Thursday, June 17, 2021

২৬. নির্জনে স্বামী-স্ত্রীর মাঝে পর্দা কতটুকু? Marriage education series

 No photo description available.

 

নির্জনে স্বামী-স্ত্রীর মাঝে পর্দা কতটুকু?
▬▬▬◄❖►▬▬▬
প্রশ্ন: যখন স্বামী-স্ত্রী নির্জনে সময় কাটায় তখন তাদের মাঝে কতটা পর্দা রক্ষা করা জরুরি? (একান্ত ঘনিষ্ঠ সময় ছাড়া বাকি সময়গুলোতে)। কেননা আমাদের আশে পাশে সর্বদা জিন ও ফেরেশতাগণ ঘুরা ফেরা করে।
উত্তর:
স্বামী-স্ত্রীর মাঝে কোনও পর্দা নেই। আল্লাহ তাআলা স্বামী-স্ত্রীকে পরস্পরের জন্য 'পোশাক' বলে অভিহিত করেছেন এবং একে অপরের জন্য সম্পূর্ণ হালাল করেছেন। সুতরাং তারা নির্জনে যেভাবে খুশি একে অপরের সামনে থাকতে পারে এবং আনন্দ-বিনোদন করতে পারে।
আল্লাহ তাআলা বলেন:
 
هُنَّ لِبَاسٌ لَّكُمْ وَأَنتُمْ لِبَاسٌ لَّهُنَّ
 
"তারা (স্ত্রীরা) তোমাদের জন্য পোশাক এবং তোমরা তাদের জন্য পোশাক।" (সূরা বাকারা: ১৮৬)
 
❖ তাফসিরে কুরতুবিতে এর ব্যাখ্যায় বলা হয়েছে:
"পোশাক মূলত: কাপড়। কিন্তু স্বামী-স্ত্রী একে অপরের জন্য পোশাক বলা হয়েছে এ জন্য যে, দেহের সাথে দেহের সংযোগ ঘটে, একে অপরের সাথে মিলিত হয় এবং পোশাকের মত একে অপরের সঙ্গে থাকে।" (সূরা বাকারার ১৮৬ নং আয়াতের ব্যাখ্যা, তাফসিরে কুরতুবী)
❖ এ ছাড়াও হাদিসে বর্ণিত হয়েছে:
 
ﻋَﻦْ ﺑَﻬْﺰِ ﺑْﻦِ ﺣَﻜِﻴﻢٍ ﻋَﻦْ ﺃَﺑِﻴﻪِ ﻋَﻦْ ﺟَﺪِّﻩِ ﻗَﺎﻝَ ﻗُﻠْﺖُ ﻳَﺎ ﺭَﺳُﻮﻝَ ﺍﻟﻠﻪِ ﻋَﻮْﺭَﺍﺗُﻨَﺎ ﻣَﺎ ﻧَﺄْﺗِﻰ ﻣِﻨْﻬَﺎ ﻭَﻣَﺎ ﻧَﺬَﺭُ ﻗَﺎﻝَ ﺍﺣْﻔَﻆْ ﻋَﻮْﺭَﺗَﻚَ ﺇِﻻَّ ﻣِﻦْ ﺯَﻭْﺟَﺘِﻚَ ﺃَﻭْ ﻣَﺎ ﻣَﻠَﻜَﺖْ ﻳَﻤِﻴﻨُﻚَ ﻗَﺎﻝَ ﻗُﻠْﺖُ ﻳَﺎ ﺭَﺳُﻮﻝَ ﺍﻟﻠﻪِ ﺇِﺫَﺍ ﻛَﺎﻥَ ﺍﻟْﻘَﻮْﻡُ ﺑَﻌْﻀُﻬُﻢْ ﻓِﻰ ﺑَﻌْﺾٍ ﻗَﺎﻝَ ﺇِﻥِ ﺍﺳْﺘَﻄَﻌْﺖَ ﺃَﻥْ ﻻَ ﻳَﺮَﻳَﻨَّﻬَﺎ ﺃَﺣَﺪٌ ﻓَﻼَ ﻳَﺮَﻳَﻨَّﻬَﺎ ﻗَﺎﻝَ ﻗُﻠْﺖُ ﻳَﺎ ﺭَﺳُﻮﻝَ ﺍﻟﻠﻪِ ﺇِﺫَﺍ ﻛَﺎﻥَ ﺃَﺣَﺪُﻧَﺎ ﺧَﺎﻟِﻴًﺎ ﻗَﺎﻝَ ﺍﻟﻠﻪُ ﺃَﺣَﻖُّ ﺃَﻥْ ﻳُﺴْﺘَﺤْﻴَﺎ ﻣِﻨْﻪُ ﻣِﻦَ ﺍﻟﻨَّﺎﺱِ .
 
বাহয বিন হাকিম তার পিতা হ’তে তিনি তার দাদা হ’তে বর্ণনা করেন। তিনি বলেন, আমি বললাম, হে আল্লাহর রাসূল, আমাদের আবরণীয় অঙ্গসমূহ কার সামনে আবৃত রাখব এবং কার সামনে অনাবৃত করতে পারি?
তিনি বললেন: "তোমার স্ত্রী ও দাসী (*) ব্যতীত সকলের সামনে তা আবৃত রাখ।"
কেউ যদি বাড়িতে প্রবেশের সময় সালাম দেয়, প্রবেশের দুআ পাঠ করে, সকাল-সন্ধ্যার তাসবীহ ও জিকিরগুলো পড়ে, ঘরে সূরা বাকারা তিলাওয়াত করে এবং নফল সালাত আদায় করে তাহলে জিন-শয়তান বাড়িতে প্রবেশ করতে পারবে না এবং কোনো ক্ষতিও করতে পারবে না ইনশাআল্লাহ।
আল্লাহু আলাম।
--------------------------
ফুটনোট:
(*) উল্লেখিত হাদিসে 'দাসী' বলতে কাকে বুঝানো হয়েছে?
উত্তর:
ইসলামে 'দাসী' বলতে বুঝানো হয়, মুসলিম ও কাফেরদের মাঝে সংঘটিত যুদ্ধে বিজয়ী মুসলিমদের হাতে যুদ্ধবন্দী কাফের নারীগণ।
মুসলিম সেনাপতি সে সকল যুদ্ধবন্দি নারীদেরকে যোদ্ধাদের মধ্যে বণ্টন করবেন। অত:পর তারা তাদের বাসস্থান ও ভরন-পোষণের ব্যবস্থা করবে এবং তাদের এক হায়েয অতিবাহিত হওয়ার পর তাদের সাথে সহবাস করতে পারবে। এ ক্ষেত্রে বিয়ের প্রয়োজন নাই।
ক্রয় করার মাধ্যমেও মালিক দাসীর মালিক হওয়া জায়েয আছে।
আল্লাহ তাআলা সফলকাম মুমিনের বৈশিষ্ট বর্ণনা করতে গিয়ে বলেন:
 
وَالَّذِينَ هُمْ لِفُرُوجِهِمْ حَافِظُونَ إِلَّا عَلَىٰ أَزْوَاجِهِمْ أَوْ مَا مَلَكَتْ أَيْمَانُهُمْ فَإِنَّهُمْ غَيْرُ مَلُومِينَ
 
"যারা নিজেদের যৌনাঙ্গকে সংযত রাখে। তবে তাদের স্ত্রী ও মালিকানাভুক্ত দাসীদের ক্ষেত্রে সংযত না রাখলে তারা তিরস্কৃত হবে না।" সূরা মুমিনূন: ৫ ও ৬)
উল্লেখ্য যে, এ সকল দাসীরা স্ত্রী মর্যাদা না পেলেও তাদের প্রতি করণীয় ও বর্জনীয় সম্পর্কে ইসলামে চমৎকার নির্দেশনা রয়েছে।
কুরআন ও হাদিসে দাস-দাসী মুক্তির ব্যাপারে যথেষ্ট উৎসাহিত করা হয়েছে। এমনকি ইসলামের বিভিন্ন বিধি-বিধানের কাফফারা হিসেবে (যেমন: মানত ও কসম ভঙ্গ, স্ত্রীর সহবাসের মাধ্যমে রমজান মাসে রোজা ভঙ্গ ইত্যাদি ক্ষেত্রে) দাস-দাসী মুক্তির বিষয়টিকে জুড়ে দেওয়া হয়েছে যেন তাদের মুক্তির পথ সুগম হয়।
বর্তমান যুগে দাস-দাসীর অস্তিত্ব নেই।
 
▬▬▬◄❖►▬▬▬
উত্তর প্রদানে:
আব্দুল্লাহিল হাদী বিন আব্দুল জলীল
জুবাইল, সৌদি আরব
fb id: AbdullaahilHadi

 

No comments:

Post a Comment