**এক্সিডেন্ট
(ভৌতিক
গল্প)**
লিখেছেন:
এম
এস ই শাহীন....
কয়েকদিন
থেকে নানা ব্যস্ততার কারনে
ঘটনাটি শেয়ার করতে পারিনি।
তো যাই হোক,
আমার
বাড়ী থেকে দক্ষিনপূর্ব কোণে
কালসারডাড়া নামক একটি স্থানে
মাঝে মধ্যে যেতে হয় আমার
ব্যবসায়িক কারনে । আমার বাড়ী
থেকে ঐ যায়গার দূরত্ব মাত্র
১০ কিঃমিঃ । আমি অবশ্য বাইকটা
নিয়েই চলাচল করি সেখানে ।
কয়েকদিন আগেও গিয়েছিলাম সেই
যায়গায় । নানা কাজ সেরে সেদিন
বাসায় ফিরতে ফিরতে রাত শোয়া
এগারোটা বেজে গেল । মনের মধ্যে
খানিকটা ভয় ভয় কাজ করছিল । একঃ
চোর ডাকাতের দুইঃ জ্বিন ভূতের
। ঐ যায়গায় যাওয়ার পথে অনেক
পুরাতন কবরস্থান সংলগ্ন একটি
ঈদগাহ মাঠ পড়ে । অবশ্য এই ঈদগাহ
মাঠ ও কবরস্থানের আশে পাশে
কোন জনবসতি নেই । বিশাল বিস্তীর্ন
পাথারের মাঝে এটি অবস্থিত ।
এ যায়গাটি নিয়ে নানাকল্প
কাহীনিও ছড়িয়ে আছে মানুষের
মাঝে । এখানে নাকি অনেকেই অনেক
ভৌতিক ঘটনার সম্মুখিন হয়েছেন
। সন্ধ্যার পর তাই এই রাস্তা
দিয়ে মানুষের চলাচল কম । চলাচল
করলেও দলবেধে বা সাথী ছাড়া
কেউ করেনা । । যদিও আমি এগুলোকে
তেমন একটা গুরুত্ব দেইনা ।
হয়তঃ মনে করছেন আমি খুব সাহসী,
আসলে
তা নয় একটু একটু ভয়ও কিন্তু
করি । বাড়ী ফিরছিলাম একা একাই।
ঘড়ির কাঁটা রাত ১১:১৫
। যথারীতি ৫০-৬০
কিঃমিঃ বেগে ড্রাইভ করছি ।
জনমানবহীন রাস্তা,চলছি
আমি একা,
রাস্তার
দু ধারে লাগানো মেহগনি গাছের
সারি । রাতের বেলা এমন রাস্তা
দিয়ে যেতে ধরলে কার না গাঁ
ছমছম করে ।
যখন
ভৌতিক যায়গা থেকে মাত্র ১
কিঃমি দূরে ঠিক তখনই আমার
শরীরটা অজানা এক ভয়ে শিউরে
উঠলো । যায়গাটি তাড়াতাড়ি পার
হওয়ার জন্য বাইকের গতি বাড়ালাম
। প্রায় ৮০ কিঃমিঃ বেগে চলছে
,
মিটারে
লক্ষ্য করলাম । এখন আমি যায়গাটির
ঠিক ১৫-২০
গজ দূরে । কলিজাটা আরেকবার
মোচড় দিয়ে উঠলো । কবরস্থান
ক্রস করছি ঠিক এমন সময় কোন
কারন ছাড়াই গাড়ীর হেডলাইট অফ
হয়ে গেল ।কথায় আছে যেখানে
বাঘের ভয় সেখানেই রাত হয় ।
আমার ক্ষেত্রেও তাই ঘটলো ।
চলন্ত গাড়ীর এভাবে হেডলাইট
অফ হওয়াতে আমি নিজের উপর আস্থা
হারালাম । ঘুঁটঘুঁটে অন্ধকার
চারিদিকে । কিছুই বুঝার উপায়
নেই । মাত্র ১ হাত দূরেও কিছু
দেখা যাচ্ছেনা । আমি কিংকর্তব্যবিমূঢ়
। প্রচন্ড ভয়ের পাশাপাশি
জীবনের প্রথম এক্সিডেন্ট
করতে যাচ্ছি তাও আবার জনমানবহীন
এক ভুতুড়ে যায়গায় । এখানে
এক্সিডেন্ট করে আহত হয়ে
সংজ্ঞাহীন অবস্থায় সারারাত
পড়ে থাকলেও উদ্ধার করার কাউকে
পাওয়া যাবেনা । এমতাবস্তায়
একজন ড্রাইভারের যা করনীয়
ছিল আমিও ঠিক তাই করলাম । দ্রুত
কড়া ব্রেক করলাম । এত স্পীডের
গাড়ী ব্রেক করতে করতে খানিকটা
পথ চলে গেল । ঠাস করে একটা শব্দ
হলো আর একটা ঝাকুনি দিয়ে সাথে
সাথেই গাড়ীর স্টার্ট বন্ধ
হলো । একটা মেহগনি গাছের সাথে
আচমকা ধাক্কা খেয়ে থেমে গেলাম
। নাহ্ পড়ে যাইনি । গাড়ীর উপরেই
আছি । আমি নিজেকে পাঁকা রাস্তা
ও সাইডের কাঁচা যায়গা পার হয়ে
মেহগনি গাছের গোড়ায় আবিস্কার
করলাম রাস্তার একদম ঢালু
কিনারে । হাত,
পা,
শরীর
থরথর করে কাঁপতে লাগলো । সব
যেন অবশ হয়ে গেছে । কোন দিকে
তাকাতেও পারছিনা ভয়ে । তবুও
বাঁচার আশা ছিল মনে । এমন যায়গায়
বেশিক্ষন থাকাটাও নিরাপদ না
ভেবে দ্রুত গাড়ী নিউটাল করলাম
। গাড়ী থেকে নেমে ওটাকে ঠেলে
পাকায় তুললাম । এরপর কোন দিকে
না তাকিয়ে তড়িঘড়ি করে গাড়ীতে
উঠে বসলাম । ভেবেছিলাম গাড়ী
হয়তো স্টার্ট হবে না । কিন্তু
কি আশ্চর্য্য প্রথম চেষ্টায়
সফল । মানে গাড়ী স্টার্ট হয়েছে
আর হেডলাইটও জ্বলছে । তারমানে
হেডলাইট নষ্ট হয়নি ?
তাহলে
হঠাত্ এরকম হেডলাইট অফ হলো
কেন ?
এসব
নিয়ে চিন্তা করার সময় নেই ।
আলো জ্বলায় খুশিতে মনটা নেচে
উঠলো । আল্লাহর দরবারে শুকরিয়া
জানালাম । তিনি আমাকে তার
কুদরতি ক্ষমতায় এতবড় একটা
দূর্ঘটনা থেকে রক্ষা করেছেন
। হয়তঃ আপনাদের মাঝে ফিরে আসবো
বলে.
. . . .
No comments:
Post a Comment