Wednesday, April 9, 2025

মহান_রবের_আশ্রয়ে (১১ নং পর্ব)

নামাজের পরে একটি চমৎকার দু‘আ পড়ার অভ্যাস করতে পারেন। দু‘আটি আমরা শব্দে শব্দে অর্থসহ উপস্থাপন করছি। 
.
প্রথমে দু'আটির প্রেক্ষাপট জেনে নেওয়া যাক; তাহলে আমল করতে আগ্রহ বাড়বে ইনশাআল্লাহ্।
.
রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের অত্যন্ত প্রিয় একজন সাহাবি ছিলেন মু'আয ইবনু জাবাল (রা.)। তাঁকে তিনি ইয়ামানে ইমাম ও শাসক হিসেবে নিয়োগ দিয়েছিলেন। সেই মু'আয (রা.) বলেন, (একদিন) রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম আমার হাত ধরে বলেন, ‘‘মু'আয! আমি তোমাকে ভালোবাসি।... মু'আয! আমি তোমাকে ওসিয়ত করছি—প্রত্যেক সালাতের পর এ দু'আটি বলা কখনো বাদ দিও না।’’ (দু'আটি হলো)—
.
اللّٰهُمَّ أَعِنِّيْ عَلٰى ذِكْرِكَ، وَشُكْرِكَ، وَحُسْنِ عِبَادَتِكَ.
[মোটামুটি উচ্চারণ: আল্লাহুম্মা আ‘ইন্নি '
‘আলা যিকরিকা, ওয়া শুকরিকা, ওয়া ‘হুসনি ‘ইবাদাতিকা (শুধু বাংলা উচ্চারণ দেখে শিখবেন না। তাহলে নিশ্চিতভাবে ভুল শিখতে হবে)]
.
[অর্থ: হে আল্লাহ! আপনি আমাকে সাহায্য করুন—আপনার যিকর করতে, আপনার শুকরিয়া আদায় করতে এবং উত্তমরূপে আপনার ইবাদত করতে।’’ 
[আবু দাউদ: ১৫২২, হাকিম: ৬৭৭, সহিহ আত-তারগিব: ২/২১৯; হাদিসটি সহিহ]
.
শব্দে শব্দে মুখস্থ করে নিতে পারেন—
.
اللّٰهُمَّ আল্লাহুম্মা 
[হে আল্লাহ!]  
.
أَعِنِّيْ আ‘ইন্নি 
[আমাকে সাহায্য করুন]
.
عَلٰى আলা 
[উপরে]
.
ذِكْرِكَ، যিকরিকা 
[আপনার যিকর (করতে)]
.
وَشُكْرِكَ، ওয়া শুকরিকা 
[আপনার শুকরিয়া (আদায় করতে)]
.
وَحُسْنِ ওয়া হুসনি
[এবং উত্তম (ভাবে)]
.
عِبَادَتِكَ. ইবাদাতিকা 
[আপনার ইবাদত (করতে)]
.
প্রথমত, হাদিসটির বর্ণনা খুবই সুন্দর। নবীজি অত্যন্ত স্নেহ করে মু'আয (রা.)-কে এই সুন্দর দু'আটি শিখিয়েছেন।
দ্বিতীয়ত, তিনি এটা ওসিয়ত করেছেন—নামাযের পরে পড়তে। সাধারণ উপদেশ এবং ওসিয়তের মধ্যে পার্থক্য অনেক। মানুষ খুব গুরুত্বপূর্ণ ব্যাপারেই কেবল ওসিয়ত করে থাকে।
তৃতীয়ত, দু'আটির অর্থও খুবই সুন্দর ও ব্যাপক—গুরুত্বপূর্ণ তিনটি বিষয়ের চাওয়া।
চতুর্থত, এটি শুধু প্রত্যেক ফরজ নামাজের পরই নয়, নামাজের সিজদায়, সালাম ফেরানোর পূর্বে এবং অন্যান্য যেকোনো দু‘আর মধ্যে পড়া যাবে। তবে, সারাজীবন রেগুলার আমল করতে পারেন কেবল ফরজ নামাজের পর। আর অন্যান্য ক্ষেত্রে পড়লে মাঝেমধ্যে ছেড়ে দেবেন আবার পড়বেন। 
.
#আল্লাহর_নিরাপত্তায়
#মহান_রবের_আশ্রয়ে (১১ নং পর্ব)
এই সিরিজ চলবে ইনশাআল্লাহ্। পূর্বের ১০ টি পর্বের লিংক কমেন্টে একত্রে দেওয়া হলো। পড়ে নিতে পারেন।
.
#Tasbeeh

Tuesday, April 8, 2025

মানিসক অসুস্থতায় মায়ের অভিশাপ

মানিসক অসুস্থতায় মায়ের অভিশাপ
আপনার মা যদি মানসিকভাবে অসুস্থ হন ও এমন অবস্থায় আপনাকে বদ দুয়া গালি দেন , তবে আপনার কর্তব্য হলো— যেন তাঁর রাগ, বকাঝকা বা অন্যায্য আচরণকে খারাপভাবে গ্রহণ না করেন এবং সবসময় ধৈর্যের সঙ্গে সহ্য করেন। কখনো তাঁর সঙ্গে তর্কে জড়ানো বা দুর্ব্যবহার করা থেকে সম্পূর্ণভাবে বিরত থাকবেন। বরং নিয়মিতভাবে তাঁর জন্য আল্লাহ তাআলার দরবারে সুস্থতা ও আরোগ্য কামনা করবেন।

যদি আপনার মা মানসিক অসুস্থতার কারণে অহেতুক রাগ করেন বা অভিশাপ দেন, তবে ইনশাআল্লাহ আপনার কোনো ক্ষতি হবে না—যতক্ষণ আপনি চুপ থেকে সহ্য করেন এবং কোনো অসভ্যতা না করেন। এমনকি অন্তরেও যেন তাঁর প্রতি কোনো রকম বিরক্তি বা ঘৃণা না আসে। বরং আন্তরিকতার সঙ্গে তাঁর সেবা করুন ও দোয়া করুন, যেমন তিনি আপনার শৈশবে কষ্ট সহ্য করে আপনাকে লালন-পালন করেছেন।

তবে যদি ভুলবশত কখনো কোনো ধরনের অসভ্যতা বা অবমাননাকর আচরণ হয়ে যায়, তাহলে সঙ্গে সঙ্গে তাঁর কাছে ক্ষমা চেয়ে মন জয় করে নিন।

একটি হাদীসে এসেছে—একজন ব্যক্তি রাসূলুল্লাহ ﷺ–এর কাছে এসে আরয করলেন: “আমার বাবা-মা বার্ধক্যে পৌঁছেছেন, আমি তাঁদের সেই রকম সেবা করছি যেভাবে তাঁরা আমার শৈশবে করতেন। তাহলে কি আমি তাঁদের হক আদায় করে ফেললাম?” রাসূলুল্লাহ ﷺ বললেন: “না, তুমি তাঁদের হক আদায় করো নি; কারণ, তাঁরা তোমার জন্য ভালোবাসা ও বেঁচে থাকার কামনায় তোমার সেবা করতেন, আর তুমি তাঁদের মৃত্যুর আশঙ্কা মনে রেখে সেবা করছো।”