Sunday, June 10, 2012

ব্ল্যাক ম্যাজিক [Small Tale -4]





[ঘটনা-২]
কিছুদিন পর আবার বন্ধুটির ফোন।।বলল,তোর গ্রামের বাড়ি নান্দাইলে না??????হুম,কেন ,কি হইসে??নাওরীর কুদ্দুস কবিরাজ এর নাম শুনসস???আমি উনার নাম আগে শুনিনাই।
আমি নাওরী যামু,তোর যাওয়াই লাগব।কি আর করা গেলাম।নাওরী জায়গাটা আমার গ্রামের বাড়ি থেকে খুব দূরেনা।হঠাত কাওকে না জানিয়ে গ্রামে আসছি ব্যপারটা নিজের কাছেই খারাপ লাগছে।তাই আত্নগোপনের মতই ছিলাম।কুদ্দুস মিয়ার বাড়িতে উঠলাম।একটা টিনের ঘর,একটা ছনের ঘর,আরেক টা রান্নাঘর।বাড়ির উঠোন টা বেশ বড়ই।লোকমুখে শুনলাম উনি তাবিজ করে মানুষ বশ করায়।অনেককে মেরেও ফেলেন।বন্ধুকে বলেছিলাম,এইকাজ গুলো কুফরী।ধর্ম নিয়ে অনেক জ্ঞানই দিয়েছি।কিন্তুফলাফল শুন্য।দেখলাম কুদ্দুস মিয়া উঠোনে বসেই সবার সমস্যা সমাধান করেন।তখন রাত ৮টা।আমাদের কে বলল,আপনাদের খাবার দেয়া হয়েছে ওই ঘরে।খেয়ে বিশ্রাম করেন।আমি আসছি।পুটি মাছের ঝোল,লাল শাক আর ডাল দেয়া হয়েছে,সাথে মোটা চালের ভাত।।খেয়ে বসে আছি।।উনি আসল।বলল,উঠোনে আসেন।গেলাম,বসলা ম।উনি সিগেরেট ধরিয়ে সমস্যা জানতে চাইলেন।সব বলা হল।সব শুনে উনি বললেন,মেয়ের বাপকেতাবিজ করা লাগবে।ফ্রেণ্ড বলল করেন।ফ্রেণ্ড এর মাথা থেকে একটা চুল ছিড়ল।কয়েকটা বই আনল।একটা বই এর নাম আমারস্পষ্ট মনে আছে যার নাম তাবিজ করার ৩৬০টি উপায়।হারিকেন এর আলোয় তিনি বই ঘাটছিলেন আর আমি তাকে খেয়াল করছিলাম।আমার মামারাএলাকায় অনেক সম্ভ্রান্ত।তাদে র পরিচয় দেয়ার পর খাতির টা একটু বেড়ে গেল বলেই মনে হয়।উনাকেজিজ্ঞেস করলাম তাবিজে কাজ হয় কিনা।উনি বললেন আলবৎ হয়।তাবিজে কি মানুষ মারা যায়?উনি বললেন,মানুষ মারাটাই সহজ।প্রথমে বেদ মারা হয়।লোকটা বমি করে।এ অবস্থা অনেক দিন চলে।একসময় মৃত্যু নিশ্চিত।।আমি জিজ্ঞেস করলাম বুঝতে পারে না তাবিজ কে করল??উনি ফিক করে হাসল।আবার জিজ্ঞেস করলাম,ডাক্তার ভাল করতে পারে না???উনি বললেন,কোন মতেই না।একমাত্র আমার মত এ লাইনে যারা আছে,তারাই এ তাবিজ ভাঙ্গার ক্ষমতা রাখেন।আমার থেকে আরো অনেকেই আছে যারা আরো ভাল কাজ জানে।রাত তখন ২টা বাজে।উনার মোবাইলে একটা ফোন।সিলেট থেকে একজন করেছে কাউকে তাবিজ করতে।কথায় বুঝতে পারলাম।আমি জিজ্ঞেস করলাম তাবিজ করতে কি কি লাগে??উনি বললেন,খুবই সহজ।যাকে তাবিজ করতে হবে তার নাম,তার বাবার নাম।তারপর একটা চুল দিয়ে একটা মন্ত্র পড়ে মাটির তৈরীএকটা পুতুল সেই চুল দিয়ে বেধে রাখলেই হয়।।তাবিজ ভাঙ্গার জন্যও বিভিন্ন পদ্ধতি আছে।।তিনি আমাদেরকেকিছু কাজ দিলেন।মেয়ের বাড়ির সামনে মেয়ের একটুকরো কাপড় পুড়াতে হবে।বাড়ি টাকে কেন্দ্র করা চার পাক ঘুরতে হবে।বলা বাহুল্য,বন্ধুটা র কাছে মেয়েটার কিছু কাপড় ছিল।কুদ্দুস মিয়া বললেন,কিছু স্বর্ণের কাজ আছে।খরচ বেশী পড়বে।আমি ফ্রেণ্ডকে না করেছিলাম।সে আমার কথা শুনেনাই।ভার্সিট ি তে ভর্তির নাম করে আমার রিসিট দেখিয়ে বাসা থেকে অনেক টাকা নেয়।তার কাজ হয়েছে কিনা সে ব্যপারে কিছুবলব না।কিছু জরূরী কথা বলছি।
এ সমস্ত কালো যাদু,তাবিজ,তন্ত ্র মন্ত্রে কাজ অবশ্যই হতে পারে।।কিন্তু কতিপয় শয়তানরাই এ পথকে বেছে নেয়।এর পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া যে কি ভয়াবহ তাকবিরাজ,তান্ত্রি করা খুব অচিরেই বুঝতে পারে।একটা কথা শুনেছিলাম,সুরা ফাতিহা উলটো করে পরে কোন গাছে ফু দিলে গাছটা নাকি ২ভাগ হয়ে যায়।পরিণামে লোকটি কাফির হয়ে যায়।যেহেতু আমার কাফির হওয়ার কোন ইচ্ছা নাই,তাই আমি কখোনই এই পাপ কাজ করার দুসাহস দেখাইনি নাই।কথাটা নানার কাছ থেকে শোনা।কুরআন শরীফের সুরা উলটা পড়ে,আরো বিভিন্ন হাদীস কালাম, শয়তানের পথ ধরে কালো যাদু চর্চা কর তারা মানুষের ক্ষতি করে নিজের পকেট ভরে।বাজারে তো এ সমস্ত বই ওপাওয়া যায়।নীলক্ষেত গিয়ে খোজ করলেই পাওয়া যায়।এসকল তান্ত্রিক লোকেরা অত্যন্ত ভয়ংকর।নিজের মনুষ্যত্ব কে শয়তানের কাছে বেচে শয়তানের কাছ থেকে অনিষ্টের সার্টিফিকেট কিনে এ দলের লোকেরা।এ দুনিয়া তো কর্মক্ষেত্র।বেত ন পরের দুনিয়ায় পাবেন।আমরা যেন কখনোই এসব কালোযাদু চর্চা না করি এবং কোন তান্ত্রিক লোকের কাছে ধর্ণা না দেই।কোন কিছু দেওয়ার মালিক একমাত্র তিনি।অনেকেই বলেন,এই মেয়েটারে তাবিজ করমু।আমাকে দাম দেয় না।।আমার স্বামী আমাকে ভালবাসে না।ওরে তাবিজ করব।।চাইলে তো আল্লাহ কেও পাওয়া যায়।উনার কাছেই চান।এসব ফন্দি ফিকিরি মোটেও কল্যান বয়ে আনেনা।।বয়ে আনলেও আপনি আর মুমিন থাকছেন না।আজকাল টিভি তে অনেক বিজ্ঞাপন দেখি,ইজমা পাথর,জাপানি ব্রেস্লেট...আরো অনেক কিছুই...।এগুলোর কর্মক্ষমতা নিয়ে আমার যথেষ্ট প্রশ্ন আছে।।
যদি এ প্রতিমূলক উপস্থাপন আপনাদের ভাল লাগে,তাহলে অবশ্যি লাইক দিবেন।আপনাদেরলাইক থেকে অনুপ্রাণিত হয়েই আমরা লেখতে বসি।।


No comments:

Post a Comment