* জরুরী সতর্কতা ইফতার সম্পর্কে *
----------------------------------------------
(ক) ইফতারের শুরুতে পড়ার জন্য নির্দিষ্ট কোন দু‘আ ছহীহ হাদীছে বর্ণিত হয়নি।
তাই সাধারণ দু‘আ হিসাবে ইফতারের শুরুতে *‘বিসমিল্লাহ’* বলবে
(বুখারী হা/৫৩৭৬; মিশকাত হা/৪১৫৯)।
আর ‘আল্লা-হুম্মা লাকা ছুমতু ওয়া ‘আলা রিযক্বিকা আফতারতু’ *মর্মে প্রসিদ্ধ দু‘আটি যঈফ*
(যঈফ আবুদাঊদ হা/২৩৫৮, ১/৩২২ পৃঃ)। অনুরূপ ‘আল্লা-হুম্মা ছুমতু লাকা ওয়া তাওয়াক্কালতু ‘আলা রিযক্বিকা... *নামে প্রচলিত দু‘আটি ভিত্তিহীন।*
আর
*ইফতার শেষে বলবে,* ذَهَبَ الظَّمَأُ وَابْتَلَّتِ الْعُرُوْقُ وَثَبَتَ الْأَجْرُ إِنْ شَاءَ ا للّٰہُ
উচ্চারণ :
*‘যাহাবায যামাউ ওয়াবতাল্লাতিল উরূকু ওয়া ছাবাতাল আজরু ইনশাআল্লাহ’।*
অর্থ :
*‘পিপাসা দূরীভূত হল, শিরাগুলো সঞ্জীবিত হল এবং আল্লাহ চাহে তো পুরস্কার নির্ধারিত হল’*
(আবুদাউদ হা/২৩৫৭, ১/৩২১ পৃঃ; মিশকাত হা/১৯৯৩)।
তবে সাধারণ দু‘আ হিসাবে শেষে ‘আল-হামদুলিল্লাহ’ও বলা যাবে (মুসলিম হা/২৭৩৪)।
(খ) রাসূল (ছাঃ) বলেন, إِذَا أَقْبَلَ اللَّيْلُ مِنْ هَاهُنَا وَأَدْبَرَ النَّهَارُ مِنْ هَاهُنَا وَغَرَبَتِ الشَّمْسُ فَقَدْ أَفْطَرَ الصَّائِمُ *‘পূর্ব দিক থেকে যখন রাত এসে যাবে ও পশ্চিম দিক থেকে যখন দিন চলে যাবে এবং সূর্য ডুবে যাবে, তখন ছায়েম ইফতার করবে’*
(ছহীহ বুখারী হা/১৯৫৪, ১/২৬২ পৃঃ (ইফাবা হা/১৮৩০, ৩য় খ-, পৃঃ ২৬৭); ছহীহ মুসলিম হা/২৬১৩; মিশকাত হা/১৯৮৫; বঙ্গানুবাদ মিশকাত হা/১৮৮৮, ৪র্থ খ-, পৃঃ ২২৫)।
*রাসূল (ছাঃ) বলেন,*
*‘দ্বীন চিরদিন বিজয়ী থাকবে, যতদিন লোকেরা ইফতার তাড়াতাড়ি করবে। কারণ ইহুদী-খ্রীস্টানরা ইফতার দেরীতে করে’*
(আবুদাউদ হা/২৩৫৩, ১/৩২১ পৃঃ; মিশকাত হা/১৯৯৫, সনদ হাসান; বঙ্গানুবাদ মিশকাত হা/১৮৯৮, ৪/২২৯ পৃঃ)।
*সতর্কতা
অধিকাংশ সময়সূচীতে সূর্যাস্তের মূল সময়ের সাথে আরো অতিরিক্ত ৩ কিংবা ৪/৫ মিনিট বৃদ্ধি করা হয়।
মূলত ইসলামিক ফাউন্ডেশন বাংলাদেশ এই কাজটি করে আবহাওয়া বিভাগের মাধ্যমে সারা দেশে প্রচার করে।
আর সেই ত্রুটিপূর্ণ সময়ই রেডিও, টিভি, পেপার-পত্রিকা ও দেশের মসজিদগুলো অনুসরণ করে থাকে।
এ জন্য পত্রিকাগুলোতে ইফতারের সময় আর সূর্যাস্তের সময় পৃথকভাবে দেয়া থাকে।
অথচ সূর্যাস্তের সময়ই ইফতারের সময়
(ছহীহ বুখারী হা/১৯৫৪, ১/২৬২ পৃঃ (ইফাবা হা/১৮৩০, ৩য় খ-, পৃঃ ২৬৭); ছহীহ মুসলিম হা/২৬১৩; মিশকাত হা/১৯৮৫; বঙ্গানুবাদ মিশকাত হা/১৮৮৮, ৪র্থ খ-, পৃঃ ২২৫)।
সচেতন ব্যক্তি লক্ষ্য করলেই বুঝতে পারবেন।
উক্ত ধোঁকার কারণে সাধারণ মানুষ সুন্নাতের অনুসরণ না করে দেরীতেই ইফতার করে থাকে।
*তাই রাসূল (ছাঃ)-এর সুন্নাতের যথাযথ অনুসরণের মহান স্বার্থে সূর্যাস্তের সাথে সাথেই ইফতার করতে হবে এবং ত্রুটিপূর্ণ সময়সূচী বর্জন করতে হবে।*
(গ) ইফতারের পূর্বে সম্মিলিতভাবে হাত তুলে মুনাজাত করার শারঈ কোন ভিত্তি নেই। এটি বিদ‘আতী প্রথা।
বরং
*প্রত্যেক ছায়েম নিজ নিজ দু‘আ করবে*
(ইবনু মাজাহ হা/১৭৫২, পৃঃ ১২৫)।
সেই সাথে একজন দু‘আ পড়বে আর অন্যরা আমীন আমীন বলবে এরও কোন দলীল নেই।
*ইফতারের পূর্বমুহূর্তে দু‘আ কবুল হয় মর্মে যে হাদীছটি প্রচলিত আছে, তা যঈফ*
(যঈফ ইবনে মাজাহ হা/১৭৫৩, পৃঃ ১২৫)।
*তবে এই অল্প সময় নয়, বরং ছুবহে ছাদিক্ব থেকে সূর্যাস্ত পর্যন্ত পুরো সময়টাই ছিয়াম পালনকারীর জন্য দু‘আ কবুলের সময়*
(বায়হাক্বী, সুনানুল কুবরা হা/৬৬১৯; সনদ ছহীহ, সিলসিলা ছহীহাহা হা/১৭৯৭; ইবনু মাজাহ হা/১৭৫২)।
তাই শুধু ইফতারের পূর্বমুহূর্তের জন্য অপেক্ষা করার প্রয়োজন নেই। সারাদিনই আল্লাহ কাছে দু‘আ করতে পারবে।
(ঘ) মৃত ব্যক্তির নামে ইফতার মাহফিল করা যাবে না।
কারণ মৃত ব্যক্তির নামে যেটা প্রদান করা হয়, তা ছাদাক্বা।
আর ছাদাক্বা সবাই খেতে পারে না
(বুখারী হা/১৪৯৬, ১/২০২-২০৩ পৃঃ)।
No comments:
Post a Comment