''আপনাকে চা দিবো?'' হুমায়রা রুমে ঢুকে আমার পাশে এসে বসতে বসতে জিজ্ঞেস করলেন।
আমি ভ্রু কুঁচকে অবাক নয়নে তাকিয়ে জিজ্ঞেস করলাম, "চা কি? ঐ যে দুধ, চিনি, চা-পাতার মিশ্রণ সেটা?"
আমার কথা শুনে তিনি চোখ বড় করে তাকিয়ে কিছুটা রাগত স্বরে বললেন, "চা চেনেন না আপনি তাই না? বাসায় থাকলে দিনে কাপ দশেক চা সাবাড় করা আপনার রুটিনে পরিণত হচ্ছে আর এখন কি-না আপনি চা কি জিজ্ঞেস করছেন?"
কিন্তু আপনি আমাকে নিজে থেকে চায়ের কথা বলছেন যে? অন্যদিন প্রতিবার চা চাওয়ার পর প্রথম দশমিনিট তো আমাকে লেকচার শুনতে হয়। "চা খাওয়া একটা বদ-অভ্যাস, চা খেলে লিভার নষ্ট হয় ইত্যাদি ইত্যাদি।"
তবুও তো ছেড়ে দেন না। একটু পর পর "মুতাহ্হারা.. ওগো ও মুতাহ্হারা.. আপনার হাতের চা খেতে ইচ্ছে করছে" এই বলে চেঁচাতে থাকেন হুহ্।" আপনি যে আমাকে প্রয়োজনের সময় পটানোর জন্য মুতাহ্হারা বলে ডাকেন, জানি আমি এটা। প্রতিবার ভাবি সাড়া দিবো না। কিন্তু আপনার ডাক শুনে কিভাবে যে মন টা মোমের মতো গলে যায়.. এইটুক বলে তিনি আমার দিক থেকে চোখের দৃষ্টি সরিয়ে মেঝেতে দৃষ্টি ফেললেন। আমি লজ্জা লজ্জা মুখাবয়ব দেখে মনে মনে তা আরো কয়েকগুণ বাড়িয়ে দিয়ে উনার গালগুলোতে টমেটোর ন্যায় লাল আভা ফুটিয়ে তোলার চিন্তা করলাম।
মেয়েরা যখন লজ্জা পায় তখন তা কেউ বুঝে ফেললে লজ্জাভাব আরো বেড়ে যায় কয়েকগুণ। আমি হুমায়রাকে উদ্দেশ্য করে বললাম, "আপনার গালগুলো লজ্জায় লাল হয়ে গেছে, তার উপর কাজল কালো আঁখিদুটিতে যেনো ধরণীর সব মায়া এসে জড় হয়েছে! হুজুররা জান্নাতি হুরপরীর বর্ণনা করেন কিন্তু আমার কি সৌভাগ্য আমি তো দুনিয়াতেই তা চোখের সামনে দেখতে পাই!"
আমার কথা শেষ হতেই "চা দিচ্ছি আপনাকে" এই বলে লজ্জাবতী মুখটা ঢাকতে উনি তড়িঘড়ি করে পাশে বসা থেকে উঠে যেতে লাগলেন। যাওয়ার সময় আরো বলে গেলেন, "এশার পর কেউ যেনো কোথাও বসে আড্ডা দিতে দিতে বাসায় ফিরতে দেরী না করে। দেরী করে ফিরে এসে বিরিয়ানির হাঁড়ি খালি দেখলে পরে আমাকে দোষারোপ করা চলবে না।"
আমি হুমায়রার দৌড়ে পালানো অপলক তাকিয়ে দেখছি আর ভাবছি "এইটুকু কথায় যদি বউয়েরা এভাবে খুশি হয়, তবে সংসারগুলোতে এত ঝগড়াঝাটি হয় কেনো? পুরুষেরা কি তাদের আহালিয়ার প্রশংসা করতেও কৃপণতা করে?!"
- সুখ (কাল্পনিক)
~ মোঃ হামীদ বিন আহমাদ
No comments:
Post a Comment