রাতের বেলা নখ, চুল কাটা নিষিদ্ধ মনে করা!!
ইসলাম
পরিচ্ছন্ন সৌন্দর্যে ঘেরা একটি জিবনব্যাবস্থা। অপরিচ্ছন্ন কিংবা অপবিত্র
অবস্থায় কোন লোকের দিনাতিপাত করা কখনও ইসলাম সমর্থন করেনা।আল্লাহ
তায়ালা বলেন, “নিশ্চয়ই আল্লাহ তায়ালা তাওবাকারীদের ভালোবাসেন এবং
ভালোবাসেন অধিক পবিত্রতা অর্জনকারীদের।” [সুরা বাকারা, আয়াত: ২২২]
মহানবী
(সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতাকে খুব
ভালোবাসতেন। তিনি সর্বদা পরিষ্কার থাকতেন এবং পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন থাকার
জন্য অন্যকে উৎসাহ প্রদান করতেন। হাদিসের মধ্যে বর্ণিত,“পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা ঈমানের অর্ধেক।” [ সহিহ মুসলিমঃ ২২৩)
ব্যক্তিগত
ভাবে তথা নিজের শরীরকে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখার একটি পদ্ধতি হচ্ছে নিয়মিত
হাত ও পায়ের নখ কেটে ছোট অবস্থায় রাখা। নিয়মিত চুল গোঁফ কাটাও
পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন থাকার মাধ্যম। হাত অথবা পায়ের বড় নখ যেমন নিজের
স্বাভাবিক চলাফেরায় বিরক্তিকর ঠিক তেমনি অন্যের চোখেও তা প্রচন্ড
বিশ্রীরকম। অগোছালো চুল এবং গোঁফও একজন ব্যক্তির নেগেটিভ ব্যক্তিত্বের
পরিচায়ক। হাত পায়ের নখ কাটা এবং চুল গোঁফ কাটা একজন মানুষের নিয়মিত
এক্টিভিটি হলেও তা নিয়ে বর্তমান সমাজে প্রচলন রয়েছে কিছু কু-চিন্তা তথা
কুসংস্কারের। ...সমাজে
বহুলভাবে প্রচলিত একটি কু-ধারণা হচ্ছে ‘রাতের বেলা নখ কাটা নিষিদ্ধ মনে
করা’। অনগ্রসর গ্রামঅঞ্চল থেকে শুরু করে উন্নত শহরের কতিপয় মুসলিম
বাসিন্দারাও সেইম কনসেপ্ট লালন করেন। রাত নিয়ে আরো কিছু প্রচলিত মিথ্যা
ধারণা আছে। যেমন, রাতে চুল-গোঁফ কাটা যাবেনা, আয়না দেখা যাবেনা, ঘর ঝাড়ু
দেওয়া যাবেনা ইত্যাদি । প্রচলিত এই সকল ধারণা সম্পুর্ণরুপে ভুল এই কারণে যে
কুরআন অথবা হাদিসের কোথাও এসকল বিষয় নিয়ে কোন নিষেধাজ্ঞা আরোপিত হওয়া তো
দূরের কথা নিরুৎসাহিতও করা হয়ঞ্জ। কতিপয়
সাধারণ লোকসমাজের ধারণা রাতের বেলা নখ কাটলে অথবা চুল-দাঁড়ি কাটলে অমঙ্গল
হয়। রাতের বেলা আয়না দেখলে ক্ষতি হয়। প্রবীণ তথা বয়ষ্কদের মধ্যে এরকম
ধারণার প্রচলন বেশি। অথচ নবিজী (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তাঁর
ভাষ্যে কুলক্ষণ বা এরকম কিছু নেই তা স্পষ্টভাবে বর্ণনা করেছেন।
তিনি বলেন, “রোগ লেগে যাওয়া, কুলক্ষণ, পেঁচা ও সফর-সবের কোনো বাস্তবতা নেই। [সহীহ বুখারীঃ ৫৭৫৭]
.আল্লাহ
তায়ালা রাতকে দিয়েছেন ঘুমানোর জন্য। তিনি বলেন, “আর রাতকে আমি পোশাকের মতো
করেছি।” যাতে করে মানুষ ঘুমাতে পারেন, আরাম করতে পারেন এজন্য..।” [সুরা
নাবা:১০] আগের
যুগের মানুষেরা রাতে যে কোন ধরণের কাজ করতে পছন্দ করতেন না। তখন মানুষ
তাড়াতাড়ি ঘুমিয়েও যেতেন আবার খুব ভোরে ঘুম থেকে উঠে নির্ধারিত পেশার
দায়ীত্বে জড়িয়ে পড়তেন। তাই এরকম ধারণার জন্ম হয়েছে।আরেকটি
কারণ হচ্ছে! আগেকার যুগে রাতে নখ কাটা, চুল কাটা এবং ঝাড়ু দেয়ার কাজটি
কঠিন ছিল। সেখানে নখ কাটার এবং চুল কাটার পদ্ধতিগুলোও জটিল ছিল। ঝাড়ু
দেয়ার পদ্ধতিও সহজ ছিল না। কারণ,
রাতে অন্ধকার রাতে আলো জ্বালানোর তেমন কোন ভালো ব্যবস্থা ছিলোনা। তখন কুপি
বাতি জ্বালানো হতো অথবা সামান্য কোনো আলোর ব্যবস্থা অর্থাৎ আগুন জ্বালানো
হতো। একেবারে সামান্য আলোয় এই কাজগুলো রাত্রে সম্পাদন করা অনেক কঠিন ছিল। এ
কারণেই সম্ভবত লোকেরা এ কাজগুলো রাত্রে করতে অপছন্দ করেছেন। কিন্তু
আলহামদুলিল্লাহ্ এখন রাত আর দিনের মধ্যে তেমন কোনো পার্থক্য নেই অর্থাৎ
রাতেও সকল প্রকার কাজ চলে এবং দিনেও সকল প্রকার কাজ চলে। নখ, চুল কাটা
কিংবা ঘর ঝাড়ু দেওয়ার এখন দিন অথবা রাত প্রায় সমানই। সুতরাং,
এইসকল ধারণার জন্ম সাধারণ লোক কর্তৃক হয়েছে। সমাজে প্রচলিত অসংখ্য
কু-সংস্কাররের মধ্যে এগুলোও অন্যতম। কুরআন অথবা হাদিসের কোন টেক্সট এর
মাধ্যমে এইসকল কাজের প্রতি নিষেধাজ্ঞা আরোপিত হয় নাই। সেজন্যই এগুলোর কোন
ভিত্তি নেই।মুসলিমস
কমন মিসটেকস এর বিরাট অংশ জুড়ে আছে কুসংস্কার। সমাজে প্রচলিত এসকল
কুসংস্কার থেকে দূরে থাকা ও অন্যকে দূরে থাকার জন্য বুঝানো প্রত্যেক
মু'মিনের একান্ত কর্তব্য। ________________________________________________|| কমন মিসটেইকস ইন মুসলিমস এক্টিভিটিস || পঞ্চদশ পর্ব শেখ মুযযাম্মিল হুসাইন শুভ।
আল্লাহ তায়ালা বলেন, “নিশ্চয়ই আল্লাহ তায়ালা তাওবাকারীদের ভালোবাসেন এবং ভালোবাসেন অধিক পবিত্রতা অর্জনকারীদের।” [সুরা বাকারা, আয়াত: ২২২]
“পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা ঈমানের অর্ধেক।” [ সহিহ মুসলিমঃ ২২৩)
তিনি বলেন, “রোগ লেগে যাওয়া, কুলক্ষণ, পেঁচা ও সফর-সবের কোনো বাস্তবতা নেই। [সহীহ বুখারীঃ ৫৭৫৭]
No comments:
Post a Comment