▌প্রশ্নোত্তরে 'আক্বীদাহ ও মানহাজ [১ম পর্ব]
·
রচয়িতা: শাইখ 'আব্দুল 'আযীয বিন মুহাম্মাদ আশ-শা‘আলান (হাফিযাহুল্লাহ)
·
অনুবাদকের কথা:
‘আমরা তখন টগবগে যুবক। থাকতাম নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের কাছে। কুরআন শেখার আগে আমরা ইমান শিখে নিলাম। এরপর শেখলাম কুরআন। এতে আমাদের ইমান বেড়ে গেল।’ কথাগুলো বলেছেন সাহাবি জুনদুব রাদিয়াল্লাহু আনহু (ইবনু মাজাহ, হা/৬১)। উম্মাহর শ্রেষ্ঠ মানুষদের শেখার শুরুটা ছিল ইমান। ইমান, আক্বীদাহ, তাওহীদ—সকল শিক্ষার মূল। ব্যক্তি ইসলামের গণ্ডির মধ্যে আছে কিনা তা নিরূপিত হয় তার ইমান-আক্বীদাহর মাধ্যমে।
নবিজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সেজন্যই বলেছিলেন, ‘তোমার কাছে যদি উহুদ পাহাড় পরিমাণ সোনা থাকে, আর তুমি ওই তাবৎ সম্পদ আল্লাহর রাস্তায় বিলিয়ে দাও, তবুও তিনি সেই দান কবুল করবেন না, যে পর্যন্ত না তুমি পূর্ণরূপে তাকদিরের প্রতি ইমান আনছ (ইবনু মাজাহ, হা/৭১)।’ মৌলিক বিশ্বাসে গলদ থাকলে, আর ইবাদতের মধ্যে শির্ক ঢুকলে পর্বততুল্য আমল করেও কাজ হবে না। সব হয়ে যাবে পণ্ড, নিস্ফল, ব্যর্থ (সুরা যুমার: ৬৫; ফুরকান: ২৩)।
এজন্য নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের প্রধান দাওয়াত ছিল আক্বীদাহ ও তাওহীদের দাওয়াত। রিসালাতের শুরু থেকে নিয়ে শেষ পর্যন্ত ছিল স্রেফ তাওহীদ, তাওহীদ, আর তাওহীদ। সমরাঙ্গন থেকে মসজিদের দারস অবধি সবই ছিল তাওহীদে ভরপুর। তিনি মুআয বিন জাবাল রাদিয়াল্লাহু আনহুকে ইয়েমেনে পাঠাচ্ছেন সেখানকার প্রাদেশিক শাসনকর্তা হিসেবে। সেসময় নির্দেশ করছেন, ‘তুমি যাচ্ছ একটি কিতাবধারী সম্প্রদায়ের কাছে; সুতরাং সর্বপ্রথম তাদের প্রতি তোমার দাওয়াত যেন হয় আল্লাহর তাওহীদের (সহিহ বুখারি, হা/৪৩৪৭; সহিহ মুসলিম, হা/১৯)।’
আক্বীদাহ-মানহাজ শেখা এবং তা প্রচার করার গুরুত্ব অনেক বেশি। কারণ এ যে মুক্তিপ্রাপ্ত দলে থাকা-না-থাকার প্রশ্ন, ব্যক্তির মুসলিম থাকা-না-থাকার প্রশ্ন। তাই আহলুস সুন্নাহর মহান বিদ্বানগণ যুগে যুগে এ বিষয়ে লেখালেখি করেছেন। সহজভাবে উপস্থাপন করার জন্য চালিয়েছেন নানামুখী প্রচেষ্টা। তারই ধারাবাহিকতায় শাইখ আব্দুল আযীয বিন মুহাম্মাদ আশ-শা‘আলানের একশ প্রশ্নোত্তর দিয়ে সাজানো অনিন্দ্য প্রয়াস—প্রশ্নোত্তরে আক্বীদাহ ও মানহাজ। পুস্তিকাটি সর্বজনশ্রদ্ধেয় বিদ্বান ইমাম সালিহ আল-ফাওযানের ছোট্ট ভূমিকা ধারণ করে হয়েছে আরও গুরুত্ব দাবিদার।
প্রশ্নোত্তরগুলো খুব সাধারণ; কিন্তু মৌলিক, বারবার পঠনীয়। অবশ্য পুস্তিকাটির অনেক আলোচনা ব্যাখ্যার মুখাপেক্ষী মনে হতে পারে। আর আসলেও ঘটনা তাই। তবুও আমরা টীকাটিপ্পনী দেওয়া থেকে সযত্নে বিরত থেকেছি। যেন পাঠকের স্বাভাবিক পাঠে বিঘ্নতা না আসে। বিস্তারিত জানার জন্য তো বড়ো বড়ো গ্রন্থ আর সেসবের ভাষ্য আছেই, তাইনা? মুসলিম ভাইবোনেরা এ থেকে উপকৃত হলে আমাদের সামান্য এই শ্রমকে সার্থক বলে মনে করব। দোয়া করি, আল্লাহ আমাদের সবাইকে পুস্তিকাটি থেকে উপকৃত করুন। আমীন।
·
ইমাম সালিহ আল-ফাওযান হাফিযাহুল্লাহ প্রদত্ত অভিমত:
পরম করুণাময় অসীম দয়ালু আল্লাহর নামে আরম্ভ করছি। যাবতীয় প্রশংসা আল্লাহর জন্য নিবেদিত। অতঃপর: শাইখ আব্দুল আযীয বিন মুহাম্মাদ আশ-শা‘আলানের লেখা প্রশ্নোত্তরগুলো আমি পড়েছি। তিনি প্রশ্নোত্তরের মধ্যে মুজাদ্দিদ ইমাম শাইখ মুহাম্মাদ বিন আব্দুল ওয়াহহাব রাহিমাহুল্লাহ প্রণীত ‘তিনটি মূলনীতি ও চারটি নীতি’ গ্রন্থের মৌলিক আলোচনা সন্নিবেশ করেছেন। এটাকে আমার বেশ ভালো ও ফলপ্রসূ কাজ মনে হয়েছে। এটা শাইখের এই মহান গ্রন্থ ভালোভাবে বুঝতে সহায়ক হবে। আল্লাহ তাঁকে উত্তম বিনিময় দিন এবং তাঁর জ্ঞান থেকে মানুষকে উপকৃত করুন।
সালিহ বিন ফাওযান আল-ফাওযান
সদস্য, সর্বোচ্চ উলামা পরিষদ
২১শে রবিউল আউয়াল, ১৪৪০ হি.।
·
গ্রন্থকারের ভূমিকা:
পরম করুণাময় অসীম দয়ালু আল্লাহর নামে আরম্ভ করছি। যাবতীয় প্রশংসা জগৎসমূহের প্রতিপালক আল্লাহর জন্য নিবেদিত। দয়া ও শান্তি বর্ষিত হোক সর্বশ্রেষ্ঠ নবি ও রসুলের প্রতি। অতঃপর: এই প্রশ্নোত্তরগুলো মহান আল্লাহর তাওহীদ, এর বিপরীত বিষয়—শির্ক ও তার বিভিন্ন মাধ্যম সম্পর্কে এবং আহলুস সুন্নাহ ওয়াল জামাআতের আক্বীদাহ বিষয়ে রচিত। আমি এগুলো সংক্ষেপে রচনা করেছি। বিষয়গুলো যেন পাঠকের কাছে সহজে বোধগম্য হয়, সেদিকে খেয়াল রেখেছি। আল্লাহর কাছে চাইছি, তিনি যেন এর মাধ্যমে উম্মতের উপকার করেন।
আব্দুল আযীয বিন মুহাম্মাদ আশ-শা‘আলান
প্রধান, দাওয়াহ বিষয়ক কো-অপারেটিভ ব্যুরো,
আযীযিয়্যাহ, রিয়াদ।
·
১. আমরা কেন তাওহীদ পড়ব?
উত্তর: কেননা তাওহীদ সকল মূলনীতির প্রধান মূলনীতি, শ্রেষ্ঠ মূলনীতি। তাওহীদের জন্যই আল্লাহ মানুষ ও জিনকে সৃষ্টি করেছেন, রসুলদের প্রেরণ করেছেন, ঐশী গ্রন্থরাজি অবতীর্ণ করেছেন। এর জন্যই সম্পন্ন হয়েছে জান্নাত ও জাহান্নামের পরিচালনা এবং মানুষরা বিভক্ত হয়েছে মুসলিম-কাফির—এ দুই শিবিরে। মহান আল্লাহ বলেছেন, وَمَا خَلَقْتُ الْجِنَّ وَالْإِنْسَ إِلَّا لِيَعْبُدُونِ “আমি জিন ও মানুষকে সৃষ্টি করেছি কেবল এ কারণে যে, তারা আমারই ইবাদত করবে।” [সুরা যারিয়াত: ৫৬]
২. আমরা আমাদের আক্বীদাহ কোথা থেকে গ্রহণ করব?
উত্তর: কুরআন, সুন্নাহ এবং সালাফদের আদর্শ থেকে।
৩. ওই তিনটি মূলনীতি কী, যা জানা মানুষের ওপর ওয়াজিব এবং যে মূলনীতিগুলো সম্পর্কে সে কবরে জিজ্ঞাসিত হবে?
উত্তর: বান্দা কর্তৃক তার রব, দ্বীন ও নবি মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে জানা।
৪. তোমার রব কে?
উত্তর: আমার রব আল্লাহ, যিনি তাঁর নেয়ামত দিয়ে আমাকে প্রতিপালন করেছেন এবং প্রতিপালন করেছেন সমগ্র জগৎকে। তিনি আমার মাবুদ (উপাস্য), তিনি ছাড়া আমার কোনো মাবুদ নেই। এর দলিল—মহান আল্লাহর বাণী, الْحَمْدُ لِلَّهِ رَبِّ الْعَالَمِينَ “যাবতীয় প্রশংসা জগৎসমূহের প্রতিপালক আল্লাহরই জন্য।” [সুরা ফাতিহা: ১]
৫. তুমি কীসের মাধ্যমে তোমার রবকে চিনেছ?
উত্তর: তাঁর নিদর্শনাবলি ও সৃষ্টিরাজির মাধ্যমে। রাত, দিন, সূর্য, চন্দ্র প্রভৃতি তাঁর নিদর্শনাবলির অন্তর্ভুক্ত। সাত আকাশ, সাত জমিন, এসবের মধ্যে যা কিছু আছে, এবং এ দুয়ের মধ্যভাগে যা আছে তা তাঁর সৃষ্টিরাজির অন্তর্ভুক্ত। এর দলিল—মহান আল্লাহর বাণী, وَمِنْ آيَاتِهِ اللَّيْلُ وَالنَّهَارُ وَالشَّمْسُ وَالْقَمَرُ ۚ لَا تَسْجُدُوا لِلشَّمْسِ وَلَا لِلْقَمَرِ وَاسْجُدُوا لِلَّهِ الَّذِي خَلَقَهُنَّ إِنْ كُنْتُمْ إِيَّاهُ تَعْبُدُونَ “রাত, দিন, সূর্য ও চন্দ্র তাঁর নিদর্শনগুলোর অন্তর্গত। সূর্যকে সেজদা কোরো না, চন্দ্রকেও না। সেজদা করো আল্লাহকে, যিনি ওগুলোকে সৃষ্টি করেছেন। যদি সত্যিকারার্থে তোমরা একমাত্র তাঁরই ইবাদত করতে চাও।” [সুরা ফুস্সিলাত: ৩৭]
·
৬. আল্লাহ কোথায়?
উত্তর: আকাশের ঊর্ধ্বে, আরশের ওপর সমুন্নত।
৭. আল্লাহ যে আকাশের ঊর্ধ্বে, আরশের ওপর আছেন—কুরআন থেকে তার দলিল দাও।
উত্তর: তিনি আকাশের ঊর্ধ্বে আছেন, তার দলিল—মহান আল্লাহর বাণী, أَأَمِنْتُمْ مَنْ فِي السَّمَاءِ “তোমরা কি তাঁর ব্যাপারে নিজেদের নিরাপদ মনে করে নিয়েছ, যিনি আছেন আকাশের ঊর্ধ্বে?” [সুরা মুলক: ১৬]
তিনি আরশের ওপর আছেন, তার দলিল—মহান আল্লাহর বাণী, الرَّحْمَٰنُ عَلَى الْعَرْشِ اسْتَوَىٰ “দয়াময় আল্লাহ আরশের ওপর সমুন্নত হয়েছেন।” [সুরা তহা: ৫] এর দলিল কুরআনের মোট সাত জায়গায় আছে।
৮. আয়াতে উদ্ধৃত ‘ইস্তাওয়া (اسْتَوَىٰ)’ শব্দের অর্থ কী?
উত্তর: উঁচু হয়েছেন, সমুন্নত হয়েছেন, আরোহণ করেছেন, ওপরে স্থায়ী হয়েছেন (َّعَلَا وَارْتَفَعَ وَصَعِدَ وَاسْتَقَر)।
৯. আল্লাহ কেন মানুষ ও জিনকে সৃষ্টি করেছেন?
উত্তর: তাঁর ইদাবতের জন্য, যিনি এক ও অদ্বিতীয়।
১০. আল্লাহ মানুষ ও জিনকে তাঁর ইবাদতের জন্য সৃষ্টি করেছেন—কুরআন থেকে এ কথার দলিল দাও।
উত্তর: মহান আল্লাহ বলেছেন, وَمَا خَلَقْتُ الْجِنَّ وَالْإِنْسَ إِلَّا لِيَعْبُدُونِ “আমি জিন ও মানুষকে সৃষ্টি করেছি কেবল এ কারণে যে, তারা আমারই ইবাদত করবে।” [সুরা যারিয়াত: ৫৬]
·
১১. আয়াতে উল্লিখিত ‘তারা আমারই ইবাদত করবে (ِيَعْبُدُونِ)’—কথাটির অর্থ কী?
উত্তর: তারা আমার তাওহীদ বাস্তবায়ন করবে।
১২. ইবাদত কাকে বলে?
উত্তর: আল্লাহ ভালোবাসেন ও পছন্দ করেন, এমন যাবতীয় প্রকাশ্য-অপ্রকাশ্য কথা ও কাজই ইবাদত।
১৩. ‘লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ’ বলে সাক্ষ্যদানের অর্থ কী?
উত্তর: এর মানে আল্লাহ ছাড়া কোনো সত্য মাবুদ নেই।
১৪. ‘মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আল্লাহর রসুল’—এ সাক্ষ্যের দাবি কী?
উত্তর: তাঁর নির্দেশ মান্য করা, তাঁর দেওয়া সংবাদকে সত্যায়ন করা, তাঁর নিষেধ ও বারণকৃত বিষয় পরিহার করা এবং তিনি যা শরিয়তসম্মত করেছেন—কেবল তারই আলোকে আল্লাহর ইবাদত করা।
১৫. মহান আল্লাহর সবচেয়ে বড়ো নির্দেশ কী?
উত্তর: মহান আল্লাহর সবচেয়ে বড়ো নির্দেশ তাওহীদ—কেবল আল্লাহর ইবাদত করা, যাঁর কোনো শরিক নেই। মহান আল্লাহ বলেছেন, وَلَقَدْ بَعَثْنَا فِي كُلِّ أُمَّةٍ رَسُولًا أَنِ اعْبُدُوا اللَّهَ وَاجْتَنِبُوا الطَّاغُوتَ “আমি প্রত্যেক সম্প্রদায়ের কাছেই রসুল প্রেরণ করেছি (এ ঘোষণা দিয়ে যে), তোমরা আল্লাহর ইবাদত করো এবং তাগুতকে পরিহার করো।” [সুরা নাহল: ৩৬]
·
১৬. তাওহীদের প্রকার কী কী?
উত্তর: তাওহীদুর রুবুবিয়্যাহ, তাওহীদুল উলুহিয়্যাহ, তাওহীদুল আসমা ওয়াস সিফাত।
১৭. তাওহীদুর রুবুবিয়্যাহ কাকে বলে?
উত্তর: আল্লাহকে তাঁর কর্মাবলির ক্ষেত্রে এক বলে মেনে নেওয়াকে তাওহীদুর রুবুবিয়্যাহ বলে। যেমন: সৃষ্টি করা, রিজিক দেওয়া, বৃষ্টিবর্ষণ করা ইত্যাদি।
১৮. তাওহীদুল উলুহিয়্যাহ কাকে বলে?
উত্তর: আল্লাহ বান্দার জন্য যেসব কাজ ইবাদত হিসেবে নির্ধারণ করেছেন, বান্দাদের সেসব কাজে আল্লাহকে এক গণ্য করাকে তাওহীদুল উলুহিয়্যাহ বলে।
১৯. তাওহীদুল আসমা ওয়াস সিফাত কাকে বলে?
উত্তর: যেসব নাম ও গুণাবলি আল্লাহর জন্য নির্দিষ্ট, সেসবের ক্ষেত্রে মহান আল্লাহকে এক হিসেবে মেনে নেওয়াকে বলা হয় তাওহীদুল আসমা ওয়াস সিফাত। মহান আল্লাহ বলেছেন, لَيْسَ كَمِثْلِهِ شَيْءٌ وَهُوَ السَّمِيعُ الْبَصِيرُ “তাঁর সদৃশ (মতো) কিছুই নেই; তিনি সর্বশ্রোতা, সর্বদ্রষ্টা।” [সুরা শুরা: ১১]
২০. ইবাদতের কিছু প্রকার উল্লেখ করো।
উত্তর: দোয়া, বিপদে সহয়তা প্রার্থনা করা, সাহায্য প্রার্থনা করা, কুরবানি জবেহ করা (উৎসর্গ হিসেবে জবাই করা), মানত করা, ভয় করা, আশা করা, ভরসা করা, অন্তরের প্রত্যাবর্তন, ভালোবাসা, জ্ঞানগত ভয়, সন্তুষ্টি কামনা, ভীত-সন্ত্রস্ত হওয়া, রুকু করা, সেজদা করা, বিনয়ী হওয়া, অবনত হওয়া, জিকির করা, কুরআন পাঠ করা।
·
২১. আল্লাহর সবচেয়ে বড়ো নিষেধ কী?
উত্তর: আল্লাহর সবচেয়ে বড়ো নিষেধ শির্ক। আল্লাহর সাথে অন্যের ইবাদত করাকে শির্ক বলে। মহান আল্লাহ বলেছেন, إِنَّ اللَّهَ لَا يَغْفِرُ أَنْ يُشْرَكَ بِهِ وَيَغْفِرُ مَا دُونَ ذَٰلِكَ لِمَنْ يَشَاءُ “নিশ্চয়ই আল্লাহ তাঁর সাথে শরিক করা ক্ষমা করবেন না। এছাড়া অন্য সব (গুনাহ) যাকে ইচ্ছা ক্ষমা করবেন।” [সুরা নিসা: ৪৮]
২২. শির্কের প্রকার দুটি কী কী?
উত্তর: প্রথম প্রকার: শির্কে আকবার তথা বড়ো শির্ক। আল্লাহ ও তাঁর রসুল যে কাজকে শির্ক বলেছেন এবং উক্ত কাজের কাজিকে ইসলাম থেকে বের করে দিয়েছেন, তাকে বড়ো শির্ক বলে। যেমন প্রতিমাপূজা, মৃতদের ইবাদত করা, গাইরুল্লাহর (আল্লাহ ব্যতীত অন্যের) উদ্দেশ্যে সেজদা দেওয়া প্রভৃতি।
দ্বিতীয় প্রকার: শির্কে আসগার তথা ছোটো শির্ক। শরিয়তে যে কাজকে শির্ক বলা হয়েছে এবং উক্ত কাজের কাজি ইসলাম থেকে বের হয় না, তাকে ছোটো শির্ক বলে। যেমন গাইরুল্লাহর নামে শপথ করা, সামান্য লৌকিকতা (রিয়া), ‘আল্লাহ ও আপনি যা চেয়েছেন’ এরূপ মন্তব্য করা। এটাকে ছোটো শির্ক বলা হয়েছে, কারণ এটা বড়ো শির্কে পতিত হওয়ার একটি মাধ্যম।
২৩. মানবজাতির মধ্যে প্রথম শির্ক কখন সংঘটিত হয়?
উত্তর: নুহ আলাইহিস সালামের সম্প্রদায়ের মধ্যে সর্বপ্রথম শির্ক সংঘটিত হয়।
২৪. নুহ আলাইহিস সালামের সম্প্রদায়ের মধ্যে শির্ক সংঘটনের কারণ কী ছিল?
উত্তর: বুজুর্গদের নিয়ে বাড়াবাড়িই ছিল এর কারণ।
২৫. বুজুর্গদের নিয়ে বাড়াবাড়ি—কথাটির অর্থ কী?
উত্তর: তাদের প্রশংসায় অতিরঞ্জন করা এবং তাদের মর্যাদাকে এত ওপরে তুলে দেওয়া যে, তাদের জন্য ধার্য করা হয় ইবাদতের কিয়দংশ। এর দলিল—মহান আল্লাহর বাণী, يَا أَهْلَ الْكِتَابِ لَا تَغْلُوا فِي دِينِكُمْ “ওহে কিতাবধারীরা, তোমরা তোমাদের দ্বীনের ব্যাপারে বাড়াবাড়ি কোরো না।” [সুরা নিসা: ১৭১]
নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, لَا تُطْرُونِيْ كَمَا أَطْرَتْ النَّصَارَى ابْنَ مَرْيَمَ فَإِنَّمَا أَنَا عَبْدُهُ فَقُوْلُوْا عَبْدُ اللهِ وَرَسُوْلُهُ “তোমরা আমার প্রশংসায় অতিরঞ্জন কোরো না, যেমন মারইয়াম তনয় ঈসার প্রশংসায় অতিরঞ্জন করেছিল খ্রিষ্টানরা। আমি তো স্রেফ তাঁর বান্দা। সুতরাং তোমরা বল, আল্লাহর বান্দা ও তাঁর রসুল।” [সহিহ বুখারি, হা/৩৪৪৫]
·
২৬. মৃতদের কাছে প্রার্থনা করার বিধান কী?
উত্তর: আল্লাহ ছাড়া যা করতে (বা দিতে) কেউ সক্ষম নয়, এমনকিছু মৃতদের কাছে প্রার্থনা করা বড়ো শির্ক, যা ইসলাম থেকে বের করে দেয়। কুরআন থেকে দলিল— وَمَنْ يَدْعُ مَعَ اللَّهِ إِلَٰهًا آخَرَ لَا بُرْهَانَ لَهُ بِهِ فَإِنَّمَا حِسَابُهُ عِنْدَ رَبِّهِ ۚ إِنَّهُ لَا يُفْلِحُ الْكَافِرُونَ “যে ব্যক্তি আল্লাহর সঙ্গে অন্য ইলাহকেও ডাকে, এ ব্যাপারে তার কাছে কোনো প্রমাণ নেই, কেবল তার প্রতিপালকের কাছেই তার হিসাব হবে; কাফিররা অবশ্যই সফলকাম হবে না।” [মুমিনুন: ১১৭]
২৭. আল্লাহর কাছে দোয়া করতে কি মাখলুককে মাধ্যম নির্ধারণ করার প্রয়োজন হয়?
উত্তর: আল্লাহর কাছে দোয়া করতে মাখলুককে মাধ্যম নির্ধারণ করার প্রয়োজন হয় না। এর দলিল—মহান আল্লাহর বাণী, وَإِذَا سَأَلَكَ عِبَادِي عَنِّي فَإِنِّي قَرِيبٌ ۖ أُجِيبُ دَعْوَةَ الدَّاعِ إِذَا دَعَانِ “যখন আমার বান্দারা আমার সম্পর্কে তোমার কাছে জিজ্ঞেস করে, তখন (তাদের জবাব দাও), আমি তো (জ্ঞানের মাধ্যমে তাদের) নিকটেই। আহ্বানকারী যখন আমাকে আহ্বান করে, আমি তার আহ্বানে সাড়া দেই।” [সুরা বাকারা: ১৮৬]
২৮. মৃতেরা কি প্রার্থনায় সাড়া দিতে পারে?
উত্তর: মৃতেরা প্রার্থনায় সাড়া দিতে পারে না। এর দলিল—মহান আল্লাহর বাণী, إِنْ تَدْعُوهُمْ لَا يَسْمَعُوا دُعَاءَكُمْ وَلَوْ سَمِعُوا مَا اسْتَجَابُوا لَكُمْ ۖ وَيَوْمَ الْقِيَامَةِ يَكْفُرُونَ بِشِرْكِكُمْ “তোমরা তাদেরকে (বাতিল উপাস্যদেরকে) ডাকলে, তারা তোমাদের ডাক শুনবে না। আর যদি শুনেও, তবুও তোমাদের ডাকে সাড়া দিতে পারবে না। আর তোমরা যে তাদেরকে (আল্লাহর) শরিক নির্ধারণ করতে, কেয়ামতের দিন তা তারা অস্বীকার করবে।” [সুরা ফাতির: ১৪]
২৯. আমরা কার উদ্দেশ্যে জবেহ করব এবং নামাজ পড়ব?
উত্তর: এক আল্লাহর উদ্দেশ্যে, যাঁর কোনো শরিক নেই। মহান আল্লাহ বলেছেন, فَصَلِّ لِرَبِّكَ وَانْحَرْ “অতএব তুমি তোমার প্রতিপালকের উদ্দেশ্যে নামাজ পড়ো এবং কুরবানি করো।” [সুরা কাওসার: ২]
৩০. গাইরুল্লাহর উদ্দেশ্যে জবেহ ও সেজদা করার বিধান কী?
উত্তর: বড়ো শির্ক, যা ব্যক্তিকে ইসলাম ধর্ম থেকে বের করে দেয়। মহান আল্লাহ বলেছেন, قُلْ إِنَّ صَلَاتِي وَنُسُكِي وَمَحْيَايَ وَمَمَاتِي لِلَّهِ رَبِّ الْعَالَمِينَ لَا شَرِيكَ لَهُ ۖ وَبِذَٰلِكَ أُمِرْتُ وَأَنَا أَوَّلُ الْمُسْلِمِينَ “বল, আমার নামাজ, আমার কুরবানি, আমার জীবন, আমার মরণ (সব কিছুই) বিশ্বজগতের প্রতিপালক আল্লাহর জন্য নিবেদিত। তাঁর কোনো শরিক নেই, আমাকে এরই নির্দেশ দেয়া হয়েছে, আর আমিই (এ উম্মতের) সর্বপ্রথম মুসলিম।” [সুরা আনআম: ১৬২-১৬৩]
·
৩১. গাইরুল্লাহর নামে শপথ করার বিধান কী? যেমন নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের নামে শপথ করা, কিংবা আমানত বা গৌরবের শপথ করা প্রভৃতির বিধান কী?
উত্তর: এর বিধান—ছোটো শির্ক। নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, مَنْ كَانَ حَالِفًا فَلْيَحْلِفْ بِاللهِ أَوْ لِيَصْمُتْ “যে ব্যক্তি শপথ করতে চায়, সে যেন আল্লাহর নামে শপথ করে, আর নাহয় নীরব থাকে।” [সহিহ বুখারি, হা/২৬৭৯]
৩২. আল্লাহর নাম ও গুণাবলির ব্যাপারে একজন মুসলিমের কর্তব্য কী?
উত্তর: কোনোরূপ তাহরীফ (অর্থ বা শব্দগত বিকৃতি), তা‘তীল (অস্বীকার, অপব্যাখ্যা, বা অর্থ-অস্বীকৃতি) না করে এবং ধরন ও সাদৃশ্য বর্ণনা না করে—আল্লাহর জন্য তিনি নিজে যেসব নাম ও গুণ সাব্যস্ত করেছেন এবং তাঁর রসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যা সাব্যস্ত করেছেন তা সাব্যস্ত করা; আর আল্লাহর তরফ থেকে তিনি নিজে যে গুণ নাকচ করেছেন এবং তাঁর রসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যা নাকচ করেছেন তা নাকচ করা।
৩৩. আল্লাহর গুণাবলি যে আমাদের গুণাবলির মতো নয়, কুরআন থেকে তার দলিল দাও।
উত্তর: মহান আল্লাহ বলেছেন, لَيْسَ كَمِثْلِهِ شَيْءٌ وَهُوَ السَّمِيعُ الْبَصِيرُ “তাঁর সদৃশ (মতো) কিছুই নেই; তিনি সর্বশ্রোতা, সর্বদ্রষ্টা।” [সুরা শুরা: ১১]
৩৪. তোমার দ্বীন (ধর্ম) কী?
উত্তর: আমার দ্বীন ইসলাম। কারণ মহান আল্লাহ বলেছেন, إِنَّ الدِّينَ عِنْدَ اللَّهِ الْإِسْلَامُ “নিশ্চয় আল্লাহর নিকট একমাত্র দ্বীন—ইসলাম।” [সুরা আলে ইমরান: ১৯]
৩৫. মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের নবুওতপ্রাপ্তির পর ইসলাম ব্যতীত অন্য কোনো ধর্ম কি আল্লাহ গ্রহণ করবেন?
উত্তর: রসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের নবুওতপ্রাপ্তির পর ইসলাম ব্যতীত অন্য কোনো ধর্ম আল্লাহ গ্রহণ করবেন না। এর দলিল—মহান আল্লাহর বাণী, وَمَنْ يَبْتَغِ غَيْرَ الْإِسْلَامِ دِينًا فَلَنْ يُقْبَلَ مِنْهُ وَهُوَ فِي الْآخِرَةِ مِنَ الْخَاسِرِينَ “আর যে ব্যক্তি ইসলাম ব্যতীত অন্য কোনো ধর্ম গ্রহণ করতে চাইবে, কক্ষনো তার সেই ধর্ম কবুল করা হবে না এবং আখেরাতে সে ব্যক্তি ক্ষতিগ্রস্তদের অন্তর্ভুক্ত হবে।” [সুরা আলে ইমরান: ৮৫]
·
৩৬. ইসলামের পরিচয় কী?
উত্তর: তাওহীদ সহকারে আল্লাহর কাছে আত্মসমর্পণ করা, আনুগত্য নিয়ে তাঁর অনুসরণ করা এবং শির্ক ও মুশরিকদের থেকে সম্পর্ক ছিন্ন করাকে বলে ইসলাম।
৩৭. ইসলামের স্তম্ভ (খুঁটি) কী কী?
উত্তর: এ মর্মে সাক্ষ্য দেওয়া যে, আল্লাহ ছাড়া কোনো সত্য উপাস্য নেই এবং মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাঁর বান্দা ও রসুল, নামাজ প্রতিষ্ঠা করা (যথাযথভাবে নামাজ আদায় করা), জাকাত প্রদান করা, রমজান মাসের রোজা রাখা এবং সামর্থ্য থাকলে বাইতুল্লাহর হজ সম্পন্ন করা। এর দলিল—নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের বাণী, الإِسْلاَمُ أَنْ تَشْهَدَ أَنْ لاَ إِلَهَ إِلاَّ اللَّهُ وَأَنَّ مُحَمَّدًا رَسُولُ اللَّهِ وَتُقِيمَ الصَّلاَةَ وَتُؤْتِيَ الزَّكَاةَ وَتَصُومَ رَمَضَانَ وَتَحُجَّ الْبَيْتَ إِنِ اسْتَطَعْتَ إِلَيْهِ سَبِيلا “ইসলাম মানে—তুমি এ মর্মে সাক্ষ্য দেবে যে, আল্লাহ ছাড়া কোনো সত্য উপাস্য নেই এবং মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাঁর বান্দা ও রসুল, তুমি নামাজ প্রতিষ্ঠা করবে (যথাযথভাবে নামাজ আদায় করবে), জাকাত প্রদান করবে, রমজান মাসের রোজা রাখবে এবং সামর্থ্য থাকলে বাইতুল্লাহর হজ করবে।” [সহিহ বুখারি, হা/৫০; সহিহ মুসলিম, হা/৮]
৩৮. ইমানের পরিচয় কী?
উত্তর: জবান দিয়ে বলা, অন্তরে বিশ্বাস করা এবং অঙ্গপ্রত্যঙ্গ দিয়ে আমল করাকে একত্রে ইমান বলা হয়। আনুগত্যমূলক কাজে ইমান বৃদ্ধি পায়, আর পাপকাজের দরুন তা কমে যায়।
৩৯. ইমানের স্তম্ভ (খুঁটি) কী কী?
উত্তর: আল্লাহ, তাঁর ফেরেশতাবর্গ, কিতাবসমূহ ও রসুলবর্গের প্রতি ইমান আনয়ন করা এবং শেষ দিবসের প্রতি ও ভাগ্যের ভালো-মন্দের প্রতি ইমান আনা। এর দলিল—রসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের বাণী, أَنْ تُؤْمِنَ بِاللَّهِ وَمَلاَئِكَتِهِ وَكُتُبِهِ وَرُسُلِهِ وَالْيَوْمِ الآخِرِ وَتُؤْمِنَ بِالْقَدَرِ خَيْرِهِ وَشَرِّهِ “ইমান মানে—তুমি ইমান আনবে আল্লাহর প্রতি, তাঁর ফেরেশতাবর্গ, কিতাবসমূহ ও রসুলবর্গের প্রতি এবং শেষ দিবসের প্রতি; আরও ইমান আনবে ভাগ্যের ভালো-মন্দের প্রতি।” [সহিহ মুসলিম, হা/৮; ইমান অধ্যায় (১); পরিচ্ছেদ: ১]
৪০. ফেরেশতা কারা?
উত্তর: ফেরেশতাবর্গ একটি অদৃশ্য জগৎ, যাদেরকে আল্লাহ তাঁর ইবাদতের জন্য সৃষ্টি করেছেন।
·
৪১. ফেরেশতাবর্গের প্রতি ইমান আনার বিধান কী?
উত্তর: ফরজ, যা ব্যতীত ব্যক্তির ইমান কবুল করা হয় না।
৪২. সর্বশ্রেষ্ঠ ফেরেশতা কে?
উত্তর: জিবরিল আলাইহিস সালাম। তিনি ওহি নিয়ে আসার দায়িত্বপ্রাপ্ত ফেরেশতা।
৪৩. আসমানী কিতাব কী কী?
উত্তর: যেসব কিতাব আল্লাহ তাঁর রসুলগণের ওপর নাজিল করেছেন। যেমন: তাওরাত, ইনজীল, যাবুর, কুরআন।
৪৪. কিতাবসমূহের প্রতি ইমান আনার বিধান কী?
উত্তর: ফরজ, যা ব্যতীত ব্যক্তির ইমান কবুল করা হয় না।
৪৫. সর্বশ্রেষ্ঠ আসমানী কিতাব কী?
উত্তর: সর্বশ্রেষ্ঠ কিতাব মহান কুরআন, যা আল্লাহ নাজিল করেছেন মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের ওপর। কুরআন পূর্ববর্তী সকল আসমানী গ্রন্থকে রহিতকারী। কুরআন ব্যতীত অন্য কিছুর মাধ্যমে আল্লাহর ইবাদত করা জায়েজ নয়। মহান আল্লাহ বলেছেন, وَأَنْزَلْنَا إِلَيْكَ الْكِتَابَ بِالْحَقِّ مُصَدِّقًا لِمَا بَيْنَ يَدَيْهِ مِنَ الْكِتَابِ وَمُهَيْمِنًا عَلَيْهِ “আর আমি সত্য বিধান-সহ তোমার প্রতি কিতাব নাজিল করেছি, যা পূর্ববর্তী কিতাবসমূহকে সত্যায়নকারী ও সংরক্ষক।” [সুরা মাইদাহ: ৪৮]
·
৪৬. শেষ দিবস কী?
উত্তর: কেয়ামতের দিন, যেদিন হিসাব ও প্রতিফলের জন্য মানুষকে উঠানো হবে।
৪৭. শেষ দিবসের প্রতি ইমান আনার বিধান কী?
উত্তর: ফরজ, যা ব্যতীত ব্যক্তির ইমান কবুল করা হয় না।
৪৮. ভাগ্য (তাকদির) কী?
উত্তর: আল্লাহর অগ্রবর্তী ইলম ও প্রজ্ঞার দাবি অনুযায়ী তিনি সৃষ্টিকুলের জন্য যে নিয়তি নির্ধারণ করেছেন, সেটাই ভাগ্য (তাকদির)।
৪৯. ভাগ্যের প্রতি ইমান আনার বিধান কী?
উত্তর: ফরজ, যা ব্যতীত ব্যক্তির ইমান কবুল করা হয় না।
৫০. ইহসান কাকে বলে?
উত্তর: ইহসান মানে—তুমি এমনভাবে আল্লাহর ইবাদত করবে, যেন তুমি তাকে দেখছ; তুমি যদি তাকে দেখতে না পাও, (তাহলে এ ভেবে ইবাদত করো যে) তিনি তোমাকে দেখছেন।
·
[আগামী পর্বে সমাপ্য, ইনশাআল্লাহ]
·
অনুবাদক: মুহাম্মাদ আব্দুল্লাহ মৃধা
No comments:
Post a Comment