Saturday, May 15, 2021

বাসর রাত

 https://scontent.fdac15-1.fna.fbcdn.net/v/t1.6435-9/116873448_10222787518421044_3776146332556557308_n.jpg?_nc_cat=107&ccb=1-3&_nc_sid=74df0b&_nc_ohc=Hq3hk1GYXVAAX8zV5rd&_nc_ht=scontent.fdac15-1.fna&oh=0b2b654a7ccc3b77e5e1f04e304f08ca&oe=60C5C612

 

 

বাসর রাত

 

 

  • ঘরে প্রবেশ করে সালাম দিন। মেয়েটা ভয়ে ভয়ে আছে। জীবনে সম্পূর্ণ এক নতুন অভিজ্ঞতার সামনে কম্পমান অন্তর। সহযোগিতার মনোভাব দেখান। কিছুক্ষণ গল্প করে ফ্রী হোন।
  • সামনের চুলের গোছা ধরে পড়ার একটা দুয়া আছে। পড়ে নিন।
‘আল্লাহুম্মা ইন্নি আসআলুকা খাইরাহা ওয়া খাইরা মা যুবিলাত আলাইহি, ওয়া আউযুবিকা মিন শাররিহা ওয়া শাররি মা যুবিলাত আলাইহি’।
অর্থ : হে আল্লাহ, আমি আপনার কাছে তার (স্ত্রী) কল্যাণের প্রার্থনা করছি এবং প্রার্থনা জানাই তার সেই কল্যাণময় স্বভাবের যার ওপর আপনি তাকে সৃষ্টি করেছেন। আর আমি আপনার আশ্রয় চাচ্ছি তার অনিষ্ট থেকে এবং তার সেই অকল্যাণময় স্বভাবের অনিষ্ট থেকে যার ওপর আপনি তাকে সৃষ্টি করেছেন। [1]
  • এরপর বিয়ের পোশাক চেঞ্জ করে ফ্রেশ হবার সুযোগ দিন। সারাদিন হয়তো ভালোভাবে খাওয়া হয়নি। খেয়ে নিন। পারলে খাইয়ে দিন।
  • দুজনে দু’রাকাআত সলাত পড়ে নতুন জীবন শুরু করুন। স্ত্রীকে পিছনে নিয়ে জামাআতের সাথে পরা মুস্তাহাব। আল্লাহর কাছে দুআ করুন একসাথে। সব সম্মিলিত দুআ খারাপ না।
* আবু উসাইদের মুক্তিপ্রাপ্ত দাস আবু সাঈদ বলেন: আমি দাস অবস্থায় বিবাহ করেছিলাম। এবং সাহাবাদের কয়েকজনাকে দাওয়াত করেছিলাম, যাদের মধ্যে আব্দুল্লাহ ইবনে মাসউদ, আবু যার ও হুযাইফা রা. উপস্থিত ছিলেন। সালাতের জন্য ইকামত হয়ে গেল, আবু যার রা. ইমামতির জন্য সামনে এগোলেন। বাকিরা তাঁকে থামিয়ে দিলেন: সাবধান, যাবেন না। আমি ইমামতি করলাম (সাহেবে দাওয়াত বলে), অথচ তখনও আমি দাস। সালাত শেষে তাঁরা আমাকে (নতুন বর হিসেবে) শিক্ষা দিয়ে বললেন:যখন তোমার স্ত্রী তোমার কাছে আসবে তখন দু’রাকাআত সালাত পড়বে। তারপর তার জন্য মঙ্গলের দুয়া করবে এবং তার খারাবি থেকে আল্লাহর পানাহ চাইবে। তারপর তোমার ও তোমার স্ত্রীর ব্যাপার।[2]
* আবু হারীয নামক জনৈক ব্যক্তি একবার এলেন আবদুল্লাহ ইবনে মাসউদ রা. এর কাছে। এসে জানালেন, নতুন বিয়ে করেছেন এক কুমারীকে, কিন্তু মনে খচখচ লাগছে, যদি তার ভিতরে কোনো অনিষ্টকর কিছু থাকে। সাহাবী পরামর্শ দিলেন: যখন সে কাছে আসবে, তাকে জামাআত সহকারে তোমার পিছনে দু’রাকাআত সালাত পড়ার নির্দেশ দেবে।[3]
* সালমান ফারসী রা. বাসর রাতে নিজ স্ত্রীকে বলেন: ‘নিশ্চয়ই রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম আমাকে বলেছেন, যেদিন তুমি বিবাহ করবে, সর্বপ্রথম সাক্ষাত করবে আল্লাহর অনুসরণের মাধ্যমে। সুতরাং তুমি দাঁড়াও, আমরা দু’রাকাআত সালাত পড়ব। যখন আমাকে দুয়া করতে শুনবে, তখন আমীন বলবে’। [4]
  • প্রথম রাতে দৈহিক মিলন করতে পারেন, যদি স্ত্রী সংকোচ বোধ না করে। স্ত্রীর মন বুঝে। প্রথম মিলনের অভিজ্ঞতা যেন তার জন্য বিভীষিকা না হয়। প্রথম মিলন যদি মনে নেগেটিভ ছাপ রেখে যায়, তাহলে তার পরবর্তী যৌনজীবনে এর ছাপ থেকে যায়। ফলে নানান যৌন সমস্যাও জন্ম নিতে পারে। ফলে আপনার নিজের যৌনজীবনেও সমস্যা দেখা দেবে। প্রথম সেক্স যেন কোনো বাজে অভিজ্ঞতা না হয়। আর প্রথম রাত মেয়েরা আজীবন মনে রাখে। এজন্য এমন কিছু করুন , যা মনে হলেই প্রশান্তি হবে।
  • এজন্য সবচেয়ে সেফ হল, বিয়ের প্রথম রাতে তাকে বুকে জড়িয়ে গল্প করুননিজের স্বপ্নগুলো শেয়ার করুন, তার স্বপ্ন শুনুন, দুজনে স্বপ্ন বানান। হামলে পড়বেন না। বাসর রাতেই বিলাই মারতে হবে এটা বাজে প্র্যাকটিস। অচেনা একটা মেয়ের উপর বলা নেই কওয়া নেই পরিচয় নেই, ঝাঁপিয়ে পড়া। অনেক সবর করেছেন, আর একটা রাত। বিলাই মারার কিছু নেই। বিলাই মাত্রই মরণশীল। একাই মরবে, ভূত হবে। এরপর গল্প করতে পারেন। বারান্দায় যেতে পারেন, গান শোনাতে পারেন। স্ত্রীর সাথে ঠাট্টাতামাশা করা সুন্নাত। ফজরে উঠার জন্য ঘুমাতেও পারেন।
  • দু’একদিন পর যখন আপনি প্রথা অনুসারে শ্বশুরবাড়ি যাবেন, তখন প্রথম মিলনটা হলে সবচেয়ে ভালো হয়। মানে প্রথম মিলনটা ‘বউয়ের পরিচিত পরিবেশে’ হলে সহজ হবে আপনার জন্যও, তার জন্যও। বিসমিল্লাহ বলে সহবাস শুরু করা। তারপর শয়তান থেকে পানাহ চাওয়া। উভয়টিকে একত্রে এভাবে বলা যায়:
‘বিসমিল্লাহি আল্লাহুম্মা জান্নিবনাশ শাইতানা ওয়া জান্নিবিশ শাইতানা মা রাযাকতানা।’[5]
· হানিমুনে যান যত দ্রুত সম্ভব। দ্রুত হানিমুনে যেতে পারলে প্রথম সেক্স হানিমুনেও হতে পারে। আসলে আপনার বাসা ও তার বাসায় আত্মীয়-স্বজনের মাঝে যে সংকোচটা কাজ করে, হানিমুনে গেলে সেটা থাকে না। প্লাস ঘরের কাজকাম নেই, ‘শ্বশুর-শাশুড়ি-ননদ-জা কে কী ভাবল’ টেনশন নেই। দূরে দূরে যেতে হবে, এমন কোনো কথা নেই। আপনার জেলাতেই কোনো রিসোর্ট হতে পারে। উদ্দেশ্য হল তাকে মানসিকভাবে ফ্রী করা, ব্যস্ততার দিক থেকে ফ্রী করা। তার মনোযোগকে মিলনের ভিতর কেন্দ্রীভূত করা। এতে করে স্ত্রী মিলনের স্বাদ ও অর্গাজম (চরমানন্দ) বুঝানো সহজ হয়, নয়তো প্রথম অর্গাজম অনুভব করতে মেয়েদের বহু দেরি হয়ে যায়। পারস্পরিক যৌন বোঝাপড়া (সেক্সুয়াল আন্ডারস্ট্যান্ডিং) দ্রুত হয় হানিমুনে
  • স্বামী আর স্ত্রীর মাঝে কোনো পর্দা নেই। দুজন দুজনের সবকিছু দেখা জায়েয। · স্ত্রীর যোনির দিকে তাকানো জায়েয। কিন্তু আজকের আলোচনার সূত্র আমাদের বলছে, না তাকানোই ভালো। "Erogenous Zones ." The Oxford Companion To The Body. Encyclopedia.Com. (June 30, 2020) আর্টিকেলটা আমাদের জানাচ্ছে:
যোনিমুখ (VULVA) দর্শন খুব কমই উত্তেজক হয়। যোনিমুখের পরিবর্তে শরীরের অন্যান্য অঙ্গ দেখা, (যা যোনিকে বা সেক্স-কে কল্পনায় আনে, যেমন ঠোঁট, স্তন, নাভি) বেশি উত্তেজনাকর।
স্বাভাবিকভাবেই নারী-পুরুষ উভয়েরই ঐ জায়গাটা পিগমেন্টেশন হয়, শরীরের অন্যান্য জায়গার চেয়ে কালো হয়। পর্নো অভিনেত্রীরা মেক-আপ করে শুটিং করে। ফলে বাস্তবে এই এলাকাটা খুব আকর্ষণীয় কিছু হয় না। বার বার দেখলে আগ্রহ চলে যেতে পারে, আকর্ষণ কমে যেতে পারে। কোন ক্ষেত্রে আমাদের নবীজি আমাদের জন্য আদর্শ রেখে যাননি, বলবেন আমাকে? আম্মিজান আয়িশা রা. বলেন—
আমি রাসুলুল্লাহর সা. এর থেকে তা কখনো দেখিনি এবং তিনিও আমার থেকে কখনো তা দেখেননি।[6]
একই কারণে সম্পূর্ণ উলঙ্গ হয়ে সেক্স করবেন না। এর চেয়ে উপরের অংশে নামমাত্র কিছু কাপড় (নাইটি জাতীয়) পরা থাকলে আকর্ষণ পুরোমাত্রায় বজায় থাকে। পুরুষ উত্তেজিত হয় ‘দেখে’। স্ত্রীর কেমন পোশাক পরেছেন, তাও পুরুষের যৌন আগ্রহ জাগিয়ে তুলতে পারে। মনোবিদ J. C. Flugel তাঁর The Psychology of Clothes (1930) বইয়ে বলেছেন—
খালি চামড়া অধিকাংশ পুরুষের কাছে বোরিং লাগে। পুরুষের কৌতূহল ধরে রাখা যায়, যদি নারী তার উত্তেজক স্থানগুলো একই সাথে ঢেকেও রাখে, আবার দৃশ্যমানও রাখে। মনে হবে ঢাকা, কিন্তু সেকেন্ড দৃষ্টিপাতে বুঝা যাবে যে আসলে ঢাকা না।
অর্থাৎ টাইট ফিটিং পোশাক এবং স্বচ্ছ পোশাক। স্ত্রীর রাতপোশাক হবে হয় ফিটিং বা স্বচ্ছ-অর্ধস্বচ্ছ। ফলে আকর্ষণ বেড়ে যাবে।[7] নবীজি সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন:
তোমাদের কেউ যখন স্ত্রীর সঙ্গে মিলন করে, তখন সে যেনো আবৃত থাকে, গাধা যুগলের মতো যেনো একেবারে নগ্ন না হয়ে যায়।[8]
  • প্রচুর ফোরপ্লে করুন। লিঙ্গ যোনিতে ঢুকানোর আগে স্ত্রীকে যেভাবে আদর সোহাগ করা হয়। চুম্বন, বিলাইচুম্বন (ফ্রেঞ্চকিস), স্পর্শ (touch), দলন (fondle), পেষণ (squeeze), লেহন (licking), চোষণ (sucking) এ সবকিছুই ফোরপ্লে। মানে ‘মেইনপ্লে' র আগে যা করবেন সবই ‘ফোরপ্লে'। বাংলায় বলে ‘শৃঙ্গার'। মনে কোনো টেনশন রাখবেন না। খেলার মত মনে করুন।
  • প্রথমবার ঢুকানোর সময় বেশ ব্যথা পেতে পারে। আর না করার জন্য / না ঢুকানোর জন্য / অন্য কোনদিন করার জন্য অনুরোধ/জেদ করতে পারে। কর্ণপাত করা যাবে না। প্রচুর আদর করে কিছুটা জোর করেই ঠেলে প্রবেশ করিয়ে দিতে হবে। একবার ঢুকে গেলে আর সমস্যা হবে না। পরের দু’একদিন ব্যথা থাকতে পারে। তিনবেলা তিনটে নাপা খাইয়ে দিবেন।
  • মেয়েদের সতীচ্ছদ পর্দা নিয়ে সমাজে ভুল ধারণা প্রচলিত আছে। বাসর রাতে বিছানায় রক্ত না দেখলে মনে খুঁতখুঁট করার কিছু নেই। এই পর্দা খুব পাতলা জিনিস। শুধু সেক্সের জন্যই ছেঁড়ে তা নয়। বরং খেলাধুলা/যোনিতে ইনফেকশন/ঘুমের ভঙ্গির কারণে ছোটবেলায়ই ছিঁড়তে পারে। অনেকের মোটা থাকে বলে ছেঁড়ে না, জাস্ট একপাশে সরে যায়। অনেকের আবার জন্মগতভাবেই থাকে না [9]। সুতরাং রক্তপাত না হলেও স্ত্রীর ভার্জিনিটি নিয়ে অহেতুক সন্দেহ করা মূর্খতা ও ছোটলোকির পরিচয়।
  • স্ত্রীর প্রথম অর্গাজম (চরমানন্দ) অনেক দেরিতেও হতে পারে। ২/৩ মাসও লাগতে পারে। অনেক মেয়ে সেক্স চলাকালীন মনোযোগ দেয় না। ফলে অর্গাজম হয় না/ দেরীতে হয়। স্ত্রীকে সেক্সের ভিতর কন্সেন্ট্রেশন দিতে বলুন। আপনি কীভাবে তাকে আদর করছেন তা ফীল করতে বলুন। প্রয়োজনে প্রথম প্রথম খেলাচ্ছলে চোখ বেঁধে করতে পারেন। তাহলে মনোযোগ আনাটা সহজ হবে।
  • যারা পর্নো দেখে দেখে বরবাদ হয়েছেন, কয়েকটা কথা মাথায় রাখেন:
- পর্নস্টার একজন বেশ্যা, আর আপনার স্ত্রী একজন ভদ্র পরিবারের ধার্মিক নারী। 
- পর্নো ভিডিও একটা অভিনয়। অহেতুক শীৎকার/ তৃপ্তির ভঙ্গি/ ঢংঢাং সব ‘অভিনয়’। 
- ওদের ফুল বডি মেকআপ। এমনকি যোনিও। স্বাভাবিক মানুষের ত্বক অত মসৃণ-নির্লোম হয় না। 
- পর্নোস্টারদের স্তন সার্জারি করে সিলিকন জেল ঢুকানো। তাই বড় হলেও ঝুলা না। ন্যাচারাল স্তন একটু ঝুলাই থাকে।
 - নিতম্ব জিম করে বা সার্জারি করে সুডৌল করা।
 - পুরুষ লিঙ্গ সার্জারি করে বড় আর মোটা করা হয় অধিকাংশ ক্ষেত্রে।
 - ওরা কিন্তু একটানা ২০/৪০ মিনিট করে না। একটা ২০ মিনিটের ভিডিও বানাতে হয়তো ৭ দিন শুটিং করেছে।
তাই নিজের স্ত্রীকে ওদের সাথে তুলনা করে হতাশ হবেন নাআর নিজেকে ওদের সাথে তুলনা করেও হতাশ হবেন না। স্বাভাবিক যৌনজীবন একটা নিআমত। আল্লাহ আপনাকে তা দিয়েছেন। ফ্যান্টাসি করে সেটাকে নষ্ট করে দুনিয়াটা দোজখ বানাবেন না। স্বাভাবিক হোন। স্ত্রীকে ভালেবাসুন। ডুব দিন। আবিষ্কার করুন তার পছন্দ। নিজের পছন্দগুলো তাকে বলুন। তুলে আনুন মুক্তো।
রেফারেন্স:

[1] আবু দাউদ ও ইবনে মাজাহ সূত্রে শাইখ নাসিরুদ্দীন আলবানী, আদাবুয যিফাফ

 [2] মুসান্নাফে আবী শাইবা, মুসান্নাফে আবদুর রাযযাক, সহীহ ইবনু হিব্বান-এর সূত্রে শাইখ নাসিরুদ্দীন আলবানী, আদাবুয যিফাফ

 [3] মুসান্নাফে আবী শাইবা, মুসান্নাফে আবদুর রাযযাক ও তাবারানী সূত্রে শাইখ নাসিরুদ্দীন আলবানী, আদাবুয যিফাফ

 [4] মুসান্নাফে আবদুর রাযযাক ও ইবনে আসাকির সূত্রে শাইখ নাসিরুদ্দীন আলবানী, আদাবুয যিফাফ

 [5] সহীহ বুখারী[

6] [সুনানে ইবনে মাজাহ]

 [7] "Erogenous Zones ." The Oxford Companion To The Body. . Encyclopedia.Com. (June 30, 2020).

 [8] [সুনানে ইবনে মাজাহ— ১/৬১৯, ১৯২১] হাদিসগুলো উস্তাদ আলী হাসান উসামা-র সাইট থেকে সংগৃহীত।বুসিরি রহ. মিসবাহুয যুজাজাহ (১/৩৩৭) গ্রন্থে উভয় হাদিসকে যয়িফ বলেছেন। তবে একাধিক হাদিস থেকে এ বিষয়ে প্রমাণ মেলে।

[9] ডা. লিমন ক্লার্ক ও ডা. ইসাডোর রুবিন, মেডিকেল সেক্স গাইড

 

No comments:

Post a Comment