Monday, June 11, 2012

চতুরঙ্গ - তৃতীয় পর্ব [Ghost Stories - p3 ]

চতুরঙ্গ [তৃতীয় পর্ব]






মোঃ ফরহাদ চৌধুরী শিহাব

[ বিঃদ্রঃ বাকী পর্বের লিঙ্ক এই পর্বের শেষে দেওয়া আছে ]

আমি চোখের পানি মুছে হ্যান্ড ব্যাগ থেকে একটা হলুদাভ কাগজ বের করে বাড়িয়ে ধরলাম, “ আমিযখন ছোট ছিলাম আপনাকে প্রায়ই চিঠিতে লিখতাম আমি বড় হয়ে আপনার মত ডাক্তার হবো, বই লিখতে না পারি আপনার সাথে সাথে থাকবো। আপনার লেখাপান্ডুলিপি সবার আগে পড়বো। আর হাসপাতালে আপনার সাথেই প্র্যাক্টিস করবো। আপনি বহুদিন পর একটা চিঠি পাঠিয়েছিলেন। কি লিখেছিলেন জানেন?”
বেশ অবাক হয়ে ঘুরে তাকালেন ডাঃ এমরানআমার দিকে। আমার হাতে ধরা কাগজটার দিকে কৌতুহলি চোখে তাকালেন।





আপনি লিখেছিলেন মা, দোয়া করি তুমিবড় হয়ে অনেক বড় ডাক্তার হও। কথা দিলাম তোমার সাথে কাজ না করতে পারি তোমার রুগী অবশ্যই হব!পড়ে শোনালাম চোখের পানিমুছতে মুছতে। এভাবে যে চোখে পানি চলে আসবে ভাবিনি। খানিকটা অপ্রস্তুত হয়ে গেলাম ওনার সামনে।
ডাঃ এমরান তাঁর জট পাঁকা দাড়িতে আঙ্গুল বুলালেন বিভ্রান্ত মুখে, বিড়বিড় করলেন, “ আমি লিখেছিলাম? কবে?……… মনে পড়ছে না তো……”
চোখের পানি মুছে জেদ চেপে ফাইলটা তুলে নিলাম, “ মনে থাকবে কিভাবে? বয়স তো আর কম হয়নি আপনার। তার ওপর লাখ লাখপাঠক পাঠিকা। আমার কথা আর মনে থাকে?”আমি ব্যাগ কাঁধে নিয়ে কোনো দিকে না তাকিয়ে বের হয়ে এলাম ডাঃ এমরানের বিশাল দূর্গ রুপি মিউজিয়াম থেকে। সন্ধ্যা হয়ে এসেছে প্রায়। ট্যাক্সি করে বাসায় ফিরলাম। সারাপথ একটু পর পর আপনা আপনি দু চোখ ভরে যেতে থাকল পানিতে। বোধ হয় খুব বেশি আশা করেছিলাম।সেটা ভেঙ্গে যাওয়ায় নিজেকে সামলাতে খুব কষ্ট হচ্ছে।
ট্যাক্সি থেকে নেমে যখনভাড়া দিচ্ছিলাম, হাত থেকে ফাইলটা পড়ে গেল বেখেয়ালে। লাইট পোষ্টের আলোয় তাড়াতাড়ি ছড়িয়ে পড়া কাগজ গুলো তুলতে লাগলাম। কাগজ তুলতে গিয়ে অবাক হয়ে আবিষ্কার করলাম সেখানে হলুদ একটা খাম; ভেতরে চিঠি! আমার না এটা, আমি রাখিনি। ল্যাম্প পোষ্টের পোঁকা ওড়া আলোতে চিঠিটা খাম থেকে বের করতেই হতভম্ব হয়ে গেলাম। গুটিগুটি হাতের লেখা
নোভেরা,
আশা করছি সকাল ৯টা থেকেরাত ৮টা পর্যন্ত দীর্ঘ চাকরিটা করতে গিয়ে হাফিয়ে উঠবে না। আমি সময়ানুবর্তিতা পছন্দ করি।
ডাঃ এমরান চৌধুরী
কখন দিলেন এটা? সারাক্ষণ তো হুইল চেয়ারেই ছিলেন আমার সামনে! বিমূঢ়ের মত লাইটপোষ্টের নিচে দাঁড়িয়ে রইলাম।

*******

No comments:

Post a Comment