Thursday, April 29, 2021

আলেমের বউ

 

গল্পঃ-->আলেমের বউ
লেখাঃ-->শারমিন সুলতানা সালমা
পর্বঃ-->১৩+১৪
আজ পয়েলা জুলাই!
নাজিফার কলেজের প্রথম দিন।
কলেজ ড্রেস পড়ে নিয়ে তার উপর কালো হিজাব আর নিকাব লাগিয়ে হাত মোজা আর পা মোজা লাগিয়ে যায়।
সব মুখ গুলো অপরিচিত!আনমনা হয়ে নাজিফা প্রথম বেঞ্চে বসে!যারা আছে বেঞ্চে তারা সবাই বাহিরে ছিলো
ঘণ্টা পড়ার সাথে সাথে সব গুলো মেয়ে ছেলে ক্লাসে ঢুকা শুরু করলো।উক্ত বেঞ্চের মেয়ে গুলো ও চলে আসে।
ভূত বলে একটা মেয়ে নাজিফার সামনে চিৎকার করে উঠে!
নাজিফা চোখ তুলে তাকায় মেয়েটার দিকে!ফর্সা মুখ,
চুল গুলো রং করা,ফ্যানের বাতাসে মুখের উপর পড়ছে!চুলগুলো বুকের ডানপাশে কিছুটা এনে,বাকীটা পিছনে দিয়ে সুন্দর করে সাজলো মেয়েটা,মায়াবী চোখ,আরো সুন্দর দেখানোর জন্যে পছন্দের নীল শেড আর আইলেনার পেন্সিল দিয়ে টানাটানা করে চোখ সাজালো মেয়েটা!
অন্য একটা মেয়ে বলে উঠে কই ভুত নীলিমা?
নাজিফা বুঝতে পারলো মেয়েটার নাম নীলিমা!
মেয়েটা হাত তুলে নাজিফাকে দেখিয়ে দিলো!সবাই অট্টহাসি দিয়ে ক্লাস কাঁপিয়ে তুলল!
সাথে কিছু ছেলেরা জোড় হলো!
-এই ক্ষেত মেয়েটার সাথে আমি নীলিমা চৌধুরী বসবো নাকি?এই উঠ!
-নাজিফা অবাক হয়ে তাকিয়ে রইলো নীলিমার দিকে!কী সুন্দরী মেয়ে আর তার আচরণ কেমন!
নীলিমা আবার ও চিৎকার দিয়ে বলল,"এই মেয়ে কথা কানে যায় না তোর?
ক্লাসের সবাই হা করে তাকিয়ে রইলো!
নাজিফার মনে পড়ে গেলো
সেই ক্লাস ওয়ানের কথা!একটা ফুটফুটে মেয়ে হাতে ধরে টেনে নিয়ে পিছনের বেঞ্চে বসিয়ে দেয়!
আজ নাজিফার সাথে তার ব্যতিক্রম হচ্ছে না!নীলিমা নাজিফার হাতে ধরে টেনে তুলে!নাজিফা ও নীলিমার সামনে উঠে দাঁড়ায়!দুইজন মুখো-মুখী
নাজিফা বলল,"
আমি এই বেঞ্চেই বসবো!বলে নীলিমার হাতের থেকে নাজিফা নিজের হাত সরিয়ে নেয়!
তোর সাহস তো কম নয়!উঠ বলছি!
-বললাম না আমি এই বেঞ্চেই বসবো!ভাল না লাগলে আপনি উঠে যেতে পারেন!
স্যার চলে আসে ক্লাসে!যে যার মত বসে যায়!নীলিমার ব্যাগ নাজিফার পাশে ছিলো অন্য একটা মেয়েকে ঐ পাশে দিয়ে সবাই বসে যায়!
ক্লাস শেষ হলে স্যার চলে যায়!নীলিমা এসে নাজিফার সামনে দাঁড়ায়!তখন আবার নতুন আরেক স্যার চলে আসে!মনে হয় নীলিমার পরিচিত স্যার!নীলিমার সাথে মজা করছে!নাজিফা বুঝে যায় এই স্যারকে বলিয়ে হয় তো কিছু করবে!
যা ভেবেছে নাজিফা তার হয়তো সূচনা শুরু!
-স্যার আমাদের পাশের মেয়েটাকে অন্য বেঞ্চে বসতে বলুন না!আমার ফ্রেন্ড তানিয়া বসতে পারছে না!(নীলিমা)
-কেন বসতে পারে না?কে আগে এসেছে?
-নাজিফা দাঁড়িয়ে বলল,"আমি এসে বেঞ্চে তিনটা ব্যাগ দেখেছি!তখন আমি এই বেঞ্চে বসি!
-নীলিমা তাহলে তানিয়া অন্য বেঞ্চে বসবে যেহেতু এই মেয়েটা আগে এসেছে!
-স্যার আপনি মেয়েটাকে ভালো করে দেখেন ক্যামন জানি ক্ষেত ক্ষেত লাগছে!আমাদের
সাথে ও কেমন করে বসবে?
-শুনো নীলিমা আমি তোমাদের English teacher"
তোমাদের ইংরেজি মেইন যে বুকটা আছে lesson 1 কী সম্পর্কে জানো?
-না,স্যার!
-আমি আজ প্রথম দিন ভাবছি ক্লাস নিবো না বাট এখন মনে হচ্ছে ঐ lesson সম্পর্কে আজই বলতে হবে!
স্যার তার লেকচার শুরু করলেন!
Nelson Mandela,from Apartheid Fighter to President!
নাম শুনেছো?
-জ্বী স্যার উচ্চ সুরে ক্লাসের সব স্টুডেন্ট!
স্যার আবাও বললতে শুরু করেন,
নেলসন ম্যান্ডেলা দক্ষিণ আফ্রিকা থেকে একটি বহুজাতিক গণতন্ত্রের থেকে দক্ষিণ আফ্রিকা পরিচালিত করেছে এবং সমঝোতা আইকন হিসেবে, যারা সারা বিশ্বের বিচারের জন্য সংগ্রাম করতে এসেছে।
সাদা সংখ্যালঘু শাসনের বিরুদ্ধে তার লড়াইয়ের জন্য প্রায় তিন দশক ধরে বন্দী, ম্যান্ডেলা কখনো তার মানুষ মুক্তি জন্য লড়াই করতে পারেনি।গৃহযুদ্ধ এড়িয়ে যাওয়ার সময় তাকে বর্ণবাদী নিয়ে যেতে হয়।তার ইজ্জত এবং ক্যারিশমা তাকে বিশ্বের সমর্থন জয় করতে সাহায্য করেছে।
ম্যান্ডেলা ১৯৯৪ সালে দক্ষিণ আফ্রিকার প্রথম কালো রাষ্ট্রপতি হওয়ার বিষয়ে তার মাওলার ভাষণে বলেছেন,"
আমি রেস বৈষম্য ঘৃণা করি আর সব ক্ষুধা।আমি আমার জীবনের সব সময় লড়াই করেছি;আমি এখন যুদ্ধ করব, এবং আমার ১০ দিনের শেষ পর্যন্ত তাই করবো!
তিনি কিন্তু সফল হয়েছেন!
আশা করি সবাই বুঝেছো!
ক্লাস শেষ হলে স্যার চলে যায়!নতুন স্যার আসে,স্যার তার পরিচয় দেয়!এমন করে প্রথম দিন শেষ হলো!
নাজিফা পরের দিন ও সঠিক সময় ক্লাসে এসে প্রথম বেঞ্চে বসে!নতুন একটি মুখ,"আমি রাইসা!
-আমি নাজিফা!
-একটা কথা বলি?
-হ্যাঁ,অবশ্যই!
-ক্লাসে তো আমরা সবাই ভাই বোনের মত এত পর্দার কী প্রয়োজন?
-তারা ভাইয়ের মত হলে ও কিন্তু আমাদের জন্য মাহরাম নয়!তুমি জানো ইসলামে কাদের সাথে দেখা দেওয়া যায় আর কাদের দেওয়া যায় না?
-না তো মাহরাম_কী?
-মাহরাম_হলো যে সকল পুরুষের সামনে নারীর দেখা দেওয়া,কথা বলা জায়েজ এবং যাদের সাথে বিবাহ বন্ধন সম্পূর্ণ হারাম তাদের কে শরীয়তের পরিভাষায় মাহরাম বলে|
-তাহলে মাহরাম_কারা নাজিফা?
-মাহরাম_হলো_তারা
-সূরা আন নূরের ৩১ নং আয়াতে আল্লাহ তায়ালা নারীর মাহরাম নির্ধারিত করে দিয়েছেন|
এক_নজরে_মাহরাম_পুরুষ -
১. স্বামী
(দেখা দেওয়া,সৌন্দর্য প্রদর্শনের প্রেক্ষিতে মাহরাম)
২. পিতা, দাদা, নানা ও তাদের উর্ধ্বতন পুরুষগণ।
৩. শ্বশুর, আপন দাদা ও নানা শ্বশুর এবং তাদের উর্ধ্বতন পুরুষগণ।
৪. আপন ছেলে, ছেলের ছেলে, মেয়ের ছেলে ও তাদের ঔরসজাত পুত্র সন্তান এবং আপন মেয়ের স্বামী।
৫. স্বামীর অন্য স্ত্রীর গর্ভজাত পুত্র।
৬. আপন ভাই,সৎ ভাই
৭. ভাতিজা অর্থাৎ, আপন ভাইয়ের ছেলে এবং সৎ ভাইয়ের ছেলে।
৮. ভাগ্নে অর্থাৎ, আপন বোনের ছেলে এবং সৎ বোনের ছেলে।
৯. এমন বালক যার মাঝে মহিলাদের প্রতি কোন আকর্ষণ নেই। (সূরা নূর-৩১)
১০. দুধ সম্পর্কীয় পিতা, দাদা, নানা, চাচা, মামা এবং তাদের উর্ধ্বতন পুরুষগণ।
১১. দুধ ভাই, দুধ ভাইয়ের ছেলে, দুধ বোনের ছেলে এবং তাদের ঔরসজাত যে কোন পুত্র সন্তান।
১২. দুধ সম্পর্কীয় ছেলে, তার ছেলে, দুধ সম্পর্কীয় মেয়ের ছেলে এবং তাদের ঔরসজাত যে কোন পুত্র সন্তান। এবং দুধ সম্পর্কীয় মেয়ের স্বামী। (বুখারী শরীফ হাদীস নং ৫০৯৯, মুসলিম শরীফ হাদীস নং ১১৪৪)
১৩. আপন চাচা, সৎ চাচা।
১৪. আপন মামা,সৎ মামা। (সূরা নিসা-২৩)
উপরোক্ত পুরুষ যাদের সাথে দেখা করতে বা দেখা দিতে পারবে তারা ছাড়া অন্য সমস্ত পুরুষকে দেখা দেওয়া সম্পূর্ণ নাজায়েয এবং হারাম।
-না জেনে এত দিন কত গুনাহ করলাম!আর যাদের সাথে দেখা দেওয়া যাবেনা তাদের কী বলে?
-তাদের গায়রে মাহরাম বলে।
-গায়রে_মাহরাম_কী বোন?
-গায়রে_মাহরাম_হলো
- যে সকল পুরুষের সামনে যাওয়া নারীর জন্য শরীয়তে জায়েজ নয় এবং যাদের সাথে বিবাহ বন্ধন বৈধ তাদের কে গায়রে মাহরাম বলে|
বস্তুতঃ গায়রে মাহরামের সামনে একান্ত অপারগ হয়ে যদি যাওয়াই লাগে তবে নারী পূর্ণ পর্দা করে সামনে যাবে|
-তাহলে গায়রে_মাহরাম_কারা?
-গায়রে_মাহরাম_হলো_তারা
-মাহরাম বাদে সমস্ত বিশ্বে-মহাবিশ্বে যত পুরুষ আছে সব গায়রে মাহরাম!
নিজ পরিবারে
চাচাত/খালাত/মামাত/ফুপাত সব ভাই,
নিজ দুলাভাই,
দেবর,
ভাসুর,
(আপন,দাদা ও নানা শ্বশুর বাদে) সমস্ত চাচা-মামা-খালু-ফুপা শ্বশুর...
নিজ খালু/ফুপা এরা সবাই গায়রে মাহরাম!
তাদের সামনে নিজেকে প্রদর্শন করা আল্লাহর হুকুমের অবাধ্যতা করা!
মাহরাম ছাড়া সকল পুরুষের সামনে পর্দা করতে হবে এবং হবেই..
-মাশাআল্লাহ্! আল্লাহ্ তোমার জ্ঞান আরো বাড়িয়ে দিক!আমি ও পর্দা করবো এখন থেকে!
-আলহামদুলিল্লাহ, শুকরিয়া বোন!
একটু পরেই নীলিমার আগমন,
নীলিমা এসে প্রথমেই নাজিফার ব্যাগ ফেলে দেয়!
অন্য মেয়ে গুলো হাসিটে ক্লাস কাঁপিয়ে তুলছে!নাজিফার নিকাব ভিজে যায় চোখের পানিতে!উঠে গিয়ে ব্যাগ নিয়ে পরের বেঞ্চে বসে!নীলিমা চোখ রাঙ্গিয়ে আবার ও বলল,"তুই আমার আশে-পাশে বসতে পারবিনা!পিছনে যা!
-নাজিফা চুপ করে বসে রইলো!
-এই মেয়ে উঠ!তুই জানিস আমি কে?
-নাজিফা নিজের থেকে উঠে নীলিমার দিকে জুকে বলল,আপনি যে কেউ হোন না কেন?এটা ক্লাস!সবাই স্টুডেন্ট!মাইন্ড ইট!
বলেই নাজিফা বসে যায়!
নীলিমার পাশের ছেলে মেয়ে গুলো নীলিমাকে ক্ষেপাচ্ছে!
দেখ নীলিমা মেয়েটার সাহস দেখ!তুই ও দেখিয়ে দেয়
তোর সাহস কতটা!
নীলিমার চোখ লাল হয়ে উঠে!ড্রেসের হাতা ডান হাত দিয়ে বাম হাতেরটা তুলছে!নীলিা আস্তে করে জুকে তাদের দিকে বললো!আমি মেয়েটার নিকাব খুলবো তার পর তাপ্পর দেবো!ভিডিও অন কর!
নাজিফার সামনে এসে বেঞ্চের মাঝে দুই হাত রেখে নাজিফার চোখে চোখ রেখে নীলিমা বলল,দেখা যাক কার সাহস বেশি!
চলবে,
আলেমের_বউ (পর্ব-১৪)
নীলিমা আস্তে করে জুকে তাদের দিকে বললো!আমি মেয়েটার নিকাব খুলবো তার পর তাপ্পর দেবো!ভিডিও অন কর!নাজিফা ও মনে মনে বলতে লাগলো আমার নিকাব খোলা এত সস্তা নয়!
নাজিফার সামনে এসে বেঞ্চের মাঝে দুই হাত রেখে নাজিফার চোখে চোখ রেখে নীলিমা বলল,দেখা যাক কার সাহস বেশি!বললেই নাজিফার নিকাব খুলে ফেলবার জন্য হাত বাড়ায়!নাজিফা দাঁড়াতে দাঁড়াতে নীলিমার হাতে ধরে নেয়!নীলিমা হাত সরিয়ে নাজিফার নিকাবের উপরেই গালে তাপ্পর দেওয়ার জন্য হাত উঠায়!
নাজিফা নীলিমার এবার ও হাতটা ধরে ফেলে!শক্ত করে চেপে ধরে বলল,চেয়েছিলাম কিছু করবো না!বাট করতে বাধ্য করলেন বলে নাজিফা নিজেই তার হাত দিয়ে নীলিমার গালে তাপ্পর তোলে!
সবাই অবাক চোখে দেখছে!
নাজিফা তাপ্পর দেয়নি!হাত সরিয়ে নেয়!কাউকে তাপ্পর মারা মানে এই নয় যে গালে লাগছে!তুলেছে সেটাই অনেক!
নাজিফা বলতে বলতে শুরু করে নাজিফার হাত দেখিয়ে এটা সেই হাত!
যে হাত দিয়ে সকালে ঠান্ডা পানিতে তালা-বাসন,গ্লাস, পাতিলা ধুই!এটা সেই হাত যে হাত যে হাত দিয়ে আলু,পটল,বেগুন,পেয়াজ,মরিচ ইত্যাদি ইত্যাদি কেটে কখন হাত কেটে ফেলা হাত!
নীলিমার হাতটা উপর করে তুলে আবার ও বলল,আর এটা সেই হাত!যে হাত সকালে এক কাপ চা/কপির কাপ ছুঁয়ে দিন শুরু করে!এটা সেই হাত একটা বিন্দু কণা লাগলেই রক্ত বের না হতেই ডাক্তার ডাক্তার বলে সব শেষ করে!
সবাই হা করে তাকিয়ে আছে!নাজিফা নীলিমার হাত ছেড়ে দেয় আবার ও বলতে শুরু করে আপনি সেই মেয়ে যে প্রাইভেটকার নিয়ে কলেজে এসেছেন!আর আমি সেই মেয়ে যে কি না অর্ধেক হেটে আর অর্ধেক রিকশায় করে কলেজে এসেছি!নাজিফা ঢোক গিলে আবার ও বলা শুরু করে!
-আপনি সেই মেয়ে যে একটু আনন্দ করে বৃষ্টিতে ভিজলে ঐ রাতেই কাঁপুনি দিয়ে জ্বর চলে আসবে আর বড় বড় মেডিকেল নিয়ে কেবিন ভাড়া করে, সু-চিকিৎসা দেবে!
আর আমি সেই ক্ষেত মেয়ে যে না চাইলে ও বৃষ্টিতে ভিজে উঠানের ধান ঘরে নিতে হয়েছে!জ্বর আসলে জল পট্টি দিয়েছে নয় তো নাপা খাইয়ে,,,এইটুকুই!
ক্ষেত মেয়ে গ্রাম থেকে এসেছি তাই না?মানুষ মনে হয় না?আমার এই হাতের একটা তাপ্পর খেলে এমনিতে জ্ঞান হারাতেন!আচ্ছা ক্ষেত মেয়েটার গালে তাপ্পর দিতেন আপনার হাতে কি নোংরা লাগতো না?ক্যামন করে এই হাতে খাবার খেতেন?
নাজিফা হালকা হাসির রেস টানে আর বলে জানি এগুলোর উওর আপনার থেকে নেই!
নীলিমা আর তার দল কেউ ঐ দিনের পর নাজিফার সাথে খারাপ আচরণ করেনি!
নাজিফার ইন্টার প্রথম বর্ষের ফাইনাল পরীক্ষার ফরম পূরন করার জন্য আট হাজার টাকা লাগে!নাজিফা একটা রিকশায় না গিয়ে মাঝে মাঝে হেটে গিয়ে কলেজে ক্লাস করতো ঐ ভাবে এক বছরে পাঁচ হাজার টাকা জমিয়েছে!আরো তিন হাজার টাকা বাকি!বাবাকে টাকার কথা বলার সাহস পায় না!নাজিফা জানে বাবার কাছে এত টাকা নেই!রাতে তবুও চলচল চোখে বাবাকে বলে তিন হাজার টাকা লাগবে!
-বাবা চোখের পানি টলমল করছে!হেসে বলে,"চিন্তা করিস না মা!সকালে পাবি!
-আচ্ছা!
বেলকুনিতে ফোনে বাবা কার সাথে কথা বলছে নাজিফা কাছে যায়!
-হ্যালো!
-আসসালামু আলাইকুম!
-ওয়ালাইকুমুস সালাম!
-আমি আরিফুর রহমান বলছি!
-জ্বী,বলুন!
-একটা সিরিয়াল দিয়েছিলাম ডাক্তার তানিম চৌধুরীর কাছে!
-জ্বী!
-ওটা কেটে দেন!
-আচ্ছা!
.
নাজিফা না চাইতেই চোখের পানি চলে আসে!বাবা সকালে যে টাকা গুলো দেবে সেই টাকা গুলো ডাক্তার দেখাবার জন্য বাবা রেখেছেন!আর আমাকে দিবেন বলে নিজে আর ডাক্তার দেখাবে না বলে সিরিয়াল কেটে দিতে বলল ফোনে!
এপাশ ওপাশ করে নাজিফার রাত বিচানায় শুয়ে।চোখে ঘুম নেই!পাশের রুম থেকে বাবার কাশের শব্দ বেসে আসছে!বাবার খুব কষ্ট হচ্ছে!একটানা কাশ দিয়ে যাচ্ছে!আদা দিয়ে ভাল করে গরম পানি এনে দেয় নাজিফা।এমন ভাবে কেটে যায় রাত!
-নাজিফা মামুনি এই নেয় তিন হাজার টাকা!
নাজিফা বাবার দু"চোখের দিকে তাকাতে পারছেনা!নিজেকে অপরাধি মনে হচ্ছে!টাকা গুলো নিয়ে কলেজে চলে আসে!
নাজিফা না?(মোস্তফা কামাল স্যার)
-আসসালামু আলাইকুম।
-ওয়ালাইকুমুস সালাম!
-জ্বী আমি নাজিফা।
-টাকা জমা দিয়েছো?
-না স্যার,আজ দেবো!
-সব দিতে পারবে?
-পারবো কিন্তু,
-কিন্তু কী?
-না মানে!
-বলো!
-একজন অসুস্থ বাবার চিকিৎসার টাকা দিয়ে সবটা দিতে পারবো!
-মানে কী?তোমার বাবা অসুস্থ?
-শুধু অসুস্থ নয়,আজ ডাক্তার দেখার কথা ছিলো সিরিয়াল কেটে দিয়েছে আর আমাকে টাকা গুলো দিয়ে দিয়েছে!
-কী বলছো তুমি?
-হ্যাঁ স্যার!
-তুমি একটা আবেদন পত্র লিখ!আমাকে দিও!তাড়াতাড়ি করো!
-আচ্ছা স্যার!
অবশেষে চার হাজার টাকা দিয়ে ফরম পূরনের কাজ শেষ করে নাজিফা!
বাসায় না গিয়ে দোকান থেকে বাবাকে নিয়ে সোজা মেডিকাল!
ডাক্তার তানিন চৌধুরী নাক,কান ও গলার ডাক্তার।
তিনটা রক্ত পরীক্ষা করতে দেন ডাক্তার!
রিপোর্ট এর জন্য অনেকটা সময় ধরে অপেক্ষা বাবা আর মেয়ে!
রিপোর্ট হাতে নিয়ে তাড়াতাড়ি দেখে নিলাম।মনে হচ্ছে দুইটা নরমাল একটায় সমস্যা!তাড়াতাড়ি ডাক্তার এর রুমে এলাম!
-ভয়ের কারণ নেই,নিয়মিত ঔষধ খেলে ভাল হয়ে যাবে।ইনশাআল্লাহ।(ডাক্তার)
-আচ্ছা (নাজিফা)
বাবার চোখে পানি।না এটা কষ্টের নয়,আনন্দের হাসি"ঔষধ নিয়ে বাসায় এসে নাজিফা দেখে,"
অনেক মহিলা রুমে!
পরে জানতে পারে ছেলে পক্ষ এসেছে রাবেয়া আপুকে দেখতে!দেখা শেষ পছন্দ হয়েছে!
তারিখ দেবে বিয়ের!
মাহমুদ মামা তাদের বলে দেয়!তার বড় ছেলে আসলেই তারিখ দেবেন!
চলে আসে বড় ছেলে
শাহপরান হাসান
বাংলাদেশে!বাসায় সম্পূর্ণ পর্দা মেনে চলে প্রতিটা মেম্বার্স! তাই কখন নাজিফা শাহপরান ভাইকে দেখেন না!
নাজিফার ইন্টার ফাইলা পরীক্ষা ও শেষ আজ!ব্যবহারিক পরীক্ষা দিয়ে শু-প্রভাত বাসে উঠে!পাশে বসে সুন্দরী এক আপু!
বাট মেয়েটা কাঁন্না করছে বুঝা যায়।বার বার ফোনটা বের করে কাউকে ফোন করে,হতাশ হয়ে ফোন রেখে দেয়!আমার কৌতহল বেড়ে য়ায।
-আসসালামু আলাইকুম
-ওয়ালাইকুমুস সালাম(অপরিচিত মেয়ে)
-আপু বলতে পারি!
-হ্যাঁ বলেন!
-আমি আপনার ছোট হবো,তুমি বলিলি?
-শিউর!
তুমি কাঁন্না কেন করছো?
-কই না তো!
-লুকাবে না!আমি দেখেছি আর বুঝেছি!সো বলেলে দাও না ছোট বোন মনে করে।
-আচ্ছা, শুনো তাহলে,,,,,
-শুনো তাহলে,
-হ্যাঁ বলো?
-আমার শরীরটা ভাল নেই বোন!রক্ত পরীক্ষা করিয়েছি।
-রিপোর্ট কী আসলো?
- ক্যান্সার!
-ডাক্তার কী বলে?
-কি আর বলবে বাহিরের দেশে গেলে হয় তো ভালো হবে নয় তো মরণ!
-এমন কথা বলো না,তুমি সুস্থ হবে ইনশাআল্লাহ।
-আমি আমার কথা ভাবছিনা!আমার একটা ছেলে আছে তার কী হবে?
-কতটুকু সে??
-চার বছর!
-ছোট অনেক!বাবা ও নেই তার?
-না,তার জন্মের এক বছর পরেই বিদেশে মারা যায়!
-ওহ আচ্ছা!আমি তোমাকে কিছু পয়েন্ট বলি!শুনো!
-বলো"
-হ্যাঁ,
ক্যান্সার উধাও!
ওশ স্টেট মেডিকেল ইউনিভার্সিটি, মস্কো, রাশিয়ার ক্যান্সার বিশেষজ্ঞ ডা. গুপ্তপ্রসাদ রেড্ডি (বি ভি) বলেছেন, ক্যান্সার কোনো মরণব্যাধি নয়, কিন্তু মানুষ এই রোগে মারা যায় শুধুমাত্র উদাসীনতার কারণে। তার মতে, মাত্র দুটি উপায় অনুসরণ করলেই উধাও হবে ক্যান্সার। উপায়গুলো হচ্ছে:-
১. প্রথমেই সব ধরনের সুগার বা চিনি খাওয়া ছেড়ে দিন। কেননা, শরীরে চিনি না পেলে ক্যান্সার সেলগুলো এমনিতেই বা প্রাকৃতিকভাবেই বিনাশ হয়ে যাবে।
২. এরপর এক গ্লাস গরম পানিতে একটি লেবু চিপে মিশিয়ে নিন। টানা তিন মাস সকালে খাবারের আগে খালি পেটে এই লেবু মিশ্রিত গরম পানি পান করুন। উধাও হয়ে যাবে ক্যান্সার। মেরিল্যান্ড কলেজ অব মেডিসিন- এর একটি গবেষণায় বলা হয়েছে, কেমোথেরাপির চেয়ে এটি হাজার গুণ ভাল।
৩. প্রতিদিন সকালে ও রাতে তিন চা চামচ অর্গানিক নারিকেল তেল খান, ক্যান্সার সেরে যাবে।
চিনি পরিহারের পর নিচের দুটি থেরাপির যেকোনো একটি গ্রহণ গ্রহণ করুন। ক্যান্সার আপনাকে ঘায়েল করতে পারবে না।
তবে অবহেলা বা উদাসীনতার কোনো অজুহাত নেই।
উল্লেখ্য, ক্যান্সার সম্পর্কে মানুষকে সচেতন করতে ডা. গুপ্তপ্রসাদ গত পাঁচ বছর ধরে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমসহ বিভিন্ন মাধ্যমে এই তথ্যটি প্রচার করছেন।
সেই সঙ্গে তিনি সবাইকে অনুরোধ করেছেন এই তথ্যটি শেয়ার করে সবাইকে জানার সুযোগ করে দেয়ার জন্য।
তিনি বলেছেন, “আমি আমার কাজটি করেছি। এখন আপনি শেয়ার করে আপনার কাজটি করুন এবং আশেপাশের মানুষকে ক্যান্সার থেকে রক্ষা করুন। তথ্যসূত্রঃ অনলাইন....
-ধন্যবাদ তোমাকে বোন!অনেক গুরুত্বপূর্ণ তথ্য বলে দিলে।
-আলহামদুলিল্লাহ,শুকরিয়া তোমাকে জানাতে পেরে!
বাস টঙ্গি সরকারি কলেজের সামনে আসলে নাজিফা নেমে পড়ে।
নাজিফার পরীক্ষা ও শেষ!বিয়ের তারিখ ও দিয়ে দেওয়া হয় রাবেয়া আপুর!বিয়ে গ্রামে হবে!ছেলে হাফেজ! মসজিদের ইমাম!
নাজিফার বাবা বিয়ের দিন যাবেন!আগেই চলে আসলো বাকিরা গ্রামে!নাজিফার ইচ্ছা করছিলো না বাবাকে রেখে আসতে!
বাবা বলল,"দেখ মা আমরা তাদের এখানে থাকি এবং খাচ্ছি!তাদের দোকানে কাজ করার সুযোগ পাচ্ছি!তাদের কথা তো শুনতেই হবে!বাবার কথা মেনে নিয়ে নাজিফা গ্রামে আসে রাবেয়া আপুর বিয়েতে!
দোতলা একলা একটা নতুন বাড়ি!মেহমানে গিজগিজ করছে বাড়িটা!পর্দা ও করা যাচ্ছে না!যে কেউ যখন খুশি রুমে চলে আসছে!এগুলো নাজিফার একদম ভালো লাগছেনা!
জানালার পাশে দাঁড়িয়ে আকাশ দেখছে নাজিফা!পিছনের থেকে পুরুষের কণ্ঠ সুর!
-আপনি নাজিফা তাই?
-ঘাড় ফিরিয়ে নাজিফা উওর দিলো,"হ্যাঁ!
-আমি শাহপরান হাসান!
-ওহ আচ্ছা!
-এখানে একা কেন দাঁড়িয়ে আছেন?আর হ্যাঁ আপনি আমার ছোট হবেন তুমি করে বলি!
-আচ্ছা!
-আসলে আমি তোমাকে বাসায় কয়েকবার দেখেছি লুকিয়ে!কিন্তু কখন সামনাসামনি কথা বলার সুযোগ হয়নি!
নাজিফা অবাক হয়ে যায় কী বলে এই আলেম সাহেব!বরাবর নাজিফা হুজুর পছন্দ করেনা নুসাইরের সাথের ঘটনা গুলো মনে পড়ে!তার মাঝে এ কোথায় থেকে এসে কী বলছে এগুলো!
-এই যে ম্যাম!
শাহপরান এর ডাকে নাজিফার ঘোর কাটে!
-জ্বী ভাইয়া বলুন!
-আরে আমি তোমার আপন ভাইয়া না!আমাকে একদম ভাইয়া বলবে না!
নাজিফা নতুন রহস্যের গন্ধ পাচ্ছে!তাই মামি ডাকছে বলে

Wednesday, April 28, 2021

ইসলামে বৈবাহিক সম্পর্কের মৌলিক শর্ত বনাম প্রচলিত সামাজিক খোঁয়াড় Marital Relation in Islam

 

ইসলামে বৈবাহিক সম্পর্কের মৌলিক শর্ত বনাম প্রচলিত সামাজিক খোঁয়াড়

আমাদের সমাজে পারিবারিক পরিমণ্ডলে স্বামী ও স্ত্রীর মাঝে ভালোবাসার ছড়াছড়ি খুব একটা চোখে পড়ে না। অথচ বিয়ের পেছনে ইসলামের যেসব মহান উদ্দেশ্য আছে, তার মধ্যে এটিও একটি। ইসলাম চায়, স্বামী ও স্ত্রীর মাঝে ভালোবাসার সাবলীল বহিঃপ্রকাশ ঘটুক। কিন্তু, আমাদের সমাজে আমরা কি এ ধরণের কোন পরিবেশ অনুভব করি? ভালোবাসার কোন সুগন্ধ কি পরিবারগুলোর দরজা জানালার ফাঁক গলে বেরিয়ে আসে? আসে না। আসে না কেন? এর পেছনে অনেকগুলো কারণ আছে। যেগুলোর উল্লেখ করা হলে, বাণীর উৎসের প্রতি এই প্রথা নির্ভর সমাজের অলঙ্ঘ্য দুর্গ থেকে, প্রবল শব্দে উষ্মার কামান গর্জে উঠতে পারে। তবুও আমাদেরকে কথা বলতে হবে। থেমে গেলে চলবে না। আজ আমি কেবল সবচে বড়ো জুলুমটার কথাই বলবো।
আমাদের সমাজের সাধারণ প্রথা হলো, বিয়ের আলোচনার টেবিলে পাত্র ও পাত্রীর অংশগ্রহণ না থাকা। কবুল বলার অধিকারটুকুই তাদেরকে দেওয়া হয়েছে। মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ এই দেশে, আল্লাহ্‌ তায়ালার নির্দেশ ও রাসূলে কারীম (সা) এর শেখানো পদ্ধতির সরাসরি খেলাফ, এই কুপ্রথা, কবে কিভাবে চালু হলো, তা কারো জানা আছে কি না সন্দেহ। এখন পর্যন্ত এই কুপ্রথা চালু আছে। অথচ, অধিকাংশ মেইনস্ট্রীম আলেম এ ব্যাপারে এখনও নীরব।
দেখুন, বিয়ের প্রশ্নে আমরা নিজেদেরকে অনেকটা গবাদিপশুর শ্রেণীতে ফেলে দিয়েছি। এখানকার অবস্থা দেখে মনে হয়, সংসার হলো, সন্তান উৎপাদনকারী খামার আর বিবাহ হলো এর বায়না দলীল। আমাদের দেশের বিবাহের পদ্ধতি নিয়ে চিন্তা করলে, সংসারকে খামারবাড়ি ছাড়া আর কি বিশেষণেই বা ভূষিত করা যেতে পারে? দুইটা বিপরীত লিংগের প্রাণীকে একটা ছাদের নীচে রেখে দাও। এরপর প্রোডাকশনের জন্য অপেক্ষা করতে থাকো। ভাবখানা তো এমনই। কেউ এর বিপরীত বলতে পারবেন না। অথচ মানুষ তো গবাদিপশু নয় যে, দুই জায়গা থেকে যেমন তেমনভাবে ধরে এনে একটা জোড়া মিলায়ে দিলেই হলো।
অথচ, বৈবাহিক সম্পর্কের ভিত্তিই হলো ভালোবাসার উপস্থিতি। ইসলামে সুস্পষ্ট ভাষায় স্বামী স্ত্রীর ভালোবাসার স্বীকৃতি দিয়েছেন, স্বয়ং সৃষ্টিকর্তা এবং শরীয়তের মালিক- আল্লাহ্‌ তায়ালা।
“এবং তাঁর নিদর্শনসমূহের মধ্যে একটি নিদর্শন হচ্ছে, তিনি তোমাদের জন্য তোমাদের মধ্য থেকেই তোমাদের স্ত্রীদের সৃষ্টি করেছেন, যেনো তোমরা তাদের কাছে মানসিক শান্তি লাভ করতে পারো। আর তিনি তোমাদের মাঝে ভালোবাসা ও আন্তরিকতা সৃষ্টি করে দিয়েছেন”। সূরা আর রূমঃ ২১।
“তিনিই সেই সত্তা, যিনি তোমাদেরকে একটি দেহ থেকে সৃষ্টি করেছেন এবং তার জন্য স্বয়ং সেই বস্তু থেকে তৈরি করেছেন একটি জোড়া, যেনো তোমরা তার কাছ থেকে শান্তি ও আরাম হাসিল করতে পারো”। সূরা আ’রাফঃ ১৮৯।
“তারা হচ্ছে তোমাদের জন্য পোশাক এবং তোমরা হচ্ছো তাদের জন্য পোশাক”। আল বাকারাঃ ১৮৭
সুবহানাল্লাহ! কি সুন্দর উপমা ব্যবহার করলেন আল্লাহ্‌ তায়ালা! স্বামী আর স্ত্রীর ভালোবাসা যে কতো পবিত্র এবং আকাঙ্ক্ষিত বিষয়, তা বুঝানোর জন্য এই একটি উপমাই যথেষ্ট।
একইভাবে, কুরআনে কোন বৈবাহিক সম্পর্ক রাখা না রাখার যে তুলাদণ্ড নির্ধারণ করে দেওয়া হয়েছে, তা হলো দু'টি মানুষের মাঝে ভালোবাসার সম্পর্ক।
“তোমরা (স্বামী ও স্ত্রী) তোমাদের মাঝে উত্তম আচরণের ব্যাপারখানা ভুলে যেও না”। আল বাকারাঃ ২৩৭
“তোমরা (স্বামীরা) হয় তাদেরকে (স্ত্রীদেরকে) উত্তম পন্থায় রেখে দাও অথবা উত্তম পন্থায় বিদায় দাও। শুধু কষ্ট দেবার উদ্দেশ্যে তাদেরকে আটকে রেখো না। এতে তাদের অধিকার (অন্য পুরুষকে স্বামী হিসেবে বেছে নেওয়া) খর্ব করা হয়। যে ব্যক্তিই এমনটা করবে, সে নিজের উপরই জুলুম করবে। আল বাকারাঃ ২৩১
অর্থাৎ, মনের সাবলীল ইচ্ছার বিরুদ্ধে কোন স্ত্রীকে কোন স্বামীর সাথে ঘর করতে বাধ্য করতে, আল্লাহ্‌ তায়ালা নিষেধ করেছেন। কারণ স্ত্রীও একজন মানুষ। তার ইচ্ছা অনিচ্ছার দাম আছে। জোর করে কোন পুরুষ মানুষের সাথে ঘর করতে তাকে বাধ্য করা যাবে না।
“যদি তোমরা আপোষে মিলেমিশে থাকো এবং পরস্পর সীমালংঘন করার ব্যাপারে সতর্ক থাকো, তাহলে আল্লাহ্‌ নিশ্চয়ই ক্ষমাকারী ও দয়াময়। আর যদি (মিলেমিশে থাকা সম্ভব না হয়) দম্পতি পরস্পর থেকে পৃথক হয়ে যায়, তাহলে আল্লাহ্‌ তায়ালা আপন অসীম অদৃশ্য ভাণ্ডার থেকে উভয়কে সন্তুষ্ট করবেন”। সূরা আন নিসাঃ ১২৯-১৩০।
অর্থাৎ, স্বামী ও স্ত্রীর মধ্যে মিল-মিশ ও ভালোবাসার এমন ঘাটতি দেখা দিলো যে, তারা বিয়ের যে সীমা আছে তা লংঘন করে ফেলার আশংকা সৃষ্টি হলো, যেমন, পরকীয়ায় লিপ্ত হওয়া, ব্যভিচারে লিপ্ত হওয়া, একজন আরেকজনের অধিকারে হাত দিয়ে ফেলা, অথবা হত্যা বা আত্মহত্যায় প্ররোচিত হওয়া। এমন পরিস্থিতি কখনোই ইসলাম কামনা করে না। এই পরিস্থিতিগুলো বিয়ের যে উদ্দেশ্য ছিলো, একজন অন্যজনের কাছে শান্তি ও রহমের আশ্রয় পাওয়া, সেই উদ্দেশ্যকে লংঘন করছে। এখানে এরকম সীমালংঘনের আশংকা দেখা দিলে দাম্পত্য সম্পর্ক চুকিয়ে ফেলতে বলা হচ্ছে। শুধু তাই নয়, আল্লাহ্‌র ভাষ্য মতে, এমনটা করলে, আল্লাহ্র অসস্তুষ্টিতে পড়ার আশংকা তো নেই-ই বরং, আল্লাহ্‌র অসীম অদৃশ্য ভাণ্ডার থেকে উভয়কে সন্তুষ্ট করার আশাও দেওয়া হচ্ছে। সুতরাং, এ থেকেও আমরা বুঝলাম যে দাম্পত্য সম্পর্কের আসল স্তম্ভই হলো পারস্পরিক বোঝা পড়া ও ভালোবাসার উপস্থিতি। দু’টি বৈরি সম্পর্ককে নিছক সমাজের চাহিদা পূরণের জন্য বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ করে রাখা শরিয়তের উদ্দেশ্য নয়।
দেখা সাক্ষাৎ এবং পরিচয় ছাড়াই এই সম্পর্ক তৈরি হওয়া একটি অস্বাভাবিক ব্যাপার। কুরআনের ভাষায়,
“এতে তোমাদের কোন গুনাহ নেই যে, এসব নারীদের বিবাহের প্রস্তাব সম্পর্কে ইংগিতে কোন কথা বলো অথবা নিজেদের অন্তরে তা গোপন রাখো। আল্লাহ্‌ জানেন যে, শিগগীর তোমরা তাদের ব্যাপারে আলোচনা করবে। কিন্তু, তাদেরকে গোপনে প্রতিশ্রুতি দিও না। হ্যাঁ, নিয়ম মাফিক (খোলামেলা) আলোচনা করতে পারো’। সূরা বাকারাঃ ২৩৫।
দেখা সাক্ষাতের ব্যাপারে রাসূলে কারীম (সা) নির্দেশনা অত্যন্ত স্পষ্ট।
রাসূলে কারীম (সা) বলেছেন,
"(বিয়ে করতে চাইলে) প্রথমে তাকে দেখে নাও"। -তিরমিযী
আরেক জায়গায় বলেছেন,
"তুমি ভালো করে দেখো, তার (পাত্রীর) কোন বিষয়টা তাকে বিয়ে করার ব্যাপারে তোমাকে আগ্রহী করে"। - আবু দাউদ, মেশকাত
এছাড়াও, তিনি (সা) পাত্রকে পাত্রীর বৈধ অঙ্গগুলো দেখতে বলেছেন। - আবু দাউদ, মেশকাত
লক্ষ্য করুন, উপরের কুরআন ও হাদীসের এই কথাগুলো পাত্রের বাবা, মা, অভিভাবক কিংবা আত্মীয় স্বজনকে বলা হয়নি, বলা হয়েছে স্বয়ং পাত্রকে।
একইভাবে পাত্রীদেরকেও এই অধিকার দেওয়া হয়েছে।
“বালেগা বিবাহিতা নারীর অনুমতি ব্যতীত যেমন বিয়ে দেওয়া যাবে না, তেমনি বালেগা কুমারীকেও তার অনুমতি ছাড়া বিয়ে দেওয়া যাবে না। সাহাবাগণ (রা) জিজ্ঞেস করলেন, তার (কুমারী মেয়ের) অনুমতি কিভাবে নেওয়া যেতে পারে (যদি মেয়ে লজ্জায় কথা না বলে)? তিনি বলেন, তার চুপ থাকাই অনুমতি”। -সহীহ বুখারী ও মুসলিম।
শুধু তাই নয়, আমরা অনেকেই মনে করি, স্বামীর পার্থিব যোগ্যতা, নীতি নৈতিকতা অথবা ধার্মিকতাই সব, পাত্রের চেহারা তথা তার দেহের গঠন ধর্তব্য নয়; ইসলাম কিন্তু তা বলে না।
সাবিত ইবনে কায়েস (রা) এর একজন স্ত্রী জামীলা (রা) রাসূলুল্লাহ (সা) এর কাছে নিচের ভাষায় বিবাহ বিচ্ছেদ চাইলেনঃ
“হে আল্লাহ্‌র রাসূল (সা)! আমার মাথা ও তার মাথাকে কোন বস্তু কখনো একত্র করতে পারবে না। আমি (বিয়ের পর) ঘোমটা তুলে তাকাতেই দেখলাম, সে কতগুলো লোকের সাথে সামনে থেকে আসছে। (তার মানে বিয়ের আগে জামিলা (রা) সাবিত (রা) কে দেখেননি।) কিন্তু আমি ওকে ওদের সবার চেয়ে বেশী কালো, সবচেয়ে বেঁটে এবং সবচেয়ে কুৎসিত চেহারার দেখতে পেলাম। আল্লাহ্‌র শপথ! আমি তার দীনদারী ও চারিত্রিক কোন ত্রুটির কারণে তাকে অপসন্দ করছি, এমন না, বরং তার কুৎসিত চেহারাই আমার কাছে অসহনীয়”।
এই অভিযোগ শুনে নবীজী (সা) বললেনঃ “সে তোমাকে (মোহরানা হিসেবে) যে বাগানটি দিয়েছিলো, তুমি কি তা ফেরত দেবে?”
উত্তরে জামীলা (রা) বললেনঃ "হে আল্লাহ্‌র রাসূল (সা)! আমি তা ফেরত দিতে রাজি আছি, বরং সে যদি আরও বেশি কিছু চায়, তাও দিবো"।
নবী (সা) তখন তাকে শুধু বাগানটি দিতে বললেন, আর সাবিত (রা) কে বললেন, তিনি যেনো বাগানটি গ্রহণ করে জামীলা (রা) কে এক তালাক দেন।
-ইবনে জারীর।
প্রত্যেক মানুষ স্বতন্ত্র রুচিবোধ, পছন্দ অপছন্দ, জীবন সম্পর্কে দৃষ্টিভঙ্গি, স্বভাব প্রকৃতি, অভ্যাস ইত্যাদি বৈশিষ্ট্য ও ধারণার অধিকারী। এই বৈশিষ্ট্য ও ধারণার স্বাতন্ত্র্যবোধ তাকে আলাদা ব্যক্তিত্বে রূপ দেয়। এভাবেই এক একজন মানুষ অন্য আর এক জন ব্যক্তি থেকে ভিন্ন সত্ত্বা লাভ করে। এই বৈশিষ্ট্য তাকে সম্পর্ক নির্মাণের ক্ষেত্রে সাবধানি করে তোলে, সে হয়ে উঠে নৈর্বাচনিক। সব ধরণের মানুষের সাথে তার সখ্য হয় না। বিশেষ বৈশিষ্ট্যের ব্যক্তিরাই তার ঘনিষ্ঠ হতে পারে। দীর্ঘ অভিজ্ঞতা তাকে তার বন্ধু নির্বাচনে দক্ষ করে তোলে। ব্যক্তিগত স্বাতন্ত্র্যের সাথে সাংঘর্ষিক ব্যক্তিত্বের সাথে তার দ্বন্দ্ব অনিবার্য হয়ে পড়ে।
“Birds of the same feathers flock together.”
বিবাহের মতো সুদূরপ্রসারী একটি সম্পর্ক করার আগে পাত্র ও পাত্রীর ব্যক্তিগত স্বাতন্ত্র্যের এই দিকগুলো কি আমরা বিবেচনা করি? একজন পাত্র কেমন ধরণের নারীকে তার জীবন সংগীনি হিসেবে পেতে চান, তা কি আমরা মূল্যায়ন করি? যখন একজন লো কোয়ালিটির রমনীর সাথে হাই কোয়ালিটির কোন পুরুষকে জুড়ে দেওয়া হয় অথবা লো কোয়ালিটির পুরুষের সাথে হাই কোয়ালিটির তরুণীকে বেঁধে দেওয়া হয়, তখন তাদের উপর কতো বড় জুলুম করা হয়, তা কি আমরা উপলব্ধি করার কোশেশ করি! এই একটি জুলুম পরবর্তীতে ঐ পরিবারে কতো অসংখ্য জুলুমের সৃষ্টি করতে পারে, সে কথা কি আমরা ভেবে দেখি? আমৃত্যু এই অসম সম্পর্কে, খুনসুটি থেকে শুরু করে বড়ো ধরণের অঘটনও ঘটতে পারে। এসব অঘটন পরবর্তী প্রজন্মের উপর স্থায়ী রেখাপাত করে।
মহিলাদের ব্যাপারটা তো আরও হৃদয়বিদারক! একজন রমনী, বাবা-মাকে সন্তুষ্ট রাখার জন্য, স্বাভাবিক লজ্জাশীলতার কারণে অথবা পরিবারের শান্তি রক্ষার নিমিত্তে, পাত্রকে না দেখে শুনেই বিয়ের পিঁড়িতে বসেন। সম্পূর্ণ নতুন এক পরিবেশে, অজানা মানুষদের ভীড়ে আসেন, সহায় শুধু স্বামীর দয়া ও সহানুভূতি। আবার, এই লোকটাকে বিয়ের আগে একবারের জন্যও তিনি দেখেননি, লোকটার দিকে তাকালে তার ভালো লাগবে না অন্তরে অনীহা সৃষ্টি হবে, এই বিষয়টাও পরিস্কার নয়, আবার দেখলেও তার ভালো লাগা মন্দ লাগার নেতিবাচক বহিঃপ্রকাশ যেখানে সন্দেহজনক বলে বিবেচ্য, তেমন পরিস্থিতিতে, এক বিপুল মানসিক দ্বান্দ্বিকতা আর অনিশ্চয়তা নিয়েই বাড়িঘর ও আপনজন ছেড়ে, সারা জীবনের তরে, নিশ্চিতভাবে ঐ লোকটার কাছে চলে যাওয়া, এটা কি সাধারণ মানের কোন ত্যাগ! এই ত্যাগ কি তারা স্বেচ্ছায় করেন? মনের আনন্দে করেন? না পরিবেশের চাপে পড়ে, বাধ্য হয়ে করেন? তারপর তার সাথে কি নোংরা, জঘন্য ও পৈশাচিক আচরণ করা হয়, প্রাসঙ্গিকতা রক্ষার খাতিরে সেসব প্রসঙ্গে নাই বা গেলাম।
এখানে অনেকেই হয়তো বলবেন যে, যারা দেখে, শুনে ও বুঝে সম্পর্ক করেন, তাদের কি কোন সমস্যাই হয় না। তাদের উত্তরে আমি বলবো, অবশ্যই হতে পারে বরং না হওয়াটাই তো অস্বাভাবিক। মানুষের সাথে মানুষের সম্পর্কের মিথষ্ক্রিয়ার দাবীই হলো, তাদের মধ্যে মতের বৈচিত্র্য হবে এবং এ নিয়ে কিছু ক্ষেত্রে দ্বান্দ্বিক অবস্থান তৈরি হওয়াও বিচিত্র নয়, বরং এটাই স্বাভাবিক। কিন্তু, বিয়ের আগে পাত্র ও পাত্রীর সাক্ষাৎ এবং তাদের স্বাচ্ছন্দ্য ও চাপমুক্ত মতামত গ্রহণ করলে বড়ো কয়েকটা কল্যাণ লাভ করা যায়।
প্রথমত, এভাবে আল্লাহ্‌ তায়ালার বিধান এবং নবীজি (সা) এর শেখানো পদ্ধতির অনুশীলন করা হয়।
দ্বিতীয়ত, শরীয়তের পূর্ণ অনুশীলনের মাধ্যমে অন্তরে প্রশান্তি এবং আল্লাহ্‌র সন্তুষ্টি লাভ করা যায়।
তৃতীয়ত, এ ধরণের বিয়ে সংসারে স্থায়ী শান্তি ও দম্পতির মাঝে পারস্পরিক সমঝোতার পক্ষে সহায়ক হয়।
চতুর্থত, নারী ও পুরুষকে তাদের জোড়া বেছে নেবার যে অধিকার ও স্বাধীনতা ইসলাম দিয়েছে, তার যথাযথ প্রতিপালন হয় এবং এই অধিকার ও স্বাধীনতা হরণের জুলুম থেকে সমাজ ও পরিবারের বেঁচে যায়।
পঞ্চমত, বিবাহ পরবর্তী অনেক বড়ো বড়ো অকল্যাণ থেকে নিরাপদে থাকা যায়। এর মধ্যে প্রথম অকল্যাণটিই হলো, বিয়ের রাতে স্বামীকে দেখে স্ত্রীর পছন্দ না হওয়া অথবা স্ত্রীর চেহারা দেখে স্বামীর ভেতর হতাশা তৈরি হওয়া। এই ধাক্কার ধকল সারা জীবনই বহন করতে হয়। কেউ কেউ এই ধকল সামলে নিলেও, যেকোন তিক্ত পরিস্থিতিতে এই চিন্তার পুনরায় উদয় হওয়াটাও অস্বাভাবিক নয়। তখন বিষয়টা ‘কাটা ঘায়ে নুনের ছিটা’র মতোই যন্ত্রণাদায়ক হয়।
এবং সবশেষে, বিয়ের সম্পর্কটি পাত্র ও পাত্রীর নিকট প্রশ্নবিদ্ধ হওয়া থেকে রক্ষা পায়। যেমন, বিয়ের পর উভয়ের মনে এই হতাশা তৈরি হওয়ার সুযোগ সৃষ্টি হয় না যে, তাদের অভিভাবক তাদেরকে ঠকিয়েছেন। এই ধারণা তৈরি হওয়ার সাথে সাথে, মূলত, বৈবাহিক সম্পর্কের পবিত্রতার মৃত্যু ঘটে। অবস্থাদৃষ্টে মনে হয় যেন, দুইটা জিন্দা লাশ সংসার করছে।
আমাদের দেশে বিয়ের নামে পক্ষান্তরে কুরবানির অনুষ্ঠানই সম্পন্ন হয়। পশু কুরবানি করা হয়, আল্লাহ্ তায়ালাকে সন্তুষ্ট করার জন্য। এতে আছে অশেষ বরকত ও সামষ্টিক কল্যাণ। আর বিয়ের নামে এখানে দু’টো জীবনকে কুরবানি করা হয়, পরিবার ও আত্মীয়ের লোকদেরকে খুশি করার জন্য। এই পদ্ধতিতে যে অকল্যাণ আছে, তার বিষাক্ততা এতোই সংক্রামক যে, এর বিষক্রিয়া কেবল স্বামী ও স্ত্রীর ভেতর সীমাবদ্ধ থাকে না, বরং তাদের সম্পর্ক থেকে লব্ধ প্রজন্ম এবং পরিবার ও সমাজে এটি ক্রিয়াশীল থাকে। এই সম্পর্কের তিক্ততা থেকে সমাজের অনেক আগাছা ও পরগাছার জন্ম হয়, স্থান লাভ করে দীর্ঘস্থায়ী মানসিক উগ্রতা ও বৈকল্যের।
ইসলামের এতো মহান একটা স্তম্ভে কুপ্রথার পংকিলতা মেখে দিয়ে কী বীভৎস করে ফেলেছি আমরা! এর ফলে আমাদের সমাজে সেই স্তম্ভে এখন বিকৃতির ফাটল ধরেছে। আমরা এর ফল প্রতিনিয়তই ভোগ করছি। অন্যদিকে, কী কৌতুকোদ্দীপক বিষয় দেখুন, যে ছেলে বা মেয়ে চোখ বন্ধ করে বাবা মায়ের সিদ্ধান্ত মেনে নিয়ে কুরবানি হন, তাঁদের নামে উচ্চকিত প্রশংসা হয়। অথচ, এই কাজ আল্লাহ্‌ তায়ালা ও রাসূল (সা) এর নির্দেশের সুস্পষ্ট লংঘন।
এর পরিবর্তন দরকার। পরিবর্তন করবে কে? আপনি আমিই করবো। আমরা অনেকেই হয়তো নিজের জীবনে এটা বাস্তবায়ন করতে পারবো না। হয়তো নিষ্ঠুর বিবেকহীন সমাজের বলী হবো। কারণ, আমরা এখনও পরাধীন, ক্ষমতাহীন। কিন্তু, আমরা তো চাইলেই আমাদের বংশধরদের থেকে এই কুপ্রথাকে বিদায় জানাতে পারি। ইসলামের একটা বিলুপ্তপ্রায় মৌলিক বিধানকে আমাদের বংশধারায় চালু করে দিয়ে, অশেষ সদাকায়ে জারিয়ার সুফল ভোগ করতে পারি। সারাজীবন ত্রুটিযুক্ত অসংখ্য কাজের মাঝে, এই একটি কাজ প্রজন্মান্তরে আমাদেরকে বিপুল মর্যাদায় ভূষিত করবে। এছাড়া, পারস্পরিক আলাপ, দেখা সাক্ষাত ও মিল মহব্বতের মধ্য দিয়ে যে সম্পর্কের গোড়াপত্তন হবে, ছোটবড় অসংখ্য জুলুম ও পাপাচারের পথ সেটা বন্ধ করে দেবে। আখিরাতে আল্লাহ্‌র কাছে দেখানোর মতো এর চেয়ে উত্তম আর সহজ আমল আর কয়টা আছে?
-তানভীর আহমাদ সিদ্দিকী।
বন্দর, চট্টগ্রাম।