Wednesday, June 23, 2021

৫৪. বিবাহ বিচ্ছেদের কয়েকটি কারণ: বাঁচতে হলে জানতে হবে Marriage education series

 No photo description available.

বিবাহ বিচ্ছেদের কয়েকটি কারণ: বাঁচতে হলে জানতে হবে
▬▬▬ ◈◉◈▬▬▬
◈ ১) পরকীয়া: স্বামী অথবা স্ত্রীর পক্ষ থেকে পরকীয়া বৈবাহিক জীবনের ইতি টানতে বাধ্য করে। তা জীবনে একটি বারের জন্য হলেও। পরকীয়া মূলত: দাম্পত্য জীবনে বিশ্বাস ঘাতকতার শামিল।
◈ ২) সম্পর্কের অবনতি: দাম্পত্য জীবনে মতবিরোধ ও মনোমালিন্য থাকা অস্বাভাবিক নয়। তবে তাকে বেশী বাড়তে দেয়া যাবে না। তা যদি এমন পর্যায়ে পৌঁছে যে, কেউ কারো সাথে কথা বলছে না তাহলে সমস্যা জটিলতর হয়ে ক্রমান্বয়ে তা বিবাহ বিচ্ছেদ পর্যন্ত গড়ায়।
◈ ৩) শারীরিক বা মানসিক নির্যাতন: এ ক্ষেত্রে সব চেয়ে বড় বিপদ জনক কারণ হল, দৈহিক ভাবে অত্যাচার, মারপিট ও রুক্ষ আচরণ অথবা মানসিকভাবে নির্যাতন তথা অপমান, হেয় প্রতিপন্ন, গালাগালি করা ইত্যাদি।
◈ ৪) দাম্পত্য জীবনের ব্যাপারে বিতৃষ্ণা: দাম্পত্য জীবনে এক ঘেয়েমী ও বিরক্তি ছড়িয়ে পড়া সংসার ভাঙ্গার একটি কারণ। দীর্ঘ দিন ঘর সংসার করার পর যদি দেখা যায়, ভালোবাসার উষ্ণতা শীতল হয়ে পড়েছে এবং পরস্পরের প্রতি আকর্ষণ হারিয়ে ফেলেছে তাহলে পরিণতিতে তা তালাকের দিকে গড়ায়। এ জন্য পারষ্পারিক ভালোবাসার উষ্ণতা ধরে রাখার জন্য বিভিন্ন কৌশল অবলম্বন করা জরুরি।
◈ ৫) মাদকাসক্তি: মাদকাসক্তি দাম্পত্য জীবনকে ধ্বংসের অতল তলে নিয়ে যায়। এর ধ্বংসাত্মক দিক অনেক। যেমন, প্রচুর অর্থ অপচয়, অপর পক্ষের প্রতি অবহেলা প্রদর্শন, শারীরিক নির্যাতন, সন্দেহ জনক অবৈধ সম্পর্ক আর পরিশেষে দাম্পত্যে জীবন ধ্বংস।
◈ ৬) যৌন সমস্যা: সুমধুর দাম্পত্য জীবনের জন্য সুস্থ যৌন মিলন একটি অপরিহার্য উপাদান। যখন স্বামী-স্ত্রী পরিতৃপ্ত যৌন মিলনে ব্যর্থ হয় তখন তাদের মাঝে দূরত্ব বাড়তে থাকে। পরিশেষে ঘুমের ঘর থেকেই দাম্পত্য জীবন সমাপ্তির দিকে এগিয়ে যায়।
আল্লাহ তায়ালা প্রতিটি দম্পতিকে ভাঙ্গনের হাত থেকে রক্ষা করে তাদেরকে একটি সুস্থ, সুন্দর, মধুময়, ও বরকতময় পরিবার গঠন করার তাওফিক দান করুন।
▬▬▬ ◈◉◈▬▬▬
গ্রন্থনায়:
আব্দুল্লাহিল হাদী বিন আব্দুল জলীল
দাঈ, জুবাইল দাওয়াহ এন্ড গাইডেন্স সেন্টার, সৌদি আরব

 

৫৩. প্রশ্ন: বিবাহ পূর্ববর্তী কোন রিলেশনের কথা স্বামী /স্ত্রী কে জানানোর ব্যাপারে ইসলাম কী বলে? Marriage education series

No photo description available.

প্রশ্ন: বিবাহ পূর্ববর্তী কোন রিলেশনের কথা স্বামী /স্ত্রী কে জানানোর ব্যাপারে ইসলাম কী বলে?
▬▬▬▬✪✪✪▬▬▬
উত্তর: বিজ্ঞ আলেমগণ বলেছেন: স্বামী বা স্ত্রীর জন্য তার সঙ্গীর অতীত জীবন নিয়ে প্রশ্ন করা নাজায়েয। অনুরূপভাবে অতীত জীবনের যে পাপাচার থেকে তওবা করে নিয়েছে সেটা স্বামী/স্ত্রীর নিকট প্রকাশ করাও বৈধ নয়।
কারণ এতে দাম্পত্য জীবনে ফাটল সৃষ্টি হতে পারে। অথচ সংসার ভেঙ্গে যাওয়ার ক্ষয় ক্ষতি ব্যক্তি ও সমাজ জীবনে অপরিসীম তা বলার অপেক্ষা রাখে না।
বরং উভয়ের দেখা উচিৎ তার সঙ্গীর বর্তমান অবস্থা। যদি বর্তমান অবস্থা সন্তোষজনক হয় তাহলে পারস্পারিক ভালবাসা ও সদাচরণের সাথে ঘর-সংসার করবে; অন্যথায় তালাকের মাধ্যমে পৃথক হয়ে যাবে।
▪ মনে রাখতে হবে, মানুষ যত বড় অন্যায় করুক না কেন তওবার মাধ্যমে আল্লাহ তাআলা সব অপরাধ সম্পূর্ণরূপে ধুয়ে দেন। তাই কারও অতীত নিয়ে ঘাটাঘাটি করা বৈধ নয় যদি সে তওবা করে নেয়।
▪এ ছাড়া হাদীসে আছে, কোন ব্যক্তি গোপনে পাপ করার পর যদি অন্যের সামনে তা প্রকাশ করে তাহলে সে আল্লাহর নিকট ক্ষমা পাবে না। তাই স্বামী বা স্ত্রী তার সঙ্গীর অতীত জীবনের কোন পাপাচার বা অবৈধ বিষয় সম্পর্কে প্রশ্ন করা বা তা প্রকাশ করা জায়েয নয়।
▪ ইসলামের শিক্ষা হল, কেউ কারো অন্যায়ের কথা জেনে থাকলে তা গোপন করা করবে। কারও নিকট তা প্রকাশ করবে না। তাহলে আল্লাহ তাআলা কিয়ামতের দিন তার দোষ-ত্রুটি ও গুনাহগুলো গোপন রাখবেন।
▪ কেউ যদি গুনাহ করার পর তওবা করে নেয় তাহলে সেটা নিয়ে তাকে দোষারূপ করা বা খোঁচা দেয়া খুবই গহির্ত কাজ। কোন সভ্য মানুষের জন্য তা শোভনীয় নয়।
আল্লাহ তাআলা সব চেয়ে ভালো জানেন।
▬▬▬▬✪✪✪▬▬▬
আব্দুল্লাহিল হাদী বিন আব্দুল জলীল।
(লিসান্স, মদীনা ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়, সউদী আরব)
দাঈ, জুবাইল দাওয়াহ এন্ড গাইডেন্স সেন্টার, সউদী আরব।