদের জানা নেই । আমার আরও ঘটনা আছে। যদি এই ঘটনাটি আপনাদের কাছে ভাল লাগে, তবে আমি আমার বাকি যে ঘটনাগুলো আছে সেগুলো শেয়ার করব।।

ঘটনাটি পাঠিয়েছেন: Saifur Rahman Sumon Ullah























ভূতুরে হাসপাতাল [Ghost Stories-31]


ভূতুরে হাসপাতাল 


আমেরিকার ম্যাসাচুচেস্ট অঙ্গরাজ্যের সালেম নগরীতে অবস্থিত ডেনভার স্টেট হসপিটালটি ভৌতিক কর্মকান্ডের জন্য
কুখ্যাতি অর্জন করেছে ! এটি মূলত একটি মানসিক হাসপাতাল ছিল যা ১৮৭৯ সালে প্রতিষ্ঠিত হয় মানসিক রোগিদের চিকিত্সার জন্য স্যার উইলিয়াম হার্বার্ট এই হাসপাতালটি প্রতিষ্ঠা করেন ॥ শুরুর দিকে হাসপাতালটির কর্মকান্ডভালভাবে চললেও বছর পাঁচেক পর এক মর্মান্তিক সড়ক দূর্ঘটনায় স্যার উইলিয়াম হার্বার্টের মৃত্যু হলে হাসপাতালটির কর্মকান্ডে আসে আমূল পরিবর্তন ॥ স্যার উইলিয়াম হার্বার্টের মৃত্যুর পর এইখানকের রোগীদের উপর আহ্মরিক অর্থেই নরক নেমে আসে ॥ 

রোগীদের মারধর ,ইলেকট্রিক শক থেকে শুরু করে হাইড্রোথেরাপি পর্যন্ত দেওয়া হত ॥ এরই ধারাবাহিকতায় ১৮৮৫
সালে ব্রায়ান হ্যারিস নামকএক মানসিক রোগীর উচ্চ ইলেকট্রিক শকের দরুন মৃত্যু হয় !

পরে তার লাশ অত্যন্ত গোপনীয়তার সাথে হাসপাতালেরই এক নির্জন জায়গায় কবর দেওয়া হয় ! এই ঘটনার এক সপ্তাহের মাথায় হাসপাতাল কর্মী মাইক হ্যারিসের মৃত্যু হয় ॥ তার মুন্ডুহীন লাশ হাসপাতালের পিছনের উঠানে আবিষ্কৃত হয় ! এরও ঠিক এক সপ্তাহ পর হাসপাতালের ডাক্তার এফ .হেনরির ঝুলন্ত লাশ পাওয়া যায় তারই কহ্মে! এই দুইজনই ছিলেন ব্রায়ান হ্যারিসের হত্যাকারী ! তারা তাদের পৌশাচিক আনন্দ লাভের জন্য রোগীদের উপর বিভিন্ন নির্যাতন চালাত! হতভাগ্য ব্রায়ান হ্যারিস ছিলেন তাদের সেই পৌশাচিক আনন্দের শিকার ॥ এই ঘটনার পর হাসপাতালটি বন্ধ করে দেওয়া হয় ॥ 

তবে আজও গভীর রাতে হাসপাতাল থেকে ভেসে আসে যন্ত্রনাকাতর চিত্কার! মাঝে মাঝে আলোর ঝলকানিও চোখে পড়ে ! এখানকার নিরাপত্তাকর্মীর  মাঝে মাঝে ভারী পায়ে হেঁটে যাওয়ার আওয়াজও শুনতে পান ! কেউ যদি হাসপাতালটি দেখতে চান তবে তাদেরকে শুধু হাসপাতাল চত্বরেই প্রবেশ করতে দেওয়া হয় কখনই হাসপাতালটির ভিতরে প্রবেশ করতে দেওয়া হয় না !

|| অপদেবতা || [Ghost Stories-30]


|| অপদেবতা ||


গুড্র বঙ্গা সাঁওতালদের ভাষায় গুড্র মানে ছোট আর বঙ্গা মানে অপদেবতা । এই গুড্র বঙ্গা নাকি দেখতে বামন আকৃতির, আমাদের গ্রাম আর সিলেটের মৌলভিবাজার জেলায় এমন অনেক কাহিনী শোনা যায় যেখানে অনেকেই এই বামন আকৃতির মানুষ দেখেছেন । আমি আমার মেজো আর ছোট মামার সাথে ঘটনা শেয়ার করছি ।

আমার ছোট মামা ক্লাস 10 এ পড়তেন তখন, খুব ফুটবল খেলতে পছন্দ করতেন । খেলার মাঠটা একটা নদীর তীরে ছিল, মাঠে যেতে হলে একটা কবরস্থানের পাশ দিয়ে যেতে হত । একবার ফুটবল খেলা শেষ হতে হতে সন্ধ্যা হয়ে যায় । মামা একা একা বাড়ি ফিরছে, কবরস্থানের পাশে আসতেই মামা দেখে কবরস্থানে একটা ছোট বাচ্চা মামাকে দেখে লুকোচুরি খেলছে । বাচ্চাটার পরনে কিছুই ছিল না । গায়ের রঙ কালো, চোখগুলো বড় বড়, চোখের পাপড়ি নেই । হঠাৎ দেখে বাচ্চাটা মামার সামনে এসে হাঁটতে লাগল, মামা ভাবল গ্রামের কারো বাচ্চা হবে । মামা একটা ধমক দিল, দেওয়ার সাথে সাথেই বাচ্চাটা দৌড় দিল । এর পর মামা দেখল উনি বাড়িতে যাচ্ছে, এদিকে এশার আজান দিয়ে দিয়েছে কিন্তু মামা বাড়ি ফিরেনি । মামাকে খুঁজতে নানাভাই বের হলেন, সব জায়গায় খোঁজার পর মামাকে প...াওয়া গেল কবরস্থানের একটি গাছের নিচে । মামা ঝিমাচ্ছে, চোখ অর্ধেক খোলা । নানাভাই মামাকে ধরতেই মামা কাঁপুনি দিয়ে ওঠে । নানাভাই মামাকে বলে এই কবরস্থানে কেন উনি । মামা বলে উনি তো বাসায়, উনি কবরস্থানে কেন এটা উনি নিজেও জানেন না । এটা কি হতে পারে ওই জিনিসটা মামাকে পথ ভুলিয়ে দিয়েছিল? পরে মামাকে শরীর বন্ধ করার তাবিজ দেওয়া হয় ।

আমার মেজো মামা তখন কলেজে পড়েন । এক ভর দুপুরে মামা নদীর পাড় দিয়ে হেটে আসছিলেন । একটা আখক্ষেত দেখে মামা আখ ক্ষেতের একে বারে মাঝে ঢুকে আখ ভাঙতে লাগলেন । হঠাৎ উনি দেখেন কিছু দূর সামনে একটা বাচ্চা আখ ভাঙছে । মামার মাথায় তখন অন্য কিছু আসে নি, মামা ওইটাকে ধমক দেন । ওই বাচ্চাটা মামার দিকে ফিরে তাকায়, বাচ্চাটার গায়ে কিছুই ছিল না শুধু গায়ে লোম ছিল কালো কালো । মামাকে দেখে ওইটা আখ ক্ষেতের মাঝে লুকিয়ে যায় । মামা একটা আখ ভেঙে চলে আসবে হঠাৎ দেখে ওই বাচ্চাটা উনার সামনে এসে দাঁড়িয়েছে । চোখগুলো লাল, এভাবে একে একে ৫ টা বাচ্চা আখক্ষেত থেকে বের হল । মামা প্রচণ্ড ভয় পেল, ওরা মামাকে ঘেরার আগেই মামা দৌড়ে আখক্ষেত থেকে বের হয়ে আসেন । এক দৌড়ে বাড়ি পৌঁছে মামা অজ্ঞান হয়ে যান ।

এই বামন আকৃতির বাচ্চাগুলো শুধু নদীর পাড়েই পাওয়া যায় । ভূত এফ এম এর সাঁওতাল মেয়ে বলেছিলেন সাঁওতালরা কিছু আধ্যাত্মিক সাধনা করতে গুড্রবঙ্গাদের পালন করে । এটা কি হতে পারে নদীর পাড়ে যে বেদেরা থাকে তারাও এই ধরণের আধ্যাত্মিক জ্ঞান চর্চা করতে গুড্রবঙ্গাদের পালন করে? এই কথাটা বললাম কারণ হতে পারে আমার মামাদের সাথে যে ঘটনা ঘটেছিল তখন নদীর পাড়ে কোন উপজাতি বাস করত...............

অশুভ ছায়া [Ghost Stories-29]


অশুভ ছায়া

[collected]


আজকে আমি যে ঘটনাটি শেয়ার করবো সেটা ঘটেছে১০-১২ বছর আগে। আমার আম্মু আব্বু দুজনেই সরকারি চাকুরী করেন। উনাদের চাকরীর সুবাদে আমরা অনেক জায়গায় থেকেছি, যেমন, মাধবপুর, হবিগঞ্জ, পলাশ, ছুনারঘাট, ত্রিশাল।

আবারো আব্বুর বদলী হল। এবার হল কিশোরগঞ্জ। আব্বুর পৈত্রিক নিবাস। তাই আব্বু ঠিক করলেন যে এবার আর কোথাও যাবেন না। এখানেই থেকে যাবেন।তাই তিনি একটা ভালো বাড়ি দেখতে লাগলেন কেনার জন্য। কিনেও ফেললেন। আমরা উঠলাম নতুন বাড়িতে। কিন্তু বাড়িতে যারা আগেই ভাড়া থাকতো তারা যেতে রাজি হল না। বরং আবদার করল ভাড়াটিয়া হিসেবে এখানেই থেকে যেতে। আব্বু শেষমেশ রাজি হলেন। ভাড়াটিয়ারা ছিলেন হিন্দু। যাকে নিয়ে এই ঘটনা তিনি ঐ ভাড়াটিয়া পরিবারের একজন সদস্য ছিলেন। আমাদের থেকে বয়সে অনেকবড়। আমার বড় ভাইয়ার সমবয়সী।

উনার নাম ছিল রনি। খুবই দুষ্ট প্রকৃতির ছিলনে তাই উনাকে বেশিরভাগ সময়ই বাসায় পাওয়া যেত না। সারাদিন এটা সেটা করে বেড়াতেন। একদিন তিনি গিয়েছিলেন মাছ ধরতে। মাছ ধরা শেষে তিনি যথারীতি বাসায় ফিরে এলেন। আমাদের বাসার পাশেই ছিল একটা মেহেগনি গাছ। গাছে মেহেগনি ফল ধরেছিল। তো, রনি ভাই সেই ফল পাড়ার জন্য গাছে উঠে বসলেন। গাছতা যেই দিকে ছিল ঐদিকে ছিল নরসুন্দা নদী। আমাদের বাড়ির দিকটা নদীর পার থেকে কাঁটা তারের বেড়া দিয়ে ঘেরা ছিল। রনি ভাই ফল পারছিলেন। হটাত কি যেনও হল আর রনি ভাই ঝটকা খেয়ে গাছ থেকে নিচে পড়ে গেলেন। গাছ থেকে পরেই তিনি গড়িয়েযেতে লাগলেন। আমার বড় ভাই ছিলেন পাশেই। তিনি এই কাণ্ড দেখে দৌড়ে গিয়ে তাকে ধরে ফেললেন।কিন্তু সেই হেংলা পাতলাছেলেটিকে আমার বড় ভাই টেনে তুলতে পারছিলেন না। আমার ভাই নিয়মিত ব্যায়াম করেন, এবং উনার শরীর স্বাস্থ্য মোটামুটি ভালো। তিনি রনি ভাইকে টেনে তুলতে পারছেন না এই কথাটা আমার কাছেও বিশ্বাসযোগ্য হতো না যদি না আমি সেই ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী হতাম। ভাইয়া যতই তাকে টেনে ধরার চেষ্টা করেন তিনি ততই নিচে নেমে যান। যেনও নিচ থেকে কেউ তাকে বড় কোনও শক্তি দিয়ে টানছে। আস্তে আস্তে তিনি কাঁটা তারের বেড়ার দিকে যেতে লাগলেন। রনি ভাই শুধু চেঁচাচ্ছে আর বলছে, আমাকে বাঁচাও, আমাকে নিয়ে গেলো! এরপর অনেক কষ্টে উনাকে উপরে টেনে তলা হয়। টেনে তোলার খানিকপর উনি জ্ঞান হারান। জ্ঞান হারানোর আগে তিনি শুধু একটা কথাই বলেন যে, আমাকে ধাক্কা দিয়ে গাছ থেকে ফেলে দিলো।

তখন লোকজন কবিরাজের উপরবিশ্বাস করতো। তাই এলাকার স্বনামধন্য কবিরাজকে ডেকে নিয়ে আশা হল। আধ্যাত্মিক কোনও ক্ষমতা তার ছিল কিনা জানি না, তবে হিন্দু হলেও তিনি পবিত্র কোরআন শরীফ মুখস্ত করেছিলেন। তিনি এসে একটা সাদা রমালে কর্পূর জাতীয় কিছু নিয়ে কি যেনও করলেন। তারপর রনি ভাইয়ের মাকেবললেন, তোমার ছেলে আজ মাছ মারতে গিয়েছিলো? মহিলা মাথা নেড়ে সম্মতি দিলেন। এরপর কবিরাজ বললেন, ছেলে ভুল করে ফেলেছে। কবরের উপর বসে মাছ মারা ঠিক হয়নি। এরপর তিনি একটা তাবিজ জাতীয় কিছু দিয়ে চলে গেলেন।
রনি ভাইয়ের জ্ঞান ফিরলে পড়ে জানা যায় যে, উনি আসলেই একটা কবরের উপর বসে মাছ ধরেছিলেন। পরে যখন তিনিগাছে উঠেন তখন তার কেবলি মনে হতে থাকে তাকে কে যেনও খুব জোড়ে ঠেলছে। এবং এরপর হটাত ধাক্কা দিয়ে তাকে নিচেফেলে দেয়। নিচে পড়ে যাওয়ার পর তিনি উঠার চেষ্টা করলে কে যেনও তার পা জড়িয়ে ধরে এবং তাকে গড়িয়ে কাঁটা তারের বেড়ার দিকে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করে। এরপর আমার ভাইয়া তাকে টেনে উপরে তুলেন।
এই ঘটনার পর থেকে রনি ভাইয়ের মধ্যে ব্যাপক পরিবর্তন দেখা যায়। উনি আর কোনোদিন মাছ মারতে যাননি। এমনকি সেইগাছের আসে পাশেও যেতেন না। শোনা ঘটনা হলে আমার বিশ্বাস করতে কষ্ট হতো।কিন্তু চোখের সামনে দেখা ঘটনা কি চোখের ভুল বলে কাটানো যায়?

।। ছায়া ।। [Ghost stories -28]


।। ছায়া ।।


আমার কাজিনরা যখন বাসায় আসতো তখন দিন নেই রাত নেই যখন তখন আমরা সবাই মিলে ছাদে চলে যেতাম আড্ডা দিতে। আসলে আমাদের বাসাটা একটু ছোট ছিল, তাই অনেকে একসাথে বসে আড্ডা জমাতে কষ্ট হতো। তো, জুলাই মাসের পরীক্ষা শেষ হবার পর আমার ৪টা কাজিন বাসায় চলে আসে। ১০ দিন থাকবে। ঘুরাফেরা, আড্ডাবাজি করে সময় কাটাবো। সেদিন ছিল মঙ্গলবার। রাত ১১ টার দিকে হটাত কারেন্ট চলে যায়। বিকেল বেলা বৃষ্টি হয়েছে। তারপরও গরম খুব একটা কমেনি। হটাত সিহাব(আমার মামাত ভাই) প্রস্তাব দিলো ছাদে গিয়ে গল্প করার। কারেন্ট আসলে নেমে পড়বো। আমিও ভেবে দেখলাম প্রস্তাবটা। মন্দ না। এখানে বসে গরমে সিদ্ধ হবার চেয়ে উপরে গিয়ে ঘুরে আশা যায়। ৫ ভাই-বোন (আমি আর আমার ৪ কাজিন) মিলে পাটি নিয়ে উঠে গেলাম ছাদে। উদ্দেশ্য, গা এলিয়ে দিয়ে কিছুক্ষণ গল্প করা। আমা ছাদে উঠার প্রায় মিনিট দশেক পর হটাত "ধুপ" করে কিছু একটা পড়ার শব্দ হল। শিপন উঠে গিয়ে ছাদের রেলিং ধরে উঁকি দিয়ে দিলো। কিছু পড়লো, টরলো নাকি বুঝার জন্য। বাড়ির পাশেই একটি গলির মতো। সেখানে অন্ধকারে কিছুই দেখা যাচ্ছিল না ভালো মতো। যাই হোক, অল্প কিছুক্ষণের মধ্যে ভুলে গিয়ে আবারো আড্ডায় মন দিলাম আমরা।

এইবার আমাদের পাশের বাড়ির ছাদ থেকে কেমন অদ্ভুত একটা শব্দ হল। সেই শব্দটা বর্ণনা করতে পারবো না আমি। কিন্তু, সেইরাতে আমরা সবাই শুনেছিলাম শব্দটি। সিহাব বসা থেকে উঠে বলল, আমি দেখে আসছি। আমরা ছাদের একপাশে বসেছিলাম। আর যেই ছাদ থেকে শব্দটি আসে সেই ছাদটা অপর পাশে ছিল। সিহাব যাওয়ার সাথে সাথে দিগুন বেগে ফিরে এলো। বলল, ঐ বাড়ির ছাদে যেনও কে আছে। আমি বললাম, হয়তো ঐ বাড়ির কেউ উঠেছে। বাদ দে! সিহাব বলল, বুঝলাম না। আমার কাছে কেমন যেনও অদ্ভুত লাগলো। যেনও কোনও মানুষ না, শুধু একটা কালো ছায়া। প্রথমে আমি পাত্তা দিলাম না। কিন্তু মৌ কিঞ্চিৎ ভয় পেয়ে গেলো। বলল, এতো রাতে ছাদে না থাকলেই ভালো। চলো নিচে চলে যাই।

নামার পথে পাশের বাড়ির ছাদটা চোখে পড়ে। আমি অবাক হয়ে তাকিয়ে দেখলাম, আসলেই কেউ একজন দাঁড়িয়ে আছে। সাড়া গায়ে যেনও একটা কালো চাদর জড়ানো। আমাদের বাড়ির ছাদে একটি মার্কেটিং বোর্ড লাগানো। কারেন্ট না থাকলেও তা সন্ধ্যার পর সবসময় জ্বলে। তা থেকে আলোর প্রতিফলনের ফলে আমাদের ছাদের ঢোকার রাস্তা এবং আশেপাশের জায়গা একটু আলকিত হয়। তবে তাতে ঠিক আঁধার কাটে না। তবে কোন কিছুর অস্তিত্ব বুঝা যায়। যাই হোক সেই কালো মূর্তি দেখে আসলেই ভয় পেলাম। একে তো অন্ধকার তার উপর কালো চাদরে ঢাকা কেউ একজন, ব্যাপারটাকে ভূতুড়ে করে ফেলল। আমার দেখাদেখি বাকিরাও এসে পাশে দাঁড়ালো। সবার চোখেই বিস্ময়। মৌ ফিসফিস করে বলল, ঐটা কে রে আপুনি? আমি বললাম, বুঝতে পারছি না। ঐ বাসায় তো শুধু হাকিম চাচ্চুরা থাকেন। উপরের ২ তলা ফাঁকা, ভাড়াটিয়া নেই। আর এতো রাতে হাকিম চাচ্চুর ছাদে আসার কথা নয়।

তখনো অনেক কিছু ঘটা বাকি ছিল। অবাক হয়ে তাকিয়ে দেখলাম, সেই মূর্তির পাশে আর একটা মূর্তি এসে দাঁড়ালো। ২টা ছায়া। এবং ২টাই কালো চাদরে ঢাকা। খানিকবাদে দেখলাম ৩টা হয়ে গেলো। ভয়ে তখন যার যার জায়গায় স্থির দাঁড়িয়ে আছি আমরা। হটাত শিপন ফিসফিস করে বলল, আমার কাছে ব্যাপারটা সুবিধার মনে হচ্ছে না। চলো, নিচে চলে যাই।

সবাই নিচে নামার জন্য রাজি। সিঁড়ি দিকে পা বাড়াতে যাবো, এমন সময় কারেন্ট চলে এলো। সাথে সাথে তাকিয়ে দেখলাম পাশের ছাদের দিকে। কেউ নেই! ৩টা ছায়া তো দূরের কথা! কাউকেই দেখতে পেলাম না। অথচ হাকিম চাচ্চুদের ছাদের পুরো অংশ দেখা যায় আমাদের ছাদে উঠার রাস্তা থেকে। এবার আর দেরি করলাম না। দ্রুত নেমে পড়লাম।

মনের মধ্যে কেমন যেনও উসখুস করতে লাগলো। কিন্তু তবুও আম্মু আব্বুকে কিছু জানলাম না সেই রাতে। পরের দিন, কৌশলে আম্মুকে জিজ্ঞেস করলাম, হাকিম চাচ্চুদের বাসায় কোনো ভাড়াটিয়া আসছে কিনা। আম্মুর উত্তর শুনে চমকে উঠলাম। হাকিম চাচ্চুদের বাসায় ভাড়াটিয়া তো দূরের কথা, এমনকি উনারাও নেই। চাচ্চু কি একটা কারনে দেশের বাইরে গেছে এবং উনার ওয়াইফও সাথে গেছেন। ৩ তলা বাড়িটা পুরোটাই এখন খালি!



# বীভৎস নারী # [Ghost Stories -27]


# বীভৎস নারী #


ঘটনাটি খুব ছোট। কিন্তু সেদিনের পর থেকে তা আমার জীবনের কয়েকটা কাজকর্ম আমূল পাল্টে দেয়।

আমি গ্রামের ছেলে। মফঃস্বল শহরে একটা কলেজে পড়ার জন্য গ্রাম ছেড়ে মফঃস্বলে চলে আসি। এখানে আমার এক কাকার বাসায় থাকতাম।

যাই হোক, ছুটি ফাটা বা বৃহস্পতিবার কলেজ শেষে গ্রামের বাড়িতে চলে যেতাম। একদিন থেকে পরের দিন সকালে চলে আসতাম ক্লাস ধরার জন্য।

তেমনি করে এক বৃহস্পতিবার আমি বাড়ির উদ্দেশ্যে রওনা হই। কলেজে ব্যাবহারিক ক্লাসের কিছু কাজ থাকায় বের হতে একটু দেরি হয়ে যায়। ঠিক ৫ টার দিকে বাসে উঠি আমি। বাড়ি ১ ঘণ্টার রাস্তা। অর্থাৎ, সব কিছু ঠিকঠাক থাকলে আমি ৬ টার দিকেই গ্রামের রাস্তায় পৌঁছে যাবো।

বলে রাখা দরকার, তখন শীতকাল ছিল। যারা গ্রামে থাকেন তারা জানেন যে, শীতকালে গ্রামে-হাটে যাত্রাপালা, নাটক ফাটক বেশি হয়। আমি যখন গিয়ে বাস থেকে নামি তখন সন্ধ্যা হয়ে গেছে। রাতের আলোতে দেখলাম গ্রামের বাজারে শহর থেকে একদল নাট্যকর্মী গেছে। সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের প্রতি ছোট বেলা থেকেই আমার বেজায় ঝোঁক। অনুষ্ঠান দেখলাম প্রায় ২ ঘণ্টা দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে। রাত তখন সাড়ে ৮টা বাজে প্রায়। আর দেরি করলে মা চিন্তা করবে। এখানে বলে রাখা ভালো, তখনো আমার গ্রামে মোবাইল এতো একটা জনপ্রিয় ছিল না। তাই চাইলেও আমি মাকে ফোন করে জানাতে পারছিলাম না। অগত্যা বাড়ির দিকে রওনা হই।

বাজারের সব মানুষই তখন নাটক দেখতে ব্যাস্ত। পথে চলতে চলতে লক্ষ্য করলাম, প্রায় সব দোকানই বন্ধ করে দোকানিরা গেছে নাটক দেখতে। এমনকি হাঁটার পথে কারো সাথে যাবো এমন মানুষও দেখলাম না। মাথার উপর বিরাট থালা আকৃতির চাঁদ। বিসমিল্লাহ বলে হাঁটা দিলাম।

আমাদের বাজার থেকে বাড়ি প্রায় মাইলখানেক। হেঁটে যেতে ২০ মিনিটের মতো লাগে। আমি নিজের মনে গুনগুন করতে করতে হাঁটতে লাগলাম। মিনিট পাঁচেক হেঁটেছি, এমন সময় রাস্তার পাশের ঝোপ থেকে খসখস আওয়াজ পেলাম। প্রথমে ভাবলাম মনের ভুল। পাত্তা না দিয়ে হেঁটে এগুতে লাগলাম। মিনিটখানেক সব চুপচাপ। এরপর আবার রাস্তার পাশে কেমন যেনও খসখস শব্দ হলো। এবার খানিকটা ভয় পেলাম। রাতের বেলা গ্রামের পথে শেয়াল চলাচল করে। একা মানুষ পেলে নাকি মাঝে মাঝে আক্রমণ করে বসে। শেয়াল তাড়ানোর জন্য গ্রামের মানুষ লাইট, টর্চ লাইট, নিদেনপক্ষে আগুন নিয়ে ঘুরে। আমার কাছে তার কিছুই নেই। কি করা যায় ভাবছি। এই অবস্থায় যথা সম্ভব মাথা ঠাণ্ডা রাখতে হয়। সাহস হারানো মানে ক্ষতি হবার সম্ভবনা। মনের সব জোর একত্রে করে বলাম, হুর হুর হুস হুস! একটা-দুটো হলে হয়তো গলা শুনেই চলে যাবে। এই ভেবে এমন করা। ঝোপের পাশের আওয়াজ থেমে গেলো একবারে। হটাত করে চারপাশে নেমে এলো সুনসান নীরবতা।

আমার স্পষ্ট মনে আছে সেই ক্ষণটা। ঝোপের পাশ থেকে সাদা কাপড় পড়া একটা মহিলা মতন কে যেনও বের হয়ে এলো। তার উচ্চতা সাধারন মানুষের দ্বিগুণ হবে কমপক্ষে। প্রথমে ভাবলাম চোখে ভুল দেখছি। কিন্তু চেহারার দিকে তাকাতেই মনের ভুল ভেঙ্গে গেলো।

চাঁদের আলোতে চারপাশ পরিষ্কার দেখা যাচ্ছে। সেই আলোয় দেখলাম, বীভৎস এক মুখ। চোখের জায়গাটা গর্ত, কিন্তু কোনও মণি নেই। কপালের মাঝখান বরাবর এক দগদগে ঘায়ের মতো। সেখান থেকে একটি চোখ জ্বলজ্বল করে তাকিয়ে আছে আমার দিকে। হাতগুলো শরীরের দিকে কেমন যেনও বাকা হয়ে আছে। অনেকটা পোলিও আক্রান্ত মানুষদের মতো। চিকন চিকন হাত। মুখ ঘুরে আমার চোখ আসলো সেই মহিলার পায়ের দিকে। দেখলাম পায়ের পাতা পিছন দিকে বাঁকানো। আমার আর বুঝতে অসুবিধা হল না যে আমি কিসের পাল্লায় পড়েছি। যেনও আমার মনের ভাব বুঝতে পেরেই আমার দিকে তাকিয়ে কুৎসিত একটা হাসি দিলো সেই মহিলা। এরপর মাথাটা নিচের দিকে দিয়ে পা শরীরটাকে হেঁচড়ে হেঁচড়ে আসতে লাগলো আমার দিকে। আমার এদিকে ভয়ে দম বন্ধ হয়ে যাবার দশা। প্রানপনে চেষ্টা করছি সুরা কালাম পড়ার। কারণ মা বলতো, এসব আসে পাশে আসলে বা উপস্থিতি টের পাওয়া গেলে সুরা পড়তে হয়। সুরা পড়লে এগুলো চলে যায়। কিন্তু বিশ্বাস করুন, অজানা এক ভয়ে আমার তখন বেহুশ হবার অবস্থা। কোনও সুরা তো মনে পড়ছেই না উল্টা চিৎকার করার শক্তিও যেনও হারিয়ে ফেলছি। নিজেকে বাঁচানোর কোনও আশা দেখছিলাম না।

মহিলাটা এগিয়ে এসে এক হাতে আমাকে ধরতে নিলো। কিন্তু আমাকে আশ্চর্য করে দিয়ে আমাকে ধরার সাথে সাথে ঘুত টাইপের একটা আওয়াজ করে ছিটকে পিছিয়ে গেলো। আমি কিছু বুঝে পেলাম না। দেখলাম, সেই মহিলা আতঙ্কিত হয়ে আমার গোলার কাছের আল্লাহু লেখা তাবিজটির দিকে তাকিয়ে আছে। ঘটনা বুঝতে আমার ২ সেকেন্ড সময় লাগলো। বুঝতে পারলাম, আল্লাহর নাম দেখে সে আমাকে ধরতে পারছে না। মনে মনে মাকে ধন্যবাদ দিলাম। মা বলতো ছোট বেলায় একবার আমাকে নাকি নিয়ে যাওয়ার জন্য জীন এসেছিলো। তার পর থেকে আমার গলায় এই তাবিজটা থাকতো। আমি কখনো খুলতাম না।



এই ফাঁকে হটাত দূরে কিছু মানুষের আসার আওয়াজ শোনা গেলো। তাকিয়ে দেখলাম হাতে টর্চ লাইট নিয়ে কারা যেনও আসছে। আমি লোকগুলোর দিক থেকে দৃষ্টি সরিয়ে সামনে মহিলাটির দিকে তাকালাম। আমার দিকে আগুন চোখে তাকিয়ে সেই মহিলা বলল, আজকে বেঁচে গেলি। পরেরদিন দেখবো তোকে কে বাঁচায়!

এই বলে আমার চোখের সামনে সেটি কুণ্ডলী পাকিয়ে একটি সাদা ধোঁয়ায় পরিণত হল। আমি আর সহ্য করতে পারছিলাম না। জ্ঞান হারালাম।

যতদূর শুনেছিলাম, বাজার থেকে নাটক দেখে ফেরার পথে কিছু লোক আমাকে পেয়ে সেই রাতে বাসায় পৌঁছে দেয়। আমি প্রায় ৪-৫ দিন অচেতন হয়ে বাসায় পরে ছিলাম। সেই সময় নাকি প্রতি রাতেই আমাদের বাসার চালে প্রচুর পরিমাণ ঢিলের আওয়াজ হতো। কে বা কারা একনাগাড়ে ঢিল দিতো, বাড়ির পাশের বাগানে গাছপালা ভাঙার শব্দ পাওয়া যেত। আমি এইসময়ে খুব দুর্বল হয়ে পড়ি। স্বাস্থ্য ফিরে পেতে আমার প্রায় ২ মাস সময় লাগে।

ঘটনাটি জানিয়েছেনঃ আহসান সেলিম অরণ্য (Ahsan Selim Oronno)