Wednesday, April 28, 2021

হেয় না করা

 

অনেক দাড়িওয়ালা ভাই দাড়িবিহীন ভাইদের বাকা চোখে দেখে ।
অনেক পর্দাওয়ালা নারী পর্দাহীন নারীদের অবজ্ঞা-ঘৃণার চোখে দেখে। অনেক নামাজি ব্যক্তি বেনামাজি ব্যক্তিকে ঘৃণা-নীচতার দৃষ্টিতে দেখে। এমন ঠিক নয়। এটাও এক ধরনের অহংকার; ইবাদতের অহংকার, নিজেকে অধিক মুমিন ভাবার আত্মগৌরব। যার ভেতরে নামাজ, পর্দা, ইবাদতের এমন আত্মগৌরব তৈরি হবে তিনি ওই পর্দাহীন নারী আর বেনামাজির চেয়েও হতভাগা।
শেখ সাদি রহ. যখন বয়সে কেবল কিশোর, তখন তিনি তার বাবার সঙ্গে কোনো এক বুজুর্গের খানকায় গিয়েছিলেন। সেখানে ওইদিন ইবাদতের কোনো মজমা চলছিল, অনেক ভক্ত-মুরিদান জমা হয়েছিলেন সেখানে। তো, ইবাদত-বন্দেগি শেষ করে রাতেরবেলা সবাই ঘুমিয়ে পড়লেন।
শেখ সাদির বাবা ভোররাতে ছেলেকে জাগিয়ে তুললেন তাহাজ্জুদের জন্য। কিশোর শেখ সাদি তাহাজ্জুদের জন্য অজু করে যখন খানকায় ফিরে আসছিলেন তখন দেখেন, ভক্ত-মুরিদদের অনেকে ঘুমে বিভোর হয়ে আছে, তাহাজ্জুদ আদায়ের ব্যাপারে তাদের কোনো খবরই নেই।
এটা দেখে শেখ সাদি আফসোস করে তার বাবাকে বললেন, ‘দেখলে বাবা, এই লোকেরা ইবাদত করার জন্য এসেছে এখানে অথচ তারা তাহাজ্জুদ নামাজটাই পড়ছে না।’
শেখ সাদির বাবা ছেলেকে দাঁড় করিয়ে বললেন, ‘ঘুমিয়ে যাদের তাহাজ্জুদ কাজা হয়ে গেল তারা যতটুকু হতভাগা, তার চেয়ে অনেক বেশি হতভাগা তুমি—যে নিজের তাহাজ্জুদ নিয়ে আত্মগর্বিত হয়ে পড়েছো।’
মানুষের জন্য অন্তরে ভালোবাসার মহাসাগর তৈরি করুন। কী পুণ্য করবেন অপরকে ঘৃণা করে? কী লাভ হবে আরেকজনকে নীচ-অপদস্থ ভেবে? আপনি জান্নাতে যাবেন, আরেকজনের জন্যও জান্নাতের রাস্তা সহজ করুন। আল্লাহর জান্নাত এত ছোট নয় যে শত কোটি মানুষকে দিলেও আপনার জন্য কম পড়ে যাবে। মানুষকে জান্নাতে যাওয়ার রাস্তা দেখান, জাহান্নাম থেকে তাদের বাঁচাতে এমনভাবে হৃদয়ের তড়প জাগিয়ে তুলুন, যেভাবে ভাই তার ভাইকে আগুনে পড়তে দেখলে তড়পায়। ওটাই মুসলমানিত্ব। মুসলমানিত্বের মধ্যে ঘৃণার কোনো স্থান নেই, ইবাদতের আত্মগৌরবেরও কোনো স্থান নেই!(©-salahuddin Jahangir)
১।আপনার আশেপাশেই এমনও অনেক আছে যার হৃদয় টা চায় প্র্যাকটিসিং মুসলিম হতে কিন্তু এই সমজটা হতে দেয়না,তাকে দেখে অবহেলা ঘৃণার দৃষ্টিতে না দেখে তার কাধে হাত দিয়ে বলুন হে প্রিয় ভাই আমি তোমাকে আল্লাহর জন্য ভালোবাসি চলো মসজিদে যাই নামাযটা পড়ে আসি।
২।কোনো ইয়ো ইয়ো বয় কে দেখে ঘৃণার দৃষ্টিতে না তাকিয়ে তাকে হাসিমুখে সালাম দিয়ে তারসাথে গল্প করুন, তার খবর নিন, হয়তো কোনো একদিন তার মনটা দ্বীন পালনে ব্যাকুল হয়ে উঠবে।
৩।কেউ হয়তো ইসলাম মানে শুধু নামায রোজা হজ্ব পালনই বুঝে,তাকে আপনার থেকে আলাদা ভাববেন না।তার সাথে মিশে কোনো একদিন চা খেতে খেতে বলুন প্রিয় ভাই ইসলাম পুরো একটা জীবনব্যাবস্থা,রাষ্ট্রপরিচালনা থেকে শুরু করে ব্যক্তিগত ভাবে সংসার পরিচালনা,সামাজিক, অর্থনৈতিক ,রাজনৈতিক সকল ক্ষেত্রই ইসলামী শরীয়াহ এর অন্তর্ভুক্ত।চলো আমাদের জীবনটাকে ইসলামের রঙে রঙিন করি।
৪।বন্ধুদের সাথে বসে আড্ডার ফাকে বলুন দেখ আমরাতো দুনিয়ায় সুখের জন্য কতো পড়ালেখা করি কতো পরিশ্রম করি অথচ ইসলামের মৌলিক আকীদা নিয়েই আমরা অনেকে জানিনা! তাদেরকে সময় দিন ।
আমাদের আত্নগৌরব নিজেকে অধিক মুমিন ভাবার tendency পরিহার করা উচিত।এই উম্মাহ এর ক্রান্তিলগ্নে আপনি নিজ অবস্থান থেকে উম্মাহর জন্য সর্বোচ্চ ত্যাগ স্বীকার করুন,ত্যাগেই রয়েছে প্রকৃত সুখ ও সফলতা।

সালামের কয়েকটি ভুল

 May be an image of text that says 'প্রচলিত ভুল Gg Call পর্ব:- shutterstsck Criee সালামের কয়েকটি ভুল Iftekar Husain'

 

সালামের কয়েকটি ভুল

১. সালামের জবাব দিয়ে আবার সালাম দেওয়া

এ রীতিটা ভুল । উত্তম হল সালাম পাওয়ার অপেক্ষা না করে আগে সালাম দেওয়া । কিন্তু কেউ সালাম দিয়ে দিলে তখন দায়িত্ব হল শুধু সালামের উত্তর দেওয়া ।

২. সালামের জবাব না দিয়ে আবার সালাম দেওয়া

এ রীতিটা ও ভুল । বড় কেউ যদি আগে সালাম দিয়ে ফেলে, তখন আমাদের অনেকেই জবাব দিতে লজ্জাবোধ করে । তাই জবাব না দিয়ে নতুন করে সালাম দেয় । এ রীতি প্ররিহাযোগ্য । কেউ সালাম দিলে তার জবাব দেওয় ওয়াজিব । তাই জবাবই দিতে হবে ।

৩. কাউকে সালাম দেওয়া পর ‘সালাম দিয়েছি’ বলা

সালাম দেওয়ার পর উত্তর পেলে আমরা সাধারণত বলে থাকি ‘সালাম দিয়েছি ।’ এভাবে বলা ঠিক নয় । নিয়ম হল আবার সালাম দেওয়া । শ্রোতাকে যতাযতভাবে শুনিয়ে সালাম দিতে হবে । সালামের উত্তর যেমন সালামদাতাকে শুনিয়ে দিতে হয়, তেমনি সালামও শ্রোতাকে শুনিয়ে দিতে হয় ।

৪. মনে মনে বা নিম্নস্বরে সালামের জবাব দেওয়া

এ অভ্যাস প্ররিহাযোগ্য । সালামদাতাকে শুনিয়েই সালামের জবাব দেবে ।

৫. অসময়ে সালাম দেওয়া

কুরআন হাদীসের আলোকে একথা স্পষ্ট যে, সালাম হচ্ছে সাক্ষাতের বিভিন্ন আদবসমূহের একটি গুরুত্বপূর্ণ আদব । সালাম, মুসাফাহা, মুআনাকা ইত্যাদি এক মুসলমান আরেক মুসলমানের সঙ্গে দেখা হলে করার মতো কিছু আমল, যা রাসূলুল্লাহ (সা.) শিখিয়েছেন । কিন্তু দেখা যায় দুআ বা মুনাজাত শেষ হলে অনেকে সালাম দিয়ে বসেন । এটা একটা ভিত্তিহীন রেওয়াজ । দুআ বা মুনাজাত শেষ হওয়ার সঙ্গে সালামের কোন সম্পর্ক নেই । তেমনি মুসাফাহা, মুআনাকার কোন সম্পর্ক নেই ।

৬. সালামের উচ্চারণে ভুল

সালাম একটি দুআ । ইসলামের শিআর ও প্রতীক পর্যায়ের একটি আমল । এর সহীহ উচ্চারণের প্রতি গুরুত্ব দেওয়া জরুরি । কমপক্ষে এতটুকু বিশুদ্ধ উচ্চারণ অবশ্যই জরুরি, যার দ্বারা অর্থ ঠিক থাকে ।

‎‎ ٱلسَّلَامُ عَلَيْكُمْ وَرَحْمَةُ ٱللَّٰهِ وَبَرَكَاتُهُ‎‎

আরবী দেখে এর উচ্চারণ শিখে নেওয়া উচিত । অন্যথায় ع ও ح ইত্যাদি হরফের যতাযত মাখরাজ আদায় হয় না । অনেকে অসাবধানতা বা তাড়াহুড়োর কারণে ভুল উচ্চারণে সালাম দিয়ে থাকে । এমনটা অনুচিত । সালামের ভুল উচ্চারণের কয়েকটি রূপ:
১.স্লামালাইকুম, ২. সালামালাইকুম, ৩. আস্লামালাইকুম, ৪. আস্লামুআলাইকুম, ৫. সেলামালাইকুম, ৬. ইস্লামালাইকুম, ৭. আচ্ছালামু আলাইকুম ইত্যাদি ।
সুত্র:- প্রচলিত ভুল, পৃষ্টা:- ৩৮